শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি নিশ্চিত করুন

নগরীতে সংহতি সমাবেশ

সুপ্রভাত ডেস্ক

চা শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির যৌক্তিক দাবি অবিলম্বে মেনে নিয়ে তাদের জীবনধারণের জন্য প্রয়োজনীয় সকল সুবিধা নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়েছে ‘সচেতন নাগরিকবৃন্দ, চট্টগ্রাম’ আয়োজিত সমাবেশ থেকে। সোমবার বিকেলে নগরীর চেরাগী পাহাড় মোড়ে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, বছরের পর বছর ধরে চা শ্রমিকরা নির্যাতন-নিপীড়ণ, শোষণ-বঞ্চনা-বৈষম্যের শিকার হয়ে আসছেন। শ্রমিকদের উপর এ অত্যাচার বন্ধ করতে হবে। চা শ্রমিকসহ সকল শ্রমিকের ঘামের শ্রমের ন্যায্য মজুরি দিতে হবে। দ্রব্যমূল্যের চরম উর্ধগতিতে সাধারণ মধ্যবিত্তই চলতে পারে না, চা শ্রমিকরা কিভাবে চলবে? তাদের সন্তানদের শিক্ষার ব্যবস্থা নেই। তাদের চিকিৎসা নেই, বাসযোগ্য ঘর নেই। এ বৈষম্য-জুলুম স্বাধীন দেশে কল্পনা করা যায় না। বক্তারা অবিলম্বে চা শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধিসহ সকল যৌক্তিক দাবি মেনে নিয়ে তাদের জীবনধারণের জন্য প্রয়োজনীয় সকল সুবিধা নিশ্চিত করার দাবি জানান।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. মাহফুজুর রহমান, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, নাট্যকার প্রদীপ দেওয়ানজী, প্রকৌশলী দেলোয়ার মজুমদার, ওয়ার্কার্স পার্টির চট্টগ্রাম জেলার সাধারণ সম্পাদক শরীফ চৌহান, ন্যাপ কেন্দ্রীয় নেতা মিটুল দাশগুপ্ত, বিএফইউজ’র যুগ্ম মহাসচিব মহসীন কাজী, জাসদ নেতা জসিম উদ্দিন বাবুল, শ্রমিক নেতা ফজলুল কবির মিন্টু, আবৃত্তি শিল্পী রাশেদ হাসান।
সাংবাদিক প্রীতম দাশের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন আবৃত্তি শিল্পী প্রণব চৌধুরী, যুব ইউনিয়ন সাংগঠনিক সম্পাদক রাশেদুল সামির, আবৃত্তি শিল্পী ও সাংবাদিক অনুপম শীল, সাংবাদিক সোলাইমান আকাশ, বিপ্লবী তারকেশ্বর দস্তিদার স্মৃতি সংরক্ষণ পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সিঞ্চন ভৌমিক, আইনজীবী আবিদুর রহমান। সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ঋতিক নয়ন, মিঠুন চৌধুরী, আমিনুল ইসলাম মুন্না, মিনহাজুল ইসলাম, সংস্কৃতিকর্মী সজল চৌধুরী, আরকে দাশ, নারী নেত্রী মিনু মিত্র, মোহাম্মদ জাফর, মো. রিয়াদ প্রমুখ।
সমাবেশে বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. মাহফুজুর রহমান বলেন, চা শ্রমিকদের বেতন মাত্র ১২০টাকা। মুক্তিযুদ্ধে চা শ্রমিকদের অনেক ত্যাগ। মুক্তিযোদ্ধাদের আশ্রয় কেন্দ্র ছিল চা শ্রমিকদের বাড়ি। তাদের জীবনমান আজো মানবেতর।
আওয়ামী লীগ নেতা মফিজুর রহমান বলেন, শ্রমিকদের উপর এ অত্যাচার বন্ধ করতে হবে। চা শ্রমিকসহ সকল শ্রমিকের ঘামের শ্রমের ন্যায্য মজুরি দিতে হবে।
নাট্যকার প্রদীপ দেওয়ানজী বলেন, বাংলাদেশে যারা চা শ্রমিকদের পক্ষে দাঁড়াচ্ছেন না, তারা মানবিক মানুষ নন। এ আঘাত শুধু চা শ্রমিকদের উপর নয়, সব পেশার মানুষের উপর আসবে।
প্রকৌশলী দেলোয়ার মজুমদার বলেন, নিরীহ-নির্যাতিত, শোষিত-বঞ্চিত চা শ্রমিকরা জীবনের প্রয়োজনে পথে নেমেছেন।
শরীফ চৌহান বলেন, দ্রব্যমূল্যের চরম উর্ধগতিতে সাধারণ মধ্যবিত্তই চলতে পারে না, চা শ্রমিকরা কিভাবে চলবে? তাদের সন্তানদের শিক্ষার ব্যবস্থা নেই। তাদের চিকিৎসা কিভাবে চলে? তাদের ন্যায্য দাবির প্রতি সমর্থন জানাই।
আবৃত্তি শিল্পী রাশেদ হাসান বলেন, নিত্যপণ্যের যে দাম তাতে এটা কোনো মজুরিই না। বেঁচে থাকার জন্য নূন্যতম যে দাবি, ৩০০ টাকা তার চেয়েও কম। অথচ এটা মেনে নিতেও যে টালবাহানা চলছে তা লজ্জাজনক। এ বৈষম্য চলতে থাকলে সমাজে রাহাজানি, লুটতরাজ, সন্ত্রাস বাড়বে। এই শ্রমিকদের পাশে দাঁড়ানো মানে সত্যের পথে দাঁড়ানো। অবশ্যই সত্যের জয় হবে।
আবৃত্তি শিল্পী ও সাংবাদিক অনুপম শীল বলেন, চা শ্রমিকদের যৌক্তিক আন্দোলনে শ্রমিকদের মধ্যে ফাটল তৈরিতে সক্ষম হয়েছে পুঁজিবাদী গোষ্ঠী।