এবার ধীরগতির শহরের তালিকায় চট্টগ্রাম

যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ব্যুরো অব ইকোনমিক রিসার্চ প্রকাশিত একটি গবেষণা প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, বিশ্বের সবচেয়ে ধীরগতির শহর এখন ঢাকা। ১৫২টি দেশের ১ হাজার ২০০টির বেশি শহরে যান চলাচলের গতি বিশ্লেষণে এই চিত্র উঠে এসেছে। তিন লাখের বেশি মানুষের বসবাস রয়েছে, এমন সব শহরে গাড়িতে বিভিন্ন গন্তব্যে যেতে কত সময় লেগেছে, সেই তথ্য গুগল ম্যাপ থেকে সংগ্রহ করে গবেষণায় বিশ্লেষণ করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে সপ্তাহের বিভিন্ন দিন এবং দিনের বিভিন্ন সময়ে যাতায়াতের তথ্য নেওয়া হয়েছে।
ধীরগতির শহরের তালিকায় ঢাকা ছাড়াও বাংলাদেশের দুই শহর ময়মনসিংহ (৯ম) ও চট্টগ্রাম (১২তম) রয়েছে। ভারতের কলকাতা, মুম্বাইসহ আটটি শহর রয়েছে এই তালিকায়। সবচেয়ে বেশি গতির ১০০ শহরের মধ্যে ৮৬টিই যুক্তরাষ্ট্রের। প্রতিবেদনে সবচেয়ে দ্রুতগতির যে ২০টি শহরের নাম এসেছে, তার মধ্যে ১৯টি যুক্তরাষ্ট্রের। একটি কানাডার অন্টারিও অঙ্গরাজ্যের উইন্ডসর।
গবেষণায় দেখা গেছে, ধনী দেশগুলোর শহরে গাড়িতে চলাচল দরিদ্র দেশগুলোর তুলনায় ৫০ শতাংশের মতো দ্রুত হয়। এটা সম্ভব হয় ধনী দেশের শহরগুলোতে বড় বড় রাস্তা এবং অনেক ফাঁকা জায়গা থাকার কারণে। এর ফলে রাস্তায় বেশি গাড়ি নেমেও যানজট ছাড়া চলতে পারে।
অন্যদিকে রাস্তায় যানবাহনের চাপ কম থাকার পরেও সবচেয়ে ধীরগতির ২০টি শহরের তালিকাও করা হয়েছে গবেষণায়। সেখানে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ঢাকা। তালিকায় বাংলাদেশের আরও চারটি শহর রয়েছে-খুলনা (৪র্থ), ময়মনসিংহ (৫ম), চট্টগ্রাম (১৮তম) ও কুমিল্লা (১৯তম)।
যানজট বেড়েছে চট্টগ্রামে যেখানে গত এক দশকে সড়ক অবকাঠামোর উন্নয়নে ১২ হাজার কোটি টাকায় অন্তত ২৩টি প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। এর বেশির ভাগ প্রকল্পের কাজ শেষ হলেও যানজট না কমে বরঞ্চ বেড়েছে। নগরের বিভিন্ন এলাকায় দিনের বিভিন্ন সময়ে যানজট লেগে থাকে। গত একদশকের মধ্যে কয়েকটি ফ্লাইওভার ও ওভারপাস করা হয়েছে চট্টগ্রামে কিন্তু যানবাহন চলাচলের ক্ষেত্রে তেমন কোনো সুফল পরিলক্ষিত হয়নি। এখন দিনদিন ট্রাফিক জ্যাম বেড়েই চলেছে।
গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাস্তায় চলাচলের গতি ১ দশমিক ৩ শতাংশ বাড়াতে পারলে দেশের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) ১০ শতাংশ বাড়ে।
আমাদের ভুল নগরায়ণ, ভুল ট্রাফিক ব্যবস্থা ও ভুল অবকাঠামো উন্নয়নের ফল হচ্ছে যানবাহন ব্যবস্থাপনা মুখ থুবড়ে পড়া। সরকারের টাকা মানে জনগণের টাকা তাই এই টাকা খরচ করার আগে বাস্তবসম্মত পরিকল্পনা গ্রহণ করা উচিত। অধিক জনসংখ্যা একটি সমস্যা বটে তবে সিঙ্গাপুর আয়তনে ছোট হওয়ার পরও অধিক জনসংখ্যা নিয়ে সবকিছু সুপরিকল্পিত ভাবে পরিচালনা করতে পারলে আমরা পারব না কেন।