উদ্বোধনী ট্রেন গেল রামুতে

১১ নভেম্বর উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক »

বহুল প্রতীক্ষিত কক্সবাজার রেলপথের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ১১ নভেম্বর এ উদ্বোধনের প্রস্তুতি নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছে পূর্বাঞ্চল রেলওয়ে। এরই অংশ হিসেবে রামু স্টেশনের উদ্দেশে ৩০২৫ নম্বরের একটি ইঞ্জিন ১৯টি বগি নিয়ে চট্টগ্রাম রেল স্টেশন ছেড়ে যায়। প্রধানমন্ত্রী রামু স্টেশন থেকে টিকেট কেটে ট্রেনে চড়ে কক্সবাজার পৌঁছে এ রেলপথের উদ্বোধন করবেন বলে জানা যায়।

গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ২টা ২০ মিনিটে বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনীর (এসএসএফ) তত্ত্বাবধানে ও রেলওয়ের নিরাপত্তা বাহিনীর (এনআরবি) কড়া নিরাপত্তায় ট্রেনটি চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন ত্যাগ করে।

রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, দোহাজারী-কক্সবাজার নবনির্মিত রেলপথ উদ্বোধন করতে ১১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকালে হেলিকপ্টারযোগে রামু ক্যান্টনমেন্ট পৌঁছাবেন। এরপর তিনি রামু রেল স্টেশনে গিয়ে টিকেট কাটবেন। এরপর রামু থেকে আনুমানিক ৯ কিলোমিটার সফর করে কক্সবাজার আইকনিক রেলস্টেশন পৌঁছে রেলপথ উদ্বোধন করবেন। স্টেশনে নেমে উদ্বোধনী ফলক উন্মোচন করে সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেবেন। এরপর সেখান থেকে মহেশখালীর মাতারবাড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত একটি জনসভায় প্রধান অতিথি থাকবেন।

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের বিভাগীয় ব্যবস্থাপক সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আজ (মঙ্গলবার) চট্টগ্রাম রেলস্টেশন থেকে বিশেষ একটি ট্রেন রামুর উদ্দেশে ছেড়ে গেছে। ট্রেনটির জন্য ১৫টি বগি নির্ধারিত আছে। তবে পরবর্তীতে বিভিন্ন বিষয় বিবেচনা করে অতিরিক্ত একটি ইঞ্জিন এবং আরও চারটি বগি যুক্ত করে পাঠানো হয়েছে। উদ্বোধনের ঠিক আগে রেললাইনে কোনো সমস্যা আছে কি না সেটা দেখতে একটি পাইলট ইঞ্জিন দিয়ে পরীক্ষা করা হবে। এরপরই প্রধানমন্ত্রী ট্রেনে উঠবেন। পুরো উদ্বোধন কার্যক্রম শেষ না হওয়া পর্যন্ত টেনটি এসএসএফ-এর নিয়ন্ত্রণে থাকবে।’

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান যান্ত্রিক প্রকৌশলী তাপস কুমার দাস বলেন, ‘দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথের উদ্বোধনী ট্রেন নিয়ে আমিও কক্সবাজার গিয়েছি। এর আগে রোববার (৫ নভেম্বর) সকাল ৯টার দিকে চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন থেকে প্রথমবারের মতো পর্যটন নগরী কক্সবাজারের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। রেলওয়ে পরিদর্শন অধিদপ্তরের সরকারি রেল পরিদর্শক (জিআইবিআর) রুহুল কাদের আজাদের নেতৃত্বে প্রথম ট্রেনটি কক্সবাজার পৌঁছে সন্ধ্যা ৬টা ২০ মিনিটে। এরপর উদ্বোধনী এ ট্রেন পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।’

প্রসঙ্গত, চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার এবং রামু থেকে মিয়ানমার সীমান্ত এলাকা ঘুমধুম পর্যন্ত ১২৮ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণের প্রকল্প নেওয়া হয় ২০১০ সালে। এ প্রকল্পের আওতায় ১০১ কিলোমিটার রেলপথের কক্সবাজার সদর, রামু, ইসলামাবাদ, ডুলাহাজরা, চকরিয়া, হারবাং, লোহাগাড়া, সাতকানিয়া ও দোহাজারীতে মোট ৯টি স্টেশন নির্মাণ করা হয়েছে। ১৮ হাজার ৩৪ কোটি টাকা ব্যয়ের এ প্রকল্পের মধ্যে ১২ হাজার কোটি টাকা দিয়েছে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক এবং বাকি খরচ বাংলাদেশ সরকার বহন করেছে। ২০১৮ সালের জুলাইয়ে সরকার অগ্রাধিকারভিত্তিতে এই প্রকল্পের নির্মাণকাজ শুরু করে। চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশন (সিআরইসি) ও বাংলাদেশের তমা কনস্ট্রাকশন কোম্পানি এবং চায়না সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন করপোরেশন (সিসিইসিসি) ও বাংলাদেশের ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড পৃথক দুই ভাগে কাজটি করেছে।