কক্সবাজারে ফল ব্যবসায়ীর গলাকাটা লাশ উদ্ধার

নিজস্ব প্রতিবেদক, কক্সবাজার »

কক্সবাজার পৌর শহরের মোহাজের পাড়া থেকে এক ফল ব্যবসায়ীর গলাকাটা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত ব্যবসায়ী মো. ওসমান (৩০) একই এলাকার মৃত নুর মোহাম্মদের ছেলে।

গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে শহরের মোহাজের পাড়ার ট্যাংকি পাহাড় এলাকায় নিহতের নির্মাণাধীন বসতবাড়ির বিছানা থেকে গলাকাটা মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।

নিহত ওসমানের ভাগিনা মোহাম্মদ শামীম বলেন, বুধবার দিনগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে আমার মামা, তার দোকানের কর্মচারী ছৈয়দ নুর ও মামার বন্ধু হাবিবুল্লাহ ওরফে সুন্দরসহ ৫/৬ জন ছাদে আড্ডা দিচ্ছিলেন। তারা সেখানে হাসি ঠাট্টায় মত্ত ছিলেন। এমনটা দেখে আমি ঘুমাতে যাই। পরে সকালে ঘুম থেকে উঠে মামার রুমে লাইট জ্বলছে দেখে তা নেভাতে কক্ষে ঢুকি। দেখি, এলোমেলো বিছানায় আমার মামার মৃতদেহ পড়ে রয়েছে।

স্থানীয়রা বলেন, ওসমান গেল ১ বছর যাবৎ কক্সবাজার সদর হাসপাতাল সড়ক এলাকায় ফলের ব্যবসা করে আসছে। প্রতিদিন সকালে যায়, রাতে ফিরে। বাসায় তিনি একাই থাকেন। তার একতলার ভবনটি এখনো নির্মাণাধীন। দরজা-জানালা এখনো লাগানো হয়নি।

স্থানীয়দের একটি সূত্র জানায়, ১৯৯১সালের দিকে নিহত ওসমানের পুরো পরিবার মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসেন। এরপরে কক্সবাজার শহরের মোহাজের পাড়ায় বসবাস শুরু করেন। ছোটবেলা থেকে ওসমান জড়িয়ে পড়েন চুরি, ছিনতাইসহ নানা অপরাধে। ১ বছর আগে তার মায়ের মৃত্যুর পর ছিনতাই ছেড়ে কক্সবাজার সদর হাসপাতাল এলাকায় ফল বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন।

কক্সবাজার সদর থানার ওসি (তদন্ত) সেলিম উদ্দিন বলেন, নিহতের বিরুদ্ধে আগের তিনটি মামলা পাওয়া গেছে। এছাড়া নিহত যুবক অবিবাহিত, মদ্যপানের অভ্যাস ছিল। ঘটনাস্থল থেকেও আমরা অল্প মদসহ মদপানের সরঞ্জাম উদ্ধার করেছি।

তিনি আরো বলেন, তাকে রাত ১২টার পর থেকে ভোরের মধ্যে খুন করা হতে পারে। হত্যার আগে তিনি বন্ধু, কর্মচারীদের সাথে ছাদে বসে মদপান করে আড্ডা দিচ্ছিলেন বলে শুনা গেছে। সেই আসরে থাকা হাবিবুল্লাহ ও ছৈয়দ নুরকে আমরা হেফাজতে নিয়েছি। ব্যবসায়িক ঝামেলা, পূর্বের ছিনতাইকারী গ্রুপ, নারী সংক্রান্ত জটিলতাসহ সব বিষয় মাথায় রেখেই আমরা অগ্রসর হচ্ছি। এই হত্যার কারণ, কে বা কারা এর পেছনে জড়িত তা উদ্ঘাটনের চেষ্টা চালাচ্ছি।

কক্সবাজার সদর থানার ওসি মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, লাশ উদ্ধার করে হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে সিআইডির ফরেনসিক বিভাগ আলামত সংগ্রহ করেছেন। আশা করছি শীঘ্রই এই ঘটনার ক্লু উদঘাটন করতে আমরা সক্ষম হবো।