২০২৪ সালের নির্বাচনগুলো কেন গুরুত্বপূর্ণ

নতুন বছরের শুরুতেই অর্থাৎ জানুয়ারির ৭ তারিখে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বাংলাদেশের দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন। লক্ষণীয় যে, এবছর শুধু বাংলাদেশই নয় বিশ্বের প্রায় ৬০টি দেশের নাগরিকেরা সরকারের সর্বস্তরে নেতৃত্ব বেছে নিতে নির্বাচনে অংশ নেবেন। এসব দেশে ৪০০ কোটির বেশি অর্থাৎ বিশ্বের অর্ধেকের বেশি মানুষ বসবাস করেন। ইতিহাসের যেকোনো বছরের চেয়ে ২০২৪ সালে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি মানুষ ভোট দেবেন।
যুক্তরাষ্ট্র, ভারত বা দক্ষিণ আফ্রিকার মতো যেসব দেশে জাতীয় নির্বাচন হবে, সেসব দেশের ওপর নজর থাকবে সবচেয়ে বেশি। এ ছাড়া গভর্নর, মেয়র, স্থানীয় কাউন্সিল সদস্যসহ অনেক নেতৃত্ব বেছে নেওয়ার নির্বাচনে অংশ নেবেন শত শত কোটি মানুষ। এবছরে এই বিপুলসংখ্যক মানুষের নির্বাচনে অংশ নেওয়ার অর্থ হচ্ছে, এর ফলাফল আগামী দিনের বিশ্বের ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলবে। পরাশক্তির মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন নিয়ে বিশ্বের প্রায় সবগুলো দেশের বাড়তি নজর থাকে কারণ একজন মার্কিন প্রেসিডেন্টের ওপর সারা বিশ্বের অনেককিছু নির্ভর করে। বিশ্বকে শান্তিময়ও করতে পারে, বিশ্বকে নরকেও পরিণত করতে পারে শুধু একজন মাত্র ব্যক্তি। এর পাশাপাশি এ বছর বিশ্বের আরেকটি উদীয়মান পরাশক্তি ভারতেরও সাধারণ নির্বাচন। ভারতের নির্বাচনের ফলাফলও প্রতিবেশী রাষ্ট্রসহ বিশ্বশান্তির জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
মাইক্রোসফটের সহপ্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস গত ১৯ ডিসেম্বর গেটসনোট ডট কমে একটি প্রবন্ধ লেখেন। সেখানে তিনি বলেন, ‘আগামী বছর যাঁরা ভোট দেবেন, তাঁদের নিয়ে যদি আমাকে কোনো ইচ্ছা প্রকাশ করতে বলা হতো, তাহলে আমি চাইতাম, তাঁরা যেন এমন নেতাদের বেছে নেন, যাঁরা সারা বিশ্বে মানব উন্নয়নে বিনিয়োগের গুরুত্বটা বোঝেন। ইতিহাস থেকে এটা বারবার প্রমাণিত হয়েছে, কোনো দেশের সরকার যখন তার দেশের পাশাপাশি সীমান্তের বাইরের মানুষের সহায়তায় এগিয়ে যায়, তখন পুরো বিশ্বই সুফল পায়।’
কভিড-১৯ মহামারিকালে আমরা ভেবেছিলাম আগামীর বিশ্ব হবে হিংসা-বিদ্বেষবিহীন শান্তিময় একটি বিশ্ব। কিন্তু বাস্তবে হয়েছে তার উল্টোটি। মহামারি শেষ হতে না হতেই শুরু হয় রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। এটা শেষ না হতেই শুরু হয়েছে হামাস-ইজরাইল যুদ্ধ, যেখানে প্রতিদিন নারী-শিশুসহ নিরপরাধ মানুষ মারা যাচ্ছে। কিন্তু দুঃখজনক হচ্ছে এই বর্বরতা, নিষ্ঠুরতা নিয়ে বিশ্বনেতারা নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছেন। যুদ্ধ থামাবার চেষ্টা ও আন্তরিকতা কারো মাঝে নেই। এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম শুধু বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনিই স্পষ্ট ও দৃঢ় কণ্ঠে দু স্থানের অহেতুক যুদ্ধের সমালোচনা করে তা থামাতে বলেছেন।
বিল গেটসের মতে আমরাও প্রত্যাশা করি এ বছরের সব নির্বাচনে মানবতা জয়লাভ করুক। যুদ্ধবাজ শক্তি ও ব্যক্তিগুলো পরাজিত হোক।