সহিংসতা কোনোভাবেই কাম্য নয়

শেষ পর্যন্ত নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সহিংস হয়ে উঠছে দেশের রাজনীতি। গতকাল ২৮ অক্টোবর ঢাকায় বিএনপি, আওয়ামী লীগ ও জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের সমাবেশকে ঘিরে দীর্ঘ এক বছরেরও বেশি সময় পর রাজনৈতিক সহিংসতা দেখলো দেশবাসী।
আগে থেকেই এই রাজনৈতিক কর্মসূচি নিয়ে জনমনে সহিংসতার শঙ্কা ছিল। শেষ পর্যন্ত সেটিই সত্য হয়ে ওঠে। রাজধানীর কাকরাইল ও বিএনপি কার্যালয় নয়াপল্টনে পুলিশ-বিএনপি ও আওয়ামী লীগ ত্রিমুখী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। পরে মহাসমাবেশ স্থগিত করে বিএনপি। তার আগে আজ সারাদেশে হরতালের ডাক দিয়েছে। পরে জামায়াতও আলাদা করে হরতাল আহ্বান করেছে।
দুপুরে রাজধানীর কাকরাইল মোড়ে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ বাধে। এ সময় বিএনপি কর্মীরা তিনটি যাত্রীবাহী বাস ভাঙচুর এবং পুলিশ বক্সে আগুন দেয়। হামলার ঘটনা ঘটে প্রধান বিচারপতির বাসভবনেও।
এর আগে দুপুর আড়াইটার দিকে পুলিশি বাধার মুখে সরকার পতনের এক দফা দাবিতে শুরু হওয়া বিএনপির নয়াপল্টনের সমাবেশ প- হয়ে যায়। ধাওয়া খেয়ে নেতাকর্মীরা চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। পরে নয়াপল্টন ও রাজধানীর অন্যান্য স্থানে বিএনপি-পুলিশ-আওয়ামী লীগ ত্রিমুখী সংঘর্ষ হয়। এসব ঘটনায় বিএনপির বহু নেতাকর্মীর পাশাপাশি পুলিশ ও সাংবাদিকরা আহত হয়েছেন। পুলিশ দাবি করেছে, তাদের ৪১ জন সদস্য আহত হয়েছেন। গতকালের ঘটনায় এক পুলিশ ও এক বিএনপি কর্মী নিহত হয়েছেন। এ অবস্থায় রাজধানীতে ১১ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।
অনেকদিন পর দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠল। যেটি কোনোভাবেই কাম্য নয়। গতকালের ঘটনায় আবার পেট্রোলবোমার ব্যবহার হয়েছে। পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বেশকিছু গাড়ি। এই সহিংসতা যদি সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ে তাহলে পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যাবে। সামনে বার্ষিক পরীক্ষা। শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন যেন ব্যাহত না হয় সেদিকে রাজনীতিকদের লক্ষ্য রাখা উচিত।
২০১৩ ও ১৪ সালের ভয়াবহ সময়ের কথা মানুষ এখনও ভোলেনি। সে-ধরনের বিভীষিকাময় দিনগুলো যেন বাংলাদেশে আর ফিরে না আসে। আমরা প্রত্যাশা করব রাজনৈতিক দলগুলো বিচক্ষণতা, সহনশীলতা ও পরমত সহিষ্ণুতার পরিচয় দিয়ে জাতিকে বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা করবে।