সচেতনতা ও প্রকল্প বাস্তবায়ন সমান গুরুত্বপূর্ণ

চাক্তাই খালের বিভিন্ন পয়েন্ট পরিদর্শনকালে মেয়র

বারাইপাড়া নতুন খাল খনন প্রকল্পের কাজ পরিদর্শন ও বির্জাখালে সংযুক্ত কৃষি খালসহ সংশ্লিষ্ট শাখা খালসমূহ গতকাল রোববার সকাল ১১টায় পরিদর্শন করেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী।
এসময় তিনি স্থানীয় ও ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে বলেন, এ প্রকল্প ও মেগা প্রকল্পের আওতাধীন চাক্তাই খাল খনন ও সংস্কারের কাজ শেষ হলে নগরীর বৃহত্তর অংশের জলাবদ্ধতা সমস্যা দূর হবে। প্রসঙ্গক্রমে তিনি আরো বলেন, চাক্তাই খাল ছিল চট্টগ্রামের আশীর্বাদ।
চট্টগ্রামের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের মূলকেন্দ্র ছিল এই চাক্তাই খালের দু’পাশের চাক্তাই, খাতুনগঞ্জ, আছদগঞ্জ, কোরবানীগঞ্জ, বক্সিরহাটকে ঘিরেই। বিশেষ করে ভোগ্যপণ্য আনয়নে সারাদেশের সাথে চট্টগ্রাম সংযুক্ত ছিল এ চাক্তাই খালের মাধ্যমে। তাই এ খালকে বাঁচাতে চাক্তাই খাল খনন সংগ্রাম কমিটি করেছিলাম। তৎকালীন মেয়র চট্টগ্রামে অবিসংবাদিত নেতা আলহাজ এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী ৯ থেকে বার ফুট গভীরতা রেখে খালটি খনন ও তলা পাকা করেছিলেন। চট্টগ্রামবাসী ও ভোগ্যপণ্য কারবারীরা এর সুফল পেয়েছিল। কিন্তু একটা সময়ে এসে এ খালের নিয়মিত মাটি উত্তোলন করা হয়নি। খালের দু’পাশ দিয়ে বিভিন্ন স্থাপনা গড়ে ওঠায় মাটি সরানোর যানবাহন, যন্ত্রপাতি আনা নেওয়া কঠিন হয়ে পড়ায় প্রতি বছর যে পরিমাণ পলি, পাহাড় ধোয়া ও নির্মাণ কাজের বালি মাটি, গৃহস্থালী বর্জ্য, পলিথিনসামগ্রী জমা হয়ে খালটি মৃত প্রায় হয়ে চট্টগ্রামে দুঃখ বা অভিশাপে পরিণত হয়। বহদ্দারহাট হতে বারইপাড়া, কাপাসগোলা, চকবাজার, দেওয়ানবাজার, দক্ষিণ বাকলিয়া, কোরবানী গঞ্জ, খাতুনগঞ্জ হয়ে সাড়ে ছয় কিলোমিটার খালটির বিভিন্ন পয়েন্টে কালভার্ট, কালভার্টের নিচে, গ্যাস ও ওয়াসার পাইপলাইন, অপরিকল্পিত স্থাপনা নির্মাণ, অবৈধ দখল নগরীর পানি ও পয়ঃনিষ্কাশনে প্রধানতম পথটিতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে ও সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোর কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন জলাবদ্ধতা নিরসন মেগা প্রকল্পের আওতাধীন ৩৬টি খাল খনন ও সংস্কারের মধ্যে চাক্তাই খাল অন্যতম।
নানান জটিলতায় বাস্তবায়নাধীন এ মেগা প্রকল্পের কাজ বিলম্বিত হওয়ায় এবারও হয়তো মানুষ বিড়ম্বনার মধ্যে বর্ষা কাটাবে। তবে আশা করছি আগামী বর্ষা মৌসুমের আগেই এ প্রকল্পের কাজ শেষ হবে এবং চট্টগ্রামে জলাবদ্ধতা ও জলমগ্নতার প্রকোপ আর থাকবেনা। জলাবদ্ধতার প্রকোপ নিয়ন্ত্রণে সিটি করপোরেশন তার কাজের আওতায় নিয়মিত ক্র্যাশ প্রোগ্রাম চালু রেখেছে। গুরুত্ব বুঝে, সিটি করপোরেশন তার কাজের আওতার বাইরে গিয়েও বৃহত্তর স্বার্থে কিছু কিছু কাজে সহায়তামূলক কাজ করেছে। এখালের বিভিন্ন পয়েন্টে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কারণে পানি চলাচলে প্রতিবন্ধকতা রয়েছে তা বাস্তবায়নকারী সংস্থাকে জানাব। এবং দ্রুত এ সমস্ত বাধা অপসারণে তারা আমাদের সহায়তা চাইলে তাদের সহায়ক হিসেবে অবশ্যই কাজ করব। এ প্রকল্পের কাজ শেষ হলে এবং খাল নালাগুলোকে আবর্জনামুক্ত রাখতে পারলে নগরবাসীকে আর জোয়ারের পানি ও বৃষ্টির পানি নিয়ে শঙ্কায় থাকতে হবেনা। তাই প্রকল্প বাস্তবায়ন ও নিয়মিত ক্র্যাশ প্রোগ্রামের পাশাপাশি নাগরিক সচেতনতা সমান গুরুত্বপূর্ণ।
পরিদর্শনকালে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কাউন্সিলর আশরাফুল আলম, নির্বাহী প্রকৌশলী ফরহাদুল আলম, নির্বাহী প্রকৌশলী আবু সিদ্দিকীসহ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। বিজ্ঞপ্তি