এবার যা হবে ঢাকায়

রোডমার্চ শেষে নগরীতে সমাপনী সমাবেশে ফখরুলের হুঁশিয়ারি

নিজস্ব প্রতিবেদক »

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আজকে চট্টগ্রামের জনগণের বিস্ফোরণ ঘটেছে। আজ সব মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছে। আজ কুমিল্লা থেকে চট্টগ্রামের রাস্তায় মানুষের ঢল।

বৃহস্পতিবার বিকালে নগরীর কাজীর দেউড়ি নেভাল রোডে ‘অবৈধ সরকারের পদত্যাগ, সংসদ বিলুপ্তকরণ, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সংসদ নির্বাচন এবং দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির লক্ষ্যে বিএনপির ১ দফা দাবি’ আদায়ে সমাপনী সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, আজ স্পষ্ট করে বলতে চাই, অনেক সময় নষ্ট করেছি। আওয়ামী লীগের অন্যায়ের অনেক প্রতিবাদ করেছি। আজ শেষ রোডমার্চ। এখন আর বেশি সময় নেই। এবার যা হবে ঢাকায়। ঢাকার রাজপথে এ ফ্যাসিস্ট সরকারের মুখোমুখি দেখা হবে।

ফখরুল বলেন, মানুষ এখন জেগে উঠেছে। শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করলে ভালো, নয়তো এই ক্ষমতা জনগণ হস্তান্তর করিয়ে ছাড়বে। জনগণের এখন একটিই দাবি, ক্ষমতা হস্তান্তরের পদেক্ষপ নিয়ে সংসদ বিলুপ্ত করে নতুনভাবে নির্বাচন দিন।

আগামীর কর্মসূচি নিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ১৮ তারিখ দুর্গাপূজা। আমরা স্পষ্ট বলব, দুর্গাপূজার আগে যেন এই অবৈধ সরকার পদত্যাগ করেন। তিনি নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করে বলেন, আগামী ৯ অক্টোবর সারাদেশে সমাবেশ ও মিছিল। ১২ অক্টোবর ঢাকায় আন্দোলন, ১৪ অক্টোবর ঢাকায় সমাবেশ ও ১৬ অক্টোবর যুব সমাবেশ পালিত হবে। সেই সমাবেশের পর আমরা চাই যেন শেষ কর্মসূচি হয়। আমরা অহিংসার আন্দোলন করছি। আমাদের অহিংসার আন্দোলনে যদি আওয়ামী লীগ মামলা হামলা দিয়ে হয়রানি করার চেষ্টা করে, জনগণের হয়ে আমরা প্রতিরোধ করবো।

মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আবু হাসেম বক্করের সঞ্চালনায় প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তৃতা করেন আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল্লাহ আল নোমান, বরকত উল্লাহ বুলু, মোহাম্মদ শাহজাহান, মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দীন, আবদুল আউয়াল মিন্টু।

আমীর খসরু বলেন, বলেন, দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে বিএনপি নেতাকর্মীরা মামলা, হামলা, নিযাতনের স্বীকার হয়ে জ্বলে পুড়ে খাঁটি সোনায় পরিণত। এই সোনা আর কেউ নষ্ট করতে পারবে না। তারা শান্তিপূর্ণভাবে জনগণকে ক্ষমতা হস্তান্তর না করলে জনগণ তা ছিনিয়ে নেবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, আরামকে হারাম করে সরকার পতনের ফাইনাল আন্দোলনে নেমে পড়তে হবে।

বরকত উল্লাহ বুলু বলেন, বাংলাদেশের ৯০ ভাগ মানুষ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে ভালবাসে। অথচ তাকে আজ মিথ্যা মামলা দিয়ে ঘরবন্দি করে রেখেছে। তিলে তিলে তাকে মেরে ফেলার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।

মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন বলেন, আওয়ামী লীগ তার প্রতিষ্ঠাকাল থেকে গণতন্ত্রকে হত্যার অভিযানে ব্যস্ত। এর বিচার অবশ্যই জনগণ করবে।

আব্দুল আউয়াল মিন্টু বলেন, আমরা এক দফা আন্দোলনের চূড়ান্ত পর্যায়ে আছি। একদফা মানে এই সরকারের পদত্যাগ। এই সরকার জনগণের টাকায় পরিচালিত বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানকে জনগণের বিরুদ্ধে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। এ সরকারকে যদি পদত্যাগে বাধ্য করতে না পারি তাহলে দেশকে আরো ধ্বংস করে দিবে। আর এর ফল ভোগ করতে হবে আগামী প্রজন্মকে। তাই দেশকে বাঁচাতে এ সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করতে হবে।

সমাবেশের সমন্বয়কারী মাহবুবের রহমান শামীম বলেন, বাংলাদেশের জনগণ এক মুহূর্তের জন্যও এই সরকারকে ক্ষমতায় দেখতে চায় না।

ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, বিদেশে লাখ লাখ টাকা টাকা পাচার করা হয়েছে। দেশের মানুষ সব জানে। একদিন এ সরকারকে এসবের জবাব দিতে হবে।

অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূঁইয়া, জয়নাল আবেদীন ফারুক, গোলাম আকবর খন্দকার, এস এম ফজলুল হক, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, শ্রম সম্পাদক এ এম নাজিম উদ্দীন, মৎস্যজীবী সম্পাদক লুৎফর রহমান কাজলসহ প্রমুখ।