সিয়ামসাধনায় জীবন হোক পরিশুদ্ধ

ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের অন্যতম ফরজ ইবাদত হলো সিয়াম বা রোজা। দ্বিতীয় হিজরিতে কোরআনের আয়াতের মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা উম্মতের উপর রোজা ফরজ করেছেন। মুসলমানদের সংযম সাধনার মাস পবিত্র রমজান।
দীর্ঘ ১১ মাসের প্রতীক্ষার পর রহমত, বরকত ও মাগফিরাতের সওগাত নিয়ে সারা বিশ্বে মুসলমানের কাছে সাম্য, সৌহার্দ্য, সম্প্রীতি, ভ্রাতৃত্ব, মানবিকতা, ত্যাগ, সংযম ও আত্মশুদ্ধির মাস এই পবিত্র মাহে রমজান ফিরে আসে। বছর ঘুরে আসা পবিত্র মাহে রমজান মাসের শুভাগমনকে আমরা স্বাগত জানাই।
পবিত্র এ মাসকে তিন দশকে ভাগ করা হয়েছে। প্রথম দশক রহমতের, দ্বিতীয় দশক-মাগফিরাতের আর তৃতীয় দশক হলো নাজাতের। আজ চাঁদ দেখা গেলে আগামীকাল থেকে পবিত্র মাহে রমজান শুরু হবে। পবিত্র রমজানের প্রথম দশক রহমতের দশক। এই দশকে আমাদের সবার মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে এ কামনাই হওয়া উচিত যে, তার কাছ থেকে যেন আমরা বেশি বেশি রহমত লাভ করতে পারি এবং তার রহমতের চাদরে যেন আমাদেরকে আবৃত করে রাখেন।
কু-প্রবৃত্তি দমন ও আত্মশুদ্ধির সর্বোত্তম মাস পবিত্র রমজান মাস। পুণ্যময় এই মাস রহমত, বরকত ও মুক্তির বার্তা নিয়ে আসে, হৃদয়কে প্রশান্ত করে। বিশ্ব মুসলিমকে সংযত-সুন্দর জীবন-যাপনের শিক্ষা দেয়। মুসলিম নর-নারীর কাছে রোজার মাস অত্যন্ত কাক্সিক্ষত। মহান আল্লাহ’ তাআলার নৈকট্য লাভের আশায় মুসলমানরা শ্রদ্ধা ও নির্মল ভালোবাসায় বরণ করে এই মাসকে। মহান আল্লাহ এই মাসের প্রতিটি দিন ও মুহূর্তকে নির্ধারিত করে দিয়েছেন সংযম সাধনার জন্য। আর তাই পবিত্র এই মাসের মধ্যে নিহিত রয়েছে দুনিয়া ও পরকালের অশেষ কল্যাণ। আর এই পবিত্র মাসে শুধু পানাহার থেকে বিরত থাকাই নয়, এর পাশাপাশি তাগিদ দেওয়া হয়েছে জাগতিক সব বিষয়ে সংযত জীবনাচারের জন্য।
রমজানের শিক্ষা হলো সব ধরনের পাপ কাজ থেকে বিরত থাকা এবং আত্মশুদ্ধি অর্জন করা। নিজের এবং অন্যের ওপর জুলুম করা, অপচয় করা থেকে বিরত থাকা। কিন্তু পরিতাপের বিষয় হলেও সত্য যে, পবিত্র রমজানে অনেকেই বেখেয়াল থাকেন। এছাড়া রোজার মাস এলেই দেখা যায় জিনিসপত্রের দাম হু হু করে বেড়ে যায়। এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী এই মাসে বেশি মুনাফার আশায় দাম বাড়িয়ে নিজেদের স্বার্থ আদায়ে মরিয়া হয়ে ওঠে যা অত্যন্ত দুঃখজনক।
রমজানের তাৎপর্য প্রত্যেকেরই গভীরভাবে উপলব্ধি করা এবং সেই মোতাবেক আমল করা প্রয়োজন। মনে রাখতে হবে, সিয়াম সাধনার শিক্ষা জীবনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিজেকে পরিশুদ্ধ করতে হবে এবং এর মাধ্যমে অর্জিত শিক্ষা জীবনে প্রতিফলিত করতে হবে। এক মাসের সংযম সাধনার ভেতর দিয়ে প্রত্যেকের জীবন পরিশুদ্ধ ও পবিত্র হয়ে উঠুক; সমাজ হয়ে উঠুক মানবিকতাপূর্ণ- এমনটিই আমাদের প্রত্যাশা।