মিয়ানমার থেকে তিনটি ট্রলারে পালিয়ে এলেন বিজিপি সদস্যরা

রাখাইনে বড় ঘাঁটি দখলে নিয়েছে আরাকান আর্মি

তিনটি কাঠের ট্রলারে পালিয়ে এলেন বিজিপি সদস্যরা। ছবি: সুপ্রভাত

নিজস্ব প্রতিনিধি, টেকনাফ »

আরাকান আর্মির হামলার মুখে মিয়ানমার জান্তা বাহিনীর সেনারা আবারও বাংলাদেশে পালিয়ে আসছেন। টেকনাফ উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের নাফনদী সীমান্তের শাহপরীর দ্বীপ দিয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে মিয়ানমার বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) আরও ৮৮ সদস্য। তাদের কোস্টগার্ড সদস্যরা হেজাফতে নিয়েছে।

গতকাল রোববার (৫ মে) ভোরে ৩টি কাঠের ট্রলারযোগে সীমান্তে অনুপ্রবেশের সময় কোস্টগার্ড তাদের হেফাজতে নিতে দেখেছে স্থানীয় লোকজন।

যদিও বিষয়টি নিয়ে কোস্টগার্ডের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা কথা বলতে রাজি হননি। কোস্টগার্ডের একটি সূত্র জানিয়েছে, এদের নিরস্ত্রীকরণ করে বিজিবির কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে। এদিন কথা বলেননি বিজিবির কোনো কর্মকর্তাও। বিষয়টি নিয়ে উপরের মহলের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন স্থানীয় বিজিবি।

প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় লোকজন জানিয়েছে, কাঠের ট্রলারযোগ আসা মিয়ানমারের বিজিপি সদস্যদের কোস্টগার্ড সদস্য হেফাজতে নেয়ার পর টেকনাফের কেরুনতলীস্থ কোস্টগার্ড স্টেশনের কার্যালয়ে রাখা হয়েছে। সেখানে অন্তত ৮৮ বিজিপি সদস্য রয়েছে।

বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবির সদস্যরা গত শনিবার (৪ মে) নাফ নদী পার হয়ে আসা মিয়ানমার বর্ডার গার্ড পুলিশের অন্তত ৪০ জন সদস্যকে আটক করে হেফাজতে নিয়েছেন।

থাইল্যান্ডে থেকে প্রকাশিত মিয়ানমার ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ইরাবতীর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার মংডু শহরতলিতে বিজিপির সদর দপ্তরের নিয়ন্ত্রণ নেয় আরাকান আর্মি। এর আগে আরাকান আর্মির সদস্যরা বৃহস্পতিবার বিজিপির কিয়ে কান পিন বর্ডার গার্ড পুলিশ সদর দপ্তরে আক্রমণ করেন। মিয়ানমার সরকারের পুলিশ ও সেনাসদস্যরা তাদের প্রতিরোধের চেষ্টা করেন। কিন্তু হামলার মুখে টিকতে না পেরে একপর্যায়ে পিছু হটতে বাধ্য হয়েছেন তাঁরা।

কিয়ে কান পিন গ্রামটি মংডুর ১২ কিলোমিটার উত্তরে। সেখানকার ঘাঁটিটি আরাকান আর্মির হাতে পতন হওয়ার আগে জান্তা সরকার হেলিকপ্টারে করে কমান্ডারদের উদ্ধার করে। অবশ্য মংডু শহরের পূর্ব দিকের দুটি তল্লাশিচৌকি এখনো জান্তা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। রাখাইনের স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, মিয়ানমার বাহিনীর অন্তত ৫০ সেনা আরাকান আর্মির কাছে আত্মসমর্পণ করেছে।

এর আগেও কয়েক দফায় ৬১৮ জন মিয়ানমার সেনা, বিজিবি ও ইমিগ্রেশন সদস্য পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেন। এর মধ্যে ২৮৮ জনকে গত ২৫ এপ্রিল এবং ৩৩০ জনকে ১৫ ফেব্রুয়ারি জাহাজে করে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হয়।