আওয়ামী লীগ এখন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে

বিপ্লব দিবসের সভায় ডা. শাহাদাত

নিজস্ব প্রতিবেদক »

মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন বলেছেন, সিআরবিতে হাসপাতাল নির্মাণের পক্ষে-বিপক্ষে আওয়ামী লীগ নিজেরাই আন্দোলন করেছে। এখন আবার সিআরবিতে মিটিং করে তারা বলেছে হাসপাতাল হবে না। প্রধানমন্ত্রী নাকি ৪ ডিসেম্বর চট্টগ্রামের জনসভা থেকে ঘোষণা দেবেন, সিআরবিতে হাসপাতাল না হওয়ার। নিজে নিজে আন্দোলন করে এখন আবার বলছেন হাসপাতাল হবে না। আসলে আওয়ামী লীগ এখন কোনো রাজনৈতিক দল নয়, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে।

গতকাল রোববার বিকালে আসকার দিঘির পাড়স্থ একটি কমিউনিটি সেন্টারে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

আওয়ামী লীগ যেটা বলে সেটাই বিচার বিভাগ পালন করে উল্লেখ করে ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, শেখ হাসিনা কয়েকদিন আগে বলেছেন, বেশি বাড়াবাড়ি করলে খালেদা জিয়াকে জেলে ঢোকানো হবে। আবার শনিবার আইনমন্ত্রী বললেন, নির্বাচনের আগে জেলে যেতে হবে না। তাহলে কি দাঁড়ালো? আওয়ামী লীগ যেটাই বলে বিচার বিভাগ সেটাই করে। দেশে কোনো বিভাগের এখন স্বাধীনতা নেই।

প্রধান আলোচক চবি রসায়ন বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক হায়াত হোসেন বলেন, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের কারণে ৩ নভেম্বরে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে গৃহবন্দি করা হয়েছিল, সেই চক্রান্তকে ব্যর্থ করে দিয়ে এদেশের দেশপ্রেমিক সিপাহী এবং জনগণ ৭ নভেম্বর তাকে মুক্ত করে দেশে সত্যিকার অর্থে স্বাধীনতাকে সুসংহত করেছিলেন। একইসঙ্গে গণতন্ত্রের যে পথ সেই পথের নতুন সূচনা করেন। ৭ নভেম্বর সৃষ্টি না হলে দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হতো না। প্রকৃতপক্ষে ৭ নভেম্বর থেকেই এদেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র এবং জনগণের শাসন প্রতিষ্ঠা করার সেই সুযোগ সৃষ্টি হয়েছিল। যার নেতৃত্ব দিয়েছিলেন জিয়াউর রহমান।

চবি শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি ড. সিদ্দিক আহমেদ চৌধুরী বলেন, ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় অর্জন করলেও স্বাধীনতার প্রকৃত স্বাদ পেতে গোটা জাতিকে ৭ নভেম্বর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছে। যুদ্ধোত্তর দেশে তৎকালীন শাসক গোষ্ঠী রাষ্ট্র পরিচালনায় সীমাহীন অযোগ্যতা, অদূরদর্শিতা ও পদলেহী পররাষ্ট্রনীতি গ্রহণ করায় রক্তে অর্জিত স্বাধীনতাই বিপন্ন হতে বসেছিল। একদিকে শাসকদের সীমাহীন লুটপাট অন্যদিকে বিরোধী মতাদর্শের রাজনৈতিক কর্মীদের হত্যা দেশকে এক দুর্বিষহ পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দেয়। এ পরিস্থিতিতে সা¤্রাজ্যবাদী শক্তির উত্থানকে যখন নিশ্চিত করে তুলছিল, সেই মুহূর্তে সিপাহী জনতার বিপ্লবে স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র রক্ষা পায়। আর সেই ক্রান্তিকালে দেশের হাল ধরেছিলেন রণাঙ্গনের বীর মেজর জিয়াউর রহমান।

চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সদস্যসচিব আবুল হাশেম বক্কর বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশের মানুষের ভোটাধিকার, গণতন্ত্র ও জনগণের নিরাপত্তা কিছুই নেই। দেশ ও জাতি আজ চরম ক্রান্তিকাল অতিবাহিত করছে। জাতীয় নিরাপত্তা, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব আজ চরম হুমকির মুখে। তাই ৭ নভেম্বরের চেতনাকে ধারণ করে গণজাগরণ সৃষ্টির মাধ্যমে বর্তমান অগণতান্ত্রিক সরকারের পদত্যাগের দাবিতে সবাইকে রাজপথে নামতে হবে।
দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান বলেন, নির্বাচনের আগের রাতে ভোট ডাকাতির মাধ্যমে পার্লামেন্ট ও সরকার গঠন করেছে আওয়ামী লীগ। স্বাধীনতার এই ৫০ বছরে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করা দূরে থাক বরং আরো বিভক্ত করে রেখেছে আওয়ামী লীগ। স্বাধীনতাকে সংহত করার চেয়ে আরো দুর্বল করা হয়েছে।

মহানগর বিএনপির সদস্যসচিব আবুল হাশেম বক্করের পরিচালনায় অন্যদের মধ্যে আলোচনায় অংশ নেন বার কাউন্সিলের সদস্য অ্যাডভোকেট এ এস এম বদরুল আনোয়ার, মহানগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক এম এ আজিজ, সাংবাদিক জাহিদুল করিম কচি, চবি শিক্ষক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক এস এম নসরুল কদির, আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট এনামুল হক, সাবেক পিপি অ্যাডভোকেট আবদুস সাত্তার, অ্যাডভোকেট মুফিজুল হক ভূইয়া ও ড্যাব কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. এস এম সারোয়ার আলম।