আলু উধাও

রেয়াজউদ্দিন বাজারে আড়ত খালি

রাজিব শর্মা »

দুই সপ্তাহ ধরে নগরের বিভিন্ন বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে আলু নিয়ে। বাজার তদারকিতে নিয়োজিত প্রতিষ্ঠানগুলোর বেশ কয়েকটি অভিযানের পর হঠাৎ করেই বাজার থেকে ‘উধাও’ আলু। বৃহস্পতিবার কয়েকটি গুদামে আলু দেখা গেলেও শনিবার সকাল থেকেই এসব গুদাম খালি পড়ে আছে।

শনিবার বিভিন্ন খুচরা বাজারে সরেজমিনে দেখা যায়, অন্যান্য দিনের মতো তেমন আলু বিক্রি করছেন না খুচরা ব্যবসায়ী ও মুদির দোকানিরা। দুয়েকটি দোকানে আলু বিক্রি হলেও তার দাম বেশি। বাজারে আগের মতো মুন্সীগঞ্জের আলু বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৪৫ থেকে ৫০ টাকা। আর দেশি আলু ৭০ টাকার ওপরে।

খুচরা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রেয়াজউদ্দিন ও খাতুনগঞ্জ বাজারে আলুর সরবরাহ সংকট রয়েছে। আড়তদাররা আলু বিক্রি করছে না। যার কারণে খুচরা বাজারে সংকট দেখা দিয়েছে।

এদিকে বাজারে আসা ক্রেতাদের অভিযোগ, খুচরা ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা চড়া দামে বিক্রি করার আশায় গুদামে মজুদ করা আলু সরিয়ে রেখে চড়া দামে বিক্রি করছে।

গতকাল দুপুরে খাতুনগঞ্জ ও রেয়াজউদ্দিন বাজার আড়তে গেলে দেখা যায়, দুয়েকটি গুদামে আলুর কয়েকটি বস্তা দেখা মিললেও প্রায় আলুর আড়ত খালি। শ্রমিকরা অবসর সময় কাটাচ্ছে।

খাতুনগঞ্জের আড়তদারদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, হিমাগার মালিকরা প্রশাসনের সামনে ২৭ টাকা কেজিতে আলু দেবে বললেও প্রকৃতপক্ষে ওই দামে মুন্সীগঞ্জের বাজারে আলু পাওয়া যাচ্ছে না। যারা আলু বিক্রি করছে সেগুলো খরচসহ ৩০ থেকে ৩৫ টাকার বেশি। যা ৪০ টাকা দরে বিক্রি করলে প্রশাসনের মুখোমুখি হতে হয়।

অন্যদিকে আলুর গুদাম খালি কেন জানতে চাইলে রেয়াজউদ্দিন বাজার আড়তদার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ফারুক শিবলী বলেন, ‘আমরা ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে বলেছি ব্যাপারিরা কেজিপ্রতি ৩২ টাকা করে দিলে আলু মজুদ করতে পারি। কিন্তু মুন্সীগঞ্জ ও ব্যাপারিরা ওই দামে আলু দিতে পারছে না। ব্যাপারিরা আমাদের আলু দিচ্ছে ৩৫ টাকার উপরে। ফলে আলু মজুদ আপাতত বন্ধ রেখেছি। কারণ সরকার নির্ধারিত একটি দর বেঁধে দিয়েছে। ওই দরে আমরা আলু পাচ্ছি না।

এদিকে মুন্সীগঞ্জের আলু ব্যাপারিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এখনও হিমাগার মালিক ও কৃষকরা আলু সস্তায় বিক্রি করছে না। পাইকারদের দেওয়া ৩২ টাকা দরে আলু সরবরাহ করা যাচ্ছে না বলে জানান।

মুন্সীগঞ্জের আলু সরবরাহকারি ও মধ্যস্বত্ব কারবারি সিরাজ ব্যাপারি বলেন, ‘আজকে মুন্সীগঞ্জে আলু বিক্রি হয়েছে কেজিপ্রতি ৩৪ টাকা ২৫ পয়সা। সরবরাহ খরচসহ ৩৫ টাকার বেশি দাম হয়। সরকার দর নির্ধারণ করে দিলেও ওই দরে কোথাও মিলছে না আলু।

এদিকে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ফয়েজ উল্যাহ বলেন, ‘আমরা চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীদের থেকে আলুর দর নিয়েছি। তা আমাদের মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি বরাবর পাঠিয়েছি। সেখানে তদন্ত করার পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে সরকার একটি দর নির্ধারণ করে দিয়েছে ওই দামের বাইরে বিক্রি করার সুযোগ আপাতত নেই।’