১৮ টাকার পেঁয়াজ ৮০ টাকা!

নিজস্ব প্রতিবেদক »

ঈদের আগে খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে যে দেশি পেঁয়াজের দাম ছিল ১৮ থেকে ২২ টাকা একই মানের পেঁয়াজ গতকাল মঙ্গলবার নগরীর খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে বিক্রি হয়েছে ৭৫ থেকে ৮০ টাকা দরে। বলতে গেলে দেড় থেকে দুই মাসের ব্যবধানে দেশি পেঁয়াজের দাম বেড়েছে প্রায় তিন থেকে চার গুণ।

এদিকে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্যও বলছে একই কথা। আমদানি বন্ধ থাকার কারণে এবার তিন থেকে চারগুণ বেড়েছে দেশি পেঁয়াজের দাম। তবে আমদানি চালু হলে আবার আগের মতো বাজার দর চলে আসবে বলে আশাবাদী আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীরা।

সংস্থাটির তথ্য মতে, গতকাল বাজারে প্রতিকেজি দেশি চাষের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬৫-৭০ টাকায়। যা এক মাস আগে বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছিল ৩০-৪০ টাকায়। অর্থাৎ টিসিবি মতে এক মাসের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে প্রায় ৯৩ শতাংশ। অন্যদিকে, গত বছর একই সময়ে বাজারে পেঁয়াজের দাম ছিল ৪০ থেকে ৪৫ টাকার মধ্যে। অর্থাৎ বছরের ব্যবধানে এ পণ্যের দর বেড়েছে ৫৯ শতাংশ।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর ২ লাখ ৪১ হাজার ৯০০ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজের আবাদ করা হয়েছে। পেঁয়াজ উৎপাদন হয়েছে ৩৪ লাখ টনের বেশি। বর্তমানে মজুত আছে ১৮ লাখ ৩০ হাজার টন। কিন্তু উপযুক্ত সংরক্ষণের অভাবে বা প্রতিকূল পরিবেশের কারণে ৩০-৩৫ শতাংশ পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে যায়। অন্যদিকে দেশে বছরে পেঁয়াজের চাহিদা ২৬ থেকে ২৮ লাখ টন।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে আরও জানা গেছে, দেশে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ৮ লাখ ৬৩ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানি করা হয়। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে করা হয় ১০ লাখ ৭ হাজার টন। ২০২০-২১ ও ২০২১-২২ অর্থবছরে তা কমে দাঁড়ায় ৫ লাখ ৫৩ হাজার টন ও ৬ লাখ ৬৫ হাজার টনে।

চাক্তাইয়ের পেঁয়াজ ব্যবসায়ী মো. ফোরকান বলেন, বর্তমান চালের চেয়ে পেঁয়াজের দাম বেশি। মার্চের শুরুতে যে পেঁয়াজ আমরা ১৭ থেকে ২০ টাকায় বিক্রি করছি তা আজকের (মঙ্গলবার) পাইকারি বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৭৫ থেকে ৮০ টাকায়। যত শীঘ্রই আমদানির সুযোগ দিবে ততই ভালো।

‘দেশের চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত পেঁয়াজ থাকার কথা’ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মন্তব্যের প্রেক্ষিতে এ ব্যবসায়ী বলেন, ‘প্রতিষ্ঠানটির বাজার তদারকি করা প্রয়োজন। পেঁয়াজ একটি পচনশীল পণ্য। এটি মজুদ করে রাখা সম্ভব না। ব্যবসায়ীরা কোন ধরনের দাম বাড়ায়নি। আমদানিকারকরা যেভাবে দর দিচ্ছে ব্যবসায়ীরা সে দরে বিক্রি করছে। তাছাড়া দাম বাড়ার কারণে অনেক ব্যবসায়ী এখন আর পেঁয়াজ বিক্রি করছে না।’

খাতুনগঞ্জের হামিদুল্লাহ মার্কেটের ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ব্যবসায়ী মো. ইদ্রিছ বলেন, ‘চলতি বছর উৎপাদন মৌসুমে কৃষকের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে ১৫ মার্চ থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ রেখেছে সরকার। এরপর কিছুদিন দাম নিয়ন্ত্রণে থাকলেও শেষ এক মাস পেঁয়াজের দাম বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে।’