২১ শিক্ষার্থীর বহিষ্কার চায় ইন্টার্ন চিকিৎসকরা

চমেক হাসপাতাল
কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক আজ

নিজস্ব প্রতিবেদক :
চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে দুই শিক্ষানবিশ চিকিৎসকের উপর হামলার ঘটনায় চমেকের ২১ শিক্ষার্থীর বহিষ্কার চায় ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। তারা ওই ২১ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ারও দাবি জানিয়েছেন।
ইন্টার্ন চিকিৎসকদের এই দুই দফা দাবি নিয়ে আজ সোমবার দুপুরে বৈঠকে বসছে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
ইতোমধ্যে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের দাবি অনুযায়ী চমেকের ২১ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে র‌্যাবকে অনুরোধ করেছে কর্তৃপক্ষ। আর ২১ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগের বিষয়ে একটা তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। শনিবার মেডিক্যালের একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।
ইন্টার্ন চিকিৎসকরা ২১ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারের দাবি জানালেও সেই সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম হুমায়ন কবীর।
তিনি জানান, তদন্ত কমিটির সুপারিশে হয়তো অভিযুক্ত ২১ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে কিছু শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে। তবে তাদের বহিষ্কারের সুযোগ আছে বলে মনে হয় না।
চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ শামীম হাসান জানান, ইন্টার্ন চিকিৎসকদের দাবি অনুযায়ী একাডেমিক কাউন্সিলিংয়ের সভা ডেকেছি। সভায় তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। তদন্ত কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে পরবর্তী একাডেমিক কাউন্সিলিংয়ের সভায় সিদ্ধান্ত নেবো।

এদিকে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ডাকা কর্মবিরতি কর্মসূচি ৬০ ঘণ্টার জন্য স্থগিতের সময়সীমা শেষ হচ্ছে আজ সোমবার দুপুরে।
চমেক ইন্টার্ন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য সচিব ডা. তাজওয়ার রহমান খান সুপ্রভাতকে জানান, কলেজ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে ২ দফা দাবি জানিয়েছিলাম। এ দুই দফা দাবির বিষয়ে তারা কি সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়নি। বৈঠকে তাদের সিদ্ধান্ত জেনে পরবর্তী করণীয় ঠিক করবো।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার বিকেলে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের প্রধান ছাত্রাবাসে শিক্ষানবিশ চিকিৎসক ও শিক্ষার্থীদের এক পক্ষের মধ্যে বিত-া ও মারামারি হয়। এর জেরে দুই পক্ষই চকবাজার থানায় অভিযোগ করেন।
পরে বৃহস্পতিবার রাতে নগরীর চকবাজার থানার গুলজার মোড় এলাকায় ইন্টার্ন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক ডা. ওসমান গণি এবং ছাত্র সংসদের সাহিত্য সম্পাদক সানি হাসনাইন প্রান্তিকের উপর হামলার ঘটনা ঘটে। এরপর শুক্রবার সকাল থেকে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতির ডাক দেন শিক্ষানবিশ চিকিৎসকরা।
আহত দুজন চমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। হামলার ঘটনায় এক শিক্ষানবিশ চিকিৎসকের করা মামলায় ২১ জনকে আসামি করা হয়েছে। তাদের ১১ জনকে বৃহস্পতিবার রাতে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পরে শুক্রবার বিকেলে আদালত ওই ১১ জনের জামিন মঞ্জুর করেন।
দীর্ঘদিন ধরে চট্টগ্রাম মেডিক্যালে ছাত্রলীগের নিয়ন্ত্রণ আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারীদের হাতে ছিল। সম্প্রতি ছাত্রলীগের অপর একটি অংশ ক্যাম্পাসে আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা করছে। এ নিয়ে গত কয়েক মাস ধরে দুই পক্ষের মধ্যে একাধিকবার বিরোধের সৃষ্টি হয়েছে।
আহত ইন্টার্ন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা সাবেক মেয়র আ জ ম নাছিরের অনুসারী এবং বিরোধী পক্ষ শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।

এর আগে গত ১৪ জুলাই নওফেল ও সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরী চমেক হাসপাতালে বিভিন্ন চিকিৎসা সামগ্রী দিতে যান। তারা বেরিয়ে যাওয়ার পর দুই পক্ষের মধ্যে মারামারি হয়। সেদিন দুই পক্ষের কয়েকজন আহত হন। পরে এ ঘটনায় পাল্টাপাল্টি মামলাও হয়।