সবার জন্য পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা নিশ্চিত হয়েছে

জাতীয় স্যানিটেশন মাস ও বিশ্ব হাত ধোয়া দিবস অনুষ্ঠানে মেয়র

‘স্বাস্থ্যসম্মত ও টেকসই স্যানিটেশন জনস্বাস্থ্য সুরক্ষার পূর্বশর্ত। সুন্দর জীবন ও শারীরিক সুস্থতার জন্য প্রতিটি কাজের আগে ও পরে সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। বিভিন্ন সংক্রমণ জাতীয় রোগ থেকে সুরক্ষা ও এর বিস্তার রোধে সবচেয়ে সাশ্রয়ী ও কার্যকর উপযোগগুলোর একটি নিয়মিত সাবান দিয়ে হাত ধোয়া এবং নিরাপদ স্যানিটেশন ও স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়গুলো মেনে চলা, ভালো করে সাবান ও পানি দিয়ে হাত ধোয়ার মাধ্যমে সংক্রামক রোগ বহুলাংশে কমানো সম্ভব। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সময়োপযোগী কার্যক্রমের ফলে জনগণের মাঝে স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধি পাওয়ার পাশাপাশি সংক্রমিত রোগের প্রাদুর্ভাব হ্রাস পেয়েছে।’

বুধবার সকালে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউস সম্মেলন কক্ষে জাতীয় স্যানিটেশন মাস ও বিশ্ব হাত ধোয়া দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী এ কথাগুলো বলেন।

তিনি বলেন, স্যানিটেশন কর্মসূচিতে সহ¯্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছে, যা আন্তর্জাতিক পরিম-লে ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়েছে। বাংলাদেশ ২০৩০ সালের মধ্যে বিশেষ করে সবার জন্য ন্যায্যতার ভিত্তিতে নিরাপদ পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা নিশ্চিতের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। মেয়র বলেন, চসিকের পরিচ্ছন্ন কর্মীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিশ্চিত করতে আধুনিক যন্ত্রের মাধ্যমে পিট ল্যাট্রিন বা সেপটিক ট্যাংক হতে পয়ঃবর্জ্য সংগ্রহ করে পয়ঃবর্জ্য শোধনাগারে পরিশোধন করা হচ্ছে। এছাড়াও সবার জন্য স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেশন নিশ্চিতে চসিক ও বেসরকারি সংস্থাসমূহের সহযোগিতায় নগরীতে পাবলিকও কমিউনিটি টয়লেট স্থাপনসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ওয়াশ ব্লক স্থাপনের কাজ চলমান রয়েছে। এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে ইউএনডিপির মাধ্যমে উল্লেখযোগ্য অনেক কাজ শেষ করা হয়েছে।

চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো. আশরাফ উদ্দীনের সভাপতিত্বে প্রকৌশলী মোহাম্মদ গোলাম মোর্শেদের সঞ্চালনায় এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহীদুল আলম, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মুমিনর রহমান, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ফিরোজ আহমদ চৌধুরী।

অন্যদের মধ্যে আরো বক্তব্য রাখেন প্রকৌশলী পলাশ চন্দ্রদাশ, আরেফাতুন জান্নাত, হাবিবুর রহমান, ফারহানা ইদ্রিস, মো. সরোয়ার আলম, খোরশেদ আলম। এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রকৌশলী জহির উদ্দীন দেওয়ান।

মেয়র আরো বলেন, হাত ধোয়া একটি অপরিহার্য কাজ। সে বিষয়ে আমরা পূর্বে তেমন সচেতন ছিলা না। কিন্তু কোভিড-১৯ সংক্রমণ যখন সারাবিশ^কে নেড়ে দেয় তখন বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থা হাত ধোয়ার মাধ্যমে এর সংক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়ার কথাটি গুরুত্বসহকারে প্রচার করে এবং তখন থেকে ঘন-ঘন হাত ধোয়ার মাধ্যমে কোভিড-১৯ এর সংক্রমণ থেকে অনেকটা রক্ষা পাই এবং স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে।

সভাপতির বক্তব্যে বিভাগীয় কমিশনার মো. আশরাফ উদ্দীন বলেন, পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা ঈমানের অঙ্গ। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার উপর সুস্বাস্থ্য নির্ভর করে। বর্তমান সরকার সবার জন্য নিরাপদ স্যানিটেশন ব্যবস্থা ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিশ্চিত করতে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের মাধ্যমে প্রায় ১৪ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে দেশে ৫০টির অধিক প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে। যার ফলে স্যানিটেশনের কাভারেজ ৯৯ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। তিনি বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়সমূহে যেসব টয়লেট স্যানিটেশনের জন্য স্থাপন করা হয়েছে তা কিভাবে ব্যবহার করবে এবিষয়ে প্রশিক্ষণের প্রয়োজন রয়েছে। তিনি সরকারের টেকসই উন্নয়ন অভিষ্ঠসমূহে অর্জনে সহযোগী সংস্থা ও গণমাধ্যমসহ দেশের প্রতিটি নাগরিককে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। আলোচনা সভার পূর্বে জাতীয় স্যানিটেশন মাস ও বিশ^ হাত ধোয়া দিবস উপলক্ষে একটি র‌্যালি ও একটি শিশুর হাত ধোয়ার মধ্যদিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা করেন। বিজ্ঞপ্তি