ছেঁড়াপাতার দুপুর

জুয়েল আশরাফ »

কয়েকদিন ধরেই অন্যরকম কায়দায় ঘরে ঢুকছে তকিব। সব ক্লান্ত মুখ পাল্টে আজকাল জ্বলজ্বল করছে উচ্ছ্বসিত মুখ। হাত-মুখ ধোবার  সাথে সাথে চার বছরের ছেলে আলিফের সাথে খেলা শুরু করে। সাধারণত তকিব ছেলেকে একটু আদর করে দূরে সরে যেতো, ফোনের সাথে বিছানার কোণে নিজেকে চেপে ধরতো। কয়েকদিন বিস্ময়কর হাসির ছায়া আপনা থেকেই মুখে ছড়িয়ে পড়েছে।

ইশরাত স্বামীর এই পরিবর্তিত চেহারা দেখে অবাক হয়েছে। খুশিও হয়েছে দিনটি পরিবর্তনের পালা দিয়ে শুরু হবে।

সকালে তকিব ক্লিন শেভড হয়ে গুনগুন করছিল আয়নার সামনে। ইশরাত সেই গুনগুনে তাল দেওয়ার চেষ্টা করলে তকিব লাজুক হয়ে চুপ হয়ে যায় আর তার দিকে তাকিয়ে দ্রুত গোসল করতে চলে যায়।

ইশরাত তকিবকে পেছন থেকে বাধা দেয়, যখন সে একটি  মেরুন রঙের শার্ট বের করছে পরবে বলে। এই শার্টটি আলমারিতে বহু বছর ধরে প্যাকেটে প্যাক করা ছিল।

কী ব্যাপার! আজ হঠাৎ এই বোতামহীন শার্টটা পরার কথা  কেন মনে হল? অনেকবার বলেছি পরতে, কতোদিন প্যাকেটটা তুলে আলমারির ভেতরে ফেলে রেখেছে।

শার্টটা হাতে ধরে তকিব খানিকটা থমকে গিয়ে তোতলানো কণ্ঠে শুধু এইটুকুই বলল, সে … সে… আজ একটা মিটিং আছে, অফিসে যাব। কোনো নতুন শার্ট নেই, তাই আজ এটাই পরলাম।

শুধু তাই নয়। তকিব যে কোনও ধরনের পারফিউম পছন্দ করে না, আজ ড্রয়ারে পড়ে থাকা পুরোনো সেন্টের বোতল  বের করে স্প্রে করা শুরু করল। এই  সেন্টটিও প্রায় আট মাস আগে ইশরাত এনেছিল। বিদায় জানিয়ে তকিব সেন্টের তীব্র গন্ধ পেছনে ফেলে অফিসে চলে গেল। ইশরাত সেই তীব্র গন্ধে হারিয়ে বাড়ির অন্য কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ে।

রাস্তায় বেরিয়ে গাড়িতে বসতেই তকিবের মোবাইল ফোন  বেজে ওঠে। দিয়ার ফোন।

হ্যালো! তকিব?

হ্যাঁ, দিয়া!

ঠিক সময়ে ফোন করেছি?

হ্যাঁ, হ্যাঁ অবশ্যই। আমি এখন গাড়িতে আছি, অফিসে যাচ্ছি। এখন আমরা কথা বলতে পারি। আর একটা কথা, আজ আমি সেই মেরুন শার্টটা পরছি যেটা তুমি আমাকে আট বছর আগে আমার জন্মদিনে দিয়েছিলে।  আমি জানতাম না যে সেদিনই হবে আমাদের শেষ দেখা।

তুমি এখনও এই শার্ট যতœ করে রেখেছ?

হুম, শুধু শার্টই নয়। তোমার সাথে সম্পর্কিত প্রতিটি ছোটবড় স্মৃতিও  খুব যতœসহকারে সংরক্ষণ করেছি আমার মনের জাদুঘরে।

তকিব শুধু একবার আমার সাথে দেখা করো। তোমার সাথে আমার অনেক কিছু শেয়ার করতে হবে। ভবিষ্যতে আর  দেখা না হোক, কিন্তু একজন আরেকজনের জন্য তিক্ততা নিয়ে বেঁচে থাকা সুখকর না।

ঠিক আছে দিয়া। শীঘ্রই দেখা করার পরিকল্পনা করি। এই মাত্র অফিসে পৌঁছেছি। পরে কথা বলি, ভালো থাকো।

অফিসে পৌঁছে নিজের ঘরে বসে তকিব ল্যাপটপ চালু করল। দিয়ার ছবি খুঁজল। তার একটি মাত্র ছবি ছিল, তাও আটবছর বয়সী। অফিসের বন্ধুরা যখনই অবসর সময়ে বসে তাদের প্রেমের গল্প শোনাতো, তকিবের ভাঙা হৃদয়  থেকে কথা বেরিয়ে এসে ঠোঁটে আটকে যেতো। ব্যর্থ প্রেমের গল্প বলে এখন কী পাবে সে? অনেক বছর কেটে গেছে যখন জীবন ভালোবাসার আবেশ থেকে খালি হাতে চলে গেছে। এই ভেবে চুপ করে থাকতো। কোথাও অন্যের সফল প্রেমের গল্প শুনলে তার পুরোনো বেদনা থরথর করে যখন মনটা খুব উত্তেজিত হতে শুরু করে তখন এই ছবি দেখে মন হাজারো অভিযোগ করতো। কিন্তু আটবছর পর দিয়ার আচমকা ডাক তার হৃদয়ের গভীরে আবার আলোড়[ন সৃষ্টি করেছে। বিরক্তি ও ক্ষোভ দেখানোর পর আবার ফোনে কথা বলেছে। আস্তে আস্তে সব আগের মতোই মনে হল। তকিবের ভেতরে শুকিয়ে যাওয়া ভালোবাসার বীজ আবার অংকুরিত হচ্ছে।

কিন্তু এখন দুজনেরই নিজস্ব পরিবার হয়েছে, তাই সাবধানতার সঙ্গে দুজনে ভাঙা অতীত প্রেমের গল্প পুনরুজ্জীবিত করার চেষ্টা করছে।

বিয়ের পরে প্রেমে পরিপূর্ণতা হয়তো অর্জিত হয়নি কিন্তু ইশরাতের জীবন ভালোই চলছে। সে স্থির, হাসিখুশি আর প্রতিটি কাজে দক্ষ স্ত্রী। তকিবের জীবনে আসার পর থেকে জীবনে অনেক উন্নতি করেছে। তবে এটাও সত্যি যে, অসম্পূর্ণ প্রেমের গল্পের প্রিয়জনের জায়গা কেউ নিতে পারে না। তার অনুপ্রবেশ এতই গভীর যে তার স্থান সর্বদা খালি থাকে।

শীঘ্রই তকিব অফিস ট্যুর থেকে কক্সবাজার যাওয়ার সুযোগ  পেলো। খুব খুশি হলো এই অজুহাতে দিয়ার সাথে দেখা করবে। কেউ জানতেও পারবে না। দিয়াকে পুরো পরিকল্পনাটি জানালো। তকিব কক্সবাজারে একটি খুব সুন্দর রিসার্টে একটি ঘর বুক করে। অন্যদিকে, দিয়াও অফিস ট্যুরের অজুহাত দেখিয়ে বাড়িতে সবকিছু গোছাতে থাকে।

এই মিলনকে অপূর্ব করার জন্য দুজনই রঙিন স্বপ্ন বুনতে লাগল।

আজ মুষলধারে বৃষ্টি। কমলাপুর রেলস্টেশনে ট্রেনের অপেক্ষায় বসে আছে আছে তকিব। দিয়ার সঙ্গে ব্রেক আপের পর সে মেঘ ও বৃষ্টির প্রতি আগ্রহ হারিয়ে  ফেলেছিল। তার হৃদয় নোংরা মাটিতে পরিণত হয়েছিল।  কিন্তু আজ আবহাওয়ার এই ভেজা রূপ তাকে রোমাঞ্চিত করছে ভেতরে ভেতরে। ইশরাতের কথা ভেবে নিজেকে  কোনো অপরাধীর মধ্যে ফেলতে চায় না, শুধু তার প্রথম প্রেমের কথাই ভাবছে।

গভীর অন্ধকার রাতে হুইসেল বাজিয়ে নীরবতা ভেঙে পূর্ণগতিতে ছুটে চলেছে ট্রেন। চোখ বন্ধ করে নির্জনে কিছু মুহূর্ত কাটাতে চায়। কিন্তু অন্যান্য যাত্রীদের কণ্ঠস্বর আর ট্রেনের হুইসেল দুটোই নির্জনতাকে বিরক্ত করছে। সে আর তার অন্তরাত্মা অন্ধকার রাতে মিশে যায়। সেই পুরোনো স্মৃতিতে হারিয়ে যায় যেখানে তকিব জীবনকে অর্থহীন মনে করতে থাকে। যখন অপরিসীম ভালোবাসা সত্ত্বেও দিয়া অন্য কাউকে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত  নিয়েছিল, এমনকি কোনো শক্ত কারণও দেখায়নি। তবে সে কি তাকে ভালোবাসেনি? এই প্রশ্নটা তকিবকে বিগত বছরগুলো ধরে কষ্ট দিচ্ছে। কিন্তু এত বছর পর দিয়ার একটা ফোন তার সাথে দেখা করার, সেসব প্রশ্নের উত্তর জানার আর সেই অসমাপ্ত ভালোবাসাকে পূর্ণ করার আকাক্সক্ষা বাড়িয়ে দিয়েছে।

তকিব চোখ বন্ধ করে জানালায় মাথা রাখল। ভাবনায় হারিয়ে গেল। আচমকা কারো কান্নার শব্দ শুনতে পেল। হতভম্ব হয়ে দেখল, একজন নারী যাত্রী এসে সামনের সিটে বসেছে। কখন এমন ঘটল জানে না। নারীটিরও কিছু চিন্তায় মগ্ন হয়ে বাইরের অন্ধকারের দিকে তাকিয়ে জানালায় মাথা  রেখে বাইরে তাকিয়ে আছে।

তকিব নারীটিকে উপেক্ষা করার চেষ্টা করবে, ঠিক তখনই কান্নায় তার কানের পর্দা কেঁপে উঠল। অন্য যাত্রীদের দিকে তাকাল সে। মরার মতোন কম্বলের নিচে ঘুমাচ্ছে সবাই। তকিব নারীযাত্রীর দিকে পানির বোতল বাড়িয়ে দিল।

পানি খান, কান্নার সাথে হেঁচকিও হতে পারে।

তকিবের দিকে ফোলা চোখে তাকিয়ে নারীটি মুখ ফিরিয়ে নিল। তকিব একটু দ্বিধাগ্রস্ত হলো। তার কথার কারণে নারীটির খারাপ লাগতে পারে, জানে না তার কান্নার কারণ কতটা গভীর। আর সে তাকে হালকাভাবে নিচ্ছে।

তকিব এবার আর কিছু বলল না, শুধু পানির বোতলটা ওর দিকে বাড়িয়ে দিল। ইশারা করল পানি খাওয়ার জন্য। এবার হাত থেকে বোতল টেনে অর্ধেক বোতল পানি খেলো নারীটি। তারপর তকিবের দিকে তাকিয়ে বলতে লাগলো, পানি খেয়েছি … কান্না-হেঁচকি সব বন্ধ হয়েছে। এখন আমাকে শান্তিতে বসতে দিন।

ওহ! আমি ভাবলাম আপনি বলবেন, এখন আমাকে শান্তিতে কাঁদতে দিন।

তকিবের কথায় নারীটির শুকনো ঠোঁটে মৃদু হাসি ছড়িয়ে পড়ল। তাকে হাসতে দেখে তকিব সঙ্গে সঙ্গে বলে উঠল, এখন আপনি বন্ধু হিসাবে আপনার ব্যথা শেয়ার করতে পারেন। কতোদিন ধরে আপনি আপনার চোখের সমস্যা করছেন, চোখ দুটির কিছুক্ষণ বিশ্রাম দিন। হতে পারে আমি আপনাকে সাহায্য করতে পারি।

ভেজা চোখে তকিবের দিকে তাকিয়ে নারীটি হয়তো ভাবছে, অপরিচিত হলেও একজন সত্যিকারের মানুষ পাওয়া গেল। মনে হচ্ছে শুধু এই মানুষটিকেই নিঃস্বার্থভাবে নিজের অনুভূতি বুঝাতে পারবে, হয়তো মানুষটি তাকে সঠিক পথ  দেখাবে।

আমার নাম মিতা। পাঁচ বছর হলো মামুনের সাথে আমার বিয়ে হয়েছে। আমি তাকে খুব ভালোবাসতাম। আমার জীবনের পুরো ফ্যাব্রিকটি তাকে ঘিরে ছিল। আমাদের তিন বছরের ছেলে মাহির এই ভালোবাসাকে আরও নিবিড় করে তুলেছে। আমার জন্য মামুন আমার প্রথম প্রেম। সে খুব বিশেষ কিছু। আমি তাকে নিয়ে খুব গর্ব করতাম। এমন একজন জীবনসঙ্গীর সাথে বিয়ে দেয়ার জন্য আমি আমার বাবা-মাকে কৃতজ্ঞতা জানাতে কখনই ক্লান্ত হইনি। আমার বাড়িটি কেবল ইট-পাথরের তৈরি বাড়ি না, যেন একটা স্বর্গ। এর ভিত্তি ভালোবাসা আর বিশ্বাসের ওপর স্থাপন করা।

কথা বলতে বলতে হঠাৎ মিতা চুপ হয়ে গেল। তার চোখ আবার পানিতে ভরে গেল। বলল, এক দমকা হাওয়া এসে আমাদের সুখী বাড়ির ভিত নাড়িয়ে দিল।

তকিব বলল, বুঝলাম না, স্পষ্ট করে বলুন।

মিতা বলল, যাকে আমি এত বছর ধরে বিশ্বাস করেছি, তার হৃদয় প্রাক্তন প্রেমিকার জন্য ধড়ফড় করছে। আমি আমার বিশ্বাস নিয়ে খুব গর্বিত ছিলাম। কিন্তু সেদিন আমার অহংকার বাস্তবের মাটিতে ভেঙে পড়ে, ছিন্নভিন্ন কাপড় আর আয়নার  মতো চুরমার হয়ে গেছে। আমার এক বান্ধবী আমাকে ফোন করে বলল, মামুন আর একটি মেয়েকে  হোটেলে সারারাত একটি ঘরে দেখেছে। সেই হোটেলে আমার বান্ধবীও স্বামীর সঙ্গে ছিল। সে স্পষ্ট দেখেছে মামুনকে। আমার বিশ্বাস প্রমাণ করার জন্য আমি সেই  হোটেলে ঢুকে সত্যতা যাচাই করি। কয়েক বছরের বিশ্বাস কয়েক মিনিটের মধ্যে ভেঙে গেছে। মামুন ক্ষমা চাইল। সে  দেখানোর চেষ্টা করল আমি তার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আজ পর্যন্ত তার জন্য আমার কোনো কিছুর অভাব হয়নি।

মিতা একটু থামল। চোখ মুছে বলল, এখন আপনিই বলুন তার দায়িত্ব কি শুধু খাবার,  পোশাক আর আমার প্রয়োজনের জোগান দেয়া? এটাকেই কি ভালোবাসা বলে? এত বছর ধরে তার জীবনকে সাজিয়েছি প্রতিট সুখে। সমাজে তাকে সম্মান দিয়েছি। তার ইচ্ছা-অনিচ্ছার যতœ নিয়েছি। আমার নিঃস্বার্থ ভালোবাসা মামুন দেখেনি। যে স্বামী প্রতারণা করে তার প্রাক্তন প্রেমিকার সাথে হোটেলে রাত্রিযাপন করেছে তার সত্যিকারের ভালোবাসা সেখানেই  দেখতে পেয়েছি। তার পরিবার আর ছেলেকে তার কাছে  রেখে আমি চিরকালের জন্য আমার বাবার বাড়িতে যাচ্ছি।

দুঃখের কথা বলার সময় মিতার চোখে পানির প্রবাহ তীব্র হয়ে ওঠে। কারণ সে শুধু মামুন প্রতারক হওয়ার ব্যথায় শুধু   নেই, একজন স্ত্রীর স্বামীর প্রতি অটুট আস্থা ভাঙার ব্যথায়ও আছে।

অপরাধ বোধ করে তকিব বসে রইল। মিতার কান্না তার হৃদয়কে ভেতর থেকে ভিজিয়ে দিচ্ছে। এই মুহূর্তে তার কাছে মনে হলো যেন সৃষ্টিকর্তা তার ঘুমন্ত বিবেককে নাড়া দিতে মিতাকে পাঠিয়েছেন। মনে হলো ইশরাত তার সামনে বসা একজনের কাছে তার কষ্টের কথা বলছে। এই মুহূর্তে মিতা আর ইশরাতের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। প্রেমিক যুগলরা যে প্রেমের শিখা জ্বালিয়ে রাখে, তারা কি তার পবিত্রতা বজায় রাখে?  হয়তো তা খুব কমই। কাউকে কিছুদিন বা কয়েক মুহূর্তের জন্য পাওয়া কখনই ভালোবাসা নয়। সেটা হবে সেই লোভের মতো খাবার বা পণ্য যা পান করা বা পরার পর সেই ইচ্ছা শেষ হয়ে যায়। ভালোবাসার মাহাত্ম্য তার পবিত্রতা বজায় রাখার মধ্যে নিহিত, কাউকে ঠকিয়ে তা পাওয়ার মধ্যে নয়।

স্টেশনে পৌঁছানোর সাথে সাথে মিতা তার গন্ত্রব্যর দিকে চলে গেল। মিতা তকিবকে সঠিক পথ দেখিয়েছে। তকিব ভারী মন নিয়ে সেখানে বসে রইল। এই বোঝা কমাতে সে তৎক্ষণাৎ দিয়াকে ফোন করল, আমি তোমার সাথে দেখা করতে পারলাম না। আর ভবিষ্যতেও কখনও দেখা করতে পারব না। যে ভালোবাসা একবার ছিল তা আর কখনই হতে পারে না। সেই অসম্পূর্ণ স্ফুলিঙ্গটি জ্বালানোর ফলে বড় আগুন হতে পারে, যা অনেকের জীবন ধ্বংস করে দেবে।  প্রেমে পড়া ভালো। তবে তাদের ঠকানো বড় অন্যায় যারা আমাদের ঘর আলোকিত করে, সুখী করে। আমাদের ওপর তাদের আস্থা রাখে।

তকিব দিয়ার অধ্যায় চিরতরে বন্ধ করে দিল। অবিলম্বে অন্য  ট্রেনে ওঠে তার সত্যিকারের প্রেমের জন্য চলে গেল। এখন তার কাছে পুরোনো কিছুই অবশিষ্ট নেই।