সীমান্তে অনুপ্রবেশ ও মাদক চোরাচালান রোধে ঐকমত্য

টেকনাফে বিজিবি-বিজিপি সম্মেলন

নিজস্ব প্রতিনিধি, টেকনাফ »

সীমান্তে অবৈধ অনুপ্রবেশ রোধ, মাদক চোরাচালান ও আন্তঃসীমান্তের সন্ত্রাসবাদ দমনসহ উভয় দেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় টেকনাফের হোটেল সেন্ট্রাল রিসোর্ট হলরুমে বিজিবি-বিজিপির মধ্যে রিজিয়ন পর্যায়ের সীমান্ত সম্মেলনের ২য় দিনে এ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

টেকনাফে বিজিবি-বিজিপির মধ্যে ২ দিনব্যাপী রিজিয়ন পর্যায়ের ৫ম সমন্বয় সীমান্ত সম্মেলন শেষে আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে গৃহীত সিদ্ধান্তসমূহ জানানো হয়েছে।
বিজিবি কক্সবাজার রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাজম-উস-সাকিবের নেতৃত্বে বাংলাদেশের ১৫ সদস্যের প্রতিনিধি দল এবং বিজিপির কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হ্টট হ্ণউইনের নেতৃত্বে ১৬ সদস্য প্রতিনিধি দলের মধ্যে আলোচনা হয়। এতে উভয় দেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়াদি আলোচনার পর উভয় প্রতিনিধি দল সীমান্ত চুক্তি স্মারকে স্বাক্ষর করেন।

দুপুর ১২টার দিকে সীমান্ত সম্মেলন শেষে সেন্ট্রাল রিসোর্ট প্রাঙ্গণে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কক্সবাজার রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাজম-উস-সাকিব এবং মিয়ানমার বর্ডার গার্ড পুলিশ রিজিয়ন-১ এর কমান্ডার পুলিশ ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হ্টট হ্ণউইন উপস্থিত ছিলেন। যৌথ সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ‘বাংলাদেশ মিয়ানমার সীমান্ত চুক্তি-১৯৮০’ অনুযায়ী সীমান্ত সুরক্ষার জন্য এটি নিয়মিত বৈঠক। যা উভয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সম্মতিতে নির্দিষ্ট বিরতিতে অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। ২ দিনব্যাপী এই সম্মেলন দুটি বন্ধুপ্রতীম সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে অত্যন্ত আন্তরিক ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে। সম্মেলনে সীমান্ত ব্যবস্থাপনা, সীমান্ত নিরাপত্তা এবং সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কিত বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোকপাত করা হয়। এর মাধ্যমে সীমান্ত নিরাপত্তা জোরদারের বিষয়ে উভয় প্রতিনিধি দল সম্মিলিতভাবে কাজ করতে সম্মত হয়েছে। ভবিষ্যতে নিয়মিত বিরতিতে এরূপ সভা আয়োজন, পুনঃপুনঃ নিবিড় যোগাযোগের মাধ্যমে পারস্পরিক আস্থা, নির্ভরতা, সহযোগিতার ক্ষেত্র বৃদ্ধির লক্ষ্যে দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করা হয়েছে।

সম্মেলনে সীমান্ত সম্পর্কিত বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যেমন : অবৈধ অনুপ্রবেশ প্রতিরোধ, আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাস দমন ও দুষ্কৃতকারীদের প্রতিহতকরণ, মাদকদ্রব্য চোরাচালান প্রতিহতকরণ, (ইয়াবা ও আইস) সীমান্তে গুলিবর্ষণ, অসতর্কতা/ভুলবশত অথবা ঝড়ের কবলে পড়ে আন্তর্জাতিক সীমানা অতিক্রম করে মায়ানমারের অভ্যন্তরে প্রবেশে ধৃত বাংলাদেশি নাগরিকদের বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত চুক্তি-১৯৮০ অনুযায়ী দ্রুত ফেরত প্রদানের বিষয়টি ত্বরান্বিত ও সহজীকরণ, উভয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে ত্বরিৎ যোগাযোগ স্থাপনে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ, বাংলাদেশ-মায়ানমার সীমান্তে যৌথ সমন্বিত টহল পরিচালনা ও সীমান্ত পিলার পরিদর্শনসহ নানাবিধ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
সম্মেলনে দুটি সীমান্তরক্ষী বাহিনীর বিভিন্ন পর্যায়ে আলোচনার ধারা অব্যাহত এবং প্রতিবেশী এ দুটি বাহিনীর সম্পর্ক অনন্য উচ্চতায় উন্নীত যা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নে ও পারস্পরিক সহযোগিতায় ভূমিকা রাখবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়।