সাতকানিয়া : পাহাড়ি ঢলে রামপুর ডিসি সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন

নিজস্ব প্রতিনিধি, সাতকানিয়া :

সাতকানিয়া উপজেলার সোনাকানিয়া ইউনিয়নের ডিসি সড়ক ১ জুলাই থেকে অচল হয়ে আছে। কয়েকদিনের টানা বর্ষণে পাহাড়ি ঢলে ধ্বসে গিয়ে সড়কের মাঝখানে বিশাল গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে ভোগান্তিতে পড়েছেন সোনাকানিয়া, বড়হাতিয়া, মাদার্শা, এওচিয়া, পৌরসভা ও সদর ইউনিয়নসহ বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের যাতায়াতকারী হাজার হাজার মানুষ। সোনাকানিয়া কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের সামনে  সড়কটি ধবসে গিয়ে বর্তমানে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় আছে। সাতকানিয়া উপজেলার সোকানিয়া ইউনিয়নের মধ্য দিয়ে নির্মিত এসড়কটি লোহাগাড়া উপজেলা ও বাঁশখালী উপজেলায় সংযোগ সড়ক হিসেবে পরিচিত।  গত বৃহষ্পতিবার পাহাড়ি ঢলে রাতের যেকোন সময়ে প্রবল স্্েরাতের কারণে সড়কের পিচ ঢালাই ও মাটি ধ্বসে বিশালাকৃতির কুপের সৃষ্টি হয়। এতে এলাকাবাসীর মধ্যে এক অজানা ভীতি ও আতঙ্কেও জন্ম দেয়। এলাকাবাসীর অভিযোগ নির্মানকাজে অনিয়মের জন্য আজ এ অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসনকে দ্রুত সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের অনিয়মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে এলাকাবাসী অনুরোধ জানিয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, উপজেলার রামপুর ডিসি সড়কটি আগে গ্রামীন মেটোপথ ছিল। ওই এলাকার জমাদার পাড়া, তাঁতী পাড়া ও দক্ষিণ কালামিয়ার পাড়ার পানি নিষ্কাষণের জন্য ছোট কালভার্ট ছিল।

যানবাহন চলাচলের কয়েক মাস আগে কালভার্টটি ভেঙ্গে যায়। ওই স্থানে বক্স কালভার্ট নির্মানের জন্য সরকারিভাবে বরাদ্ধ আসে ২ লক্ষ ৯ হাজার ৭৬০ টাকা। বরাদ্দকৃত টাকা লোক দেখানো কিছু কাজ বাকী লোপাট করে সংশ্লিষ্টরা।

ওই স্থানে পাহাড়ী ঢলে ধ্বসে গেলে তাঁতী পাড়া এলাকার পানি নিষ্কাষণ বাধাগ্রস্ত হয়। ফলে কয়েকদিনের টানা বর্ষণে তাঁতী পাড়ার তলিয়ে যায়।

যোগাযোগ বিছিন্ন হয়ে পড়ে সাতকানিয়র সোনাকানিয়া ইউনিয়নের সাথে সাতকানিয়া, লোহাগাড়া ও বাঁশখালী উপজেলায় বিভিন্ন ইউনিয়নের সাথে।

কয়েকদিন অতিবাহিত হলেও এ সড়ক মেরামতের কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।

গত রোববার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রামপুর ডিসি সড়কের সোনাকানিয়া কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ এলাকায় ধ্বসে বিশাল গর্তের সৃষ্টি হয়ে যোগাযোগ বিছিন্ন হয়ে গেছে। দুর্ঘটনা এড়াতে এলাকাবাসী ধ্বসে যাওয়া স্থানে গাছের ছোট ছোট ডাল দিয়ে রেখেছে।

উপজেলার সোনাকানিয়া ৪নং ওয়ার্ডের  ইউপি সদস্য আইয়ুব জমাদার বলেন, ৪ দিন হয়ে গেল কালভার্টসহ রাস্তাটি ভেঙে গেছে দেখার কেউ নেই। কিছুদিন আগে ওই স্থানে ভাঙলে চেয়ারম্যানের পক্ষ হয়ে আনিছুল হক বাবুল নামে এক ব্যক্তি ৭২ হাজার টাকার কাজ করেছিলেন বলে শুনেছি।

এরপর একটি সাইনবোর্ড দেখলাম ২ লক্ষ ৯ হাজার ৭৬০ টাকার প্রকল্প। পরবর্তীতে আবার ধবসে গেলে আমি ১ গাড়ি ইট, ১ গাড়ি বালু ও ২৫০০টাকা মজুরি খরচ দিয়ে কোন রকমে মেরামত করে দিই।

গত বৃহষ্পতিবার টানা বর্ষণে পাহাড়ি ঢল নেমে ওই স্থান আবার ধবসে গিয়ে সড়ক যোগাযোগ সম্পূর্ণ বিছিন্ন হয়ে গেছে। জনসাধারণের দুর্ভোগ কমাতে অতি দ্রুত সড়কটি মেরামত করে একটি বক্স কালভার্ট নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি।

এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে সাতকানিয়া উপজেলা প্রকৌশলী পারভেজ সারওয়ার হোসেন বলেন, যেহেতু সড়কটি সড়ক ও জনপথ বিভাগের আওতাধীন সেহেতু স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ এটা মেরামত করার কোন সুযোগ নেই।

এ ব্যাপারে দোহাজারি সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সুমন সিংহ এর নিকট পিচ ঢালা সড়ক ও কালভার্ট ধ্বসে যাওয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, খবর পেয়ে স্পটে একজন সহকারি প্রকৌশলী পাঠানো হয়েছে। অতি দ্রুত একটি কালভার্ট নির্মান করা হবে।