জলবায়ু পরিবর্তনে সৃষ্ট সংকট মোকাবেলায় সবাইকে সৎ থাকা বাঞ্ছনীয়

জাতিসংঘের ইসিওএসওসি চেম্বারে ‘জলবায়ু ন্যায্যতা প্রদান: ত্বরান্বিত উচ্চাকাক্সক্ষা এবং অভিযোজন ও সবার জন্য প্রাথমিক সতর্কবার্তা বাস্তবায়ন’ শীর্ষক জলবায়ু সম্মেলনের উচ্চস্তরের বিষয়ভিত্তিক অধিবেশনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আসন্ন সংকট এড়াতে বিশ্বের প্রধান অর্থনীতির দেশগুলোকে সততার সঙ্গে কাজ করতে হবে। তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করি বিশ্বের প্রধান অর্থনীতির দেশগুলো জলবায়ু পরিবর্তন এবং আসন্ন সংকট এড়াতে তাদের ন্যায্য অংশীদারিত্বের বিষয়ে সৎ থাকবে।’
প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশনে (ইউএনজিএ) যোগ দিতে ১৭ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে যান। সেখানে তিনি বলেন, বাংলাদেশের অভিজ্ঞতা প্রমাণ করে অভিযোজন এবং আগাম সতর্কতায় বিনিয়োগ করা সঠিক।
জলবায়ু ন্যায্যতার একজন প্রবক্তা হিসেবে তিনি বলেন, বাংলাদেশ এই এজেন্ডাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার যে কোনো গঠনমূলক পদক্ষেপের প্রতি সমর্থন দিতে প্রস্তুত।
জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান শীর্ষে। পরিবেশবিজ্ঞানীদের ধারণার চেয়েও দ্রুত বিপর্যয় ঘটতে শুরু করেছে বিশ্বজুড়ে। পরিবেশ বিপর্যয়ের জন্য অন্যতম যে কারণ কার্বন নিঃসরণ তার জন্য শিল্পোন্নত দেশগুলো দায়ী হলেও আক্রান্ত দেশগুলোকে ক্ষতিপূরণ প্রদান ও কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে আনার ব্যাপারে একমত হতে পারেনি ধনী দেশগুলো। এমনকি তারা পরিবেশ বিপর্যয় ঠেকাতে প্রতিশ্রুত সাহায্যও প্রদান করে না ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে। যে কারণে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে সৎ থাকার তাগিদ দিয়েছেন।
ঘূর্ণিঝড় বা সাইক্লোন মোকাবেলা এবং তাতে মৃত্যুহার কমিয়ে আনার বিষয়ে বাংলাদেশের সক্ষমতা প্রশংসিত হয়েছে। সে কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘১৯৭০ সালে ভোলা ঘূর্ণিঝড়ের সময় যে লক্ষাধিক লোক মারা গিয়েছিল তার তুলনায় বাংলাদেশে প্রাণহানির সংখ্যা এক অঙ্কে নেমে এসেছে। তিনি বলেন, ‘আমাদের ৬৫,০০০ উপকূলীয় মানুষের সমন্বয়ে বিশ্বের বৃহত্তম কমিউনিটি স্বেচ্ছাসেবক কর্মসূচি রয়েছে।’
বাংলাদেশের এই অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে তাঁর আগ্রহ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ দক্ষিণ-দক্ষিণ এবং ত্রিভুজাকার সহযোগিতার মাধ্যমে অন্যান্য দুর্বল দেশগুলোর সঙ্গে তার দক্ষতা বিনিময় করতে ইচ্ছুক।’
কিছু বিষয়ে খোলাখুলি কথা বলার ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কোনো দ্বিধা নেই। শুধু পরিবেশ নিয়ে নয় বিশ্বে হানাহানি বন্ধ করে শান্তি প্রতিষ্ঠার পক্ষেও তাঁর অবস্থান দৃঢ়। এই দৃঢ় মনোভাবের কারণেও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তাঁর আলাদা ভাবমূর্তি গড়ে উঠেছে যা তাঁর অবস্থানকে মহিমান্বিত করেছে।