‘রোহিঙ্গা শরণার্থীরা ইয়াবা ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ছে’

র‌্যাবের মতবিনিময় সভা

নিজস্ব প্রতিবেদক, কক্সবাজার :

র‌্যাব-১৫ এর অধিনায়ক উইং কমান্ডার মোহাম্মদ আজিম আহমেদ বলেছেন, রোহিঙ্গাদের কারণে ইয়াবা ব্যবসা মূলত বন্ধ করা যাচ্ছেনা। রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পকে কেন্দ্র করে ইদানিং ইয়াবা ব্যবসা গড়ে উঠছে। সেখানে রোহিঙ্গা শরণার্থীরা জড়িয়ে পড়ছে। পুরো দেশে ইয়াবা ব্যবসার বিস্তৃতি ঘটানোর পেছনে রোহিঙ্গাদের একটা বড় ভূমিকা রয়েছে। এছাড়াও কক্সবাজারের কিছু জনপ্রতিনিধি, রাজনীতিবিদ ও বিভিন্ন সেক্টর ইয়াবা ব্যবসায় সরাসরি সম্পৃক্ত রয়েছে। যার কারণে এর ভয়াবহতা বৃদ্ধি পেয়েছে।
রোববার সকালে কক্সবাজারস্থ র‌্যাব-১৫ এর কার্যালয়ে গণমাধ্যম কর্মীদের সাথে মতবিনিময়কালে তিনি এ তথ্য জানান।
গণমাধ্যম কর্মীদের মাদক ব্যবসা বন্ধ করতে পরামর্শ, মাদক ব্যবসা সম্পর্কে সঠিক তথ্য উপাত্ত দিয়ে সহযোগিতার আহ্বান জানিয়ে উইং কমান্ডার মোহাম্মদ আজিম আহমেদ আরো বলেন, ইয়াবা ব্যবসায় জড়িত কেউ ছাড় পাবে না। শহর থেকে গ্রাম যেখানেই ইয়াবা বা মাদক ব্যবসায়ী সেখানেই যাবে র‌্যাব। তবে প্রয়োজন সঠিক তথ্যের। দেশের স্বার্থে, ভবিষ্যত প্রজন্মকে গড়ে তুলতে মাদক নির্মূলে গণমাধ্যমসহ সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। মাদকের বিরুদ্ধে সরকারের ‘শূন্য সহিষ্ণুতা’ নীতির আলোকে গত ১৬ মাস ধরে মাদকের বিরুদ্ধে র‌্যাব-১৫ এর অভিযান সব সময় ছিল এবং আগামীতেও অব্যাহত থাকবে।
তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ইয়াবা ব্যবসা যে পরিমান কমার কথা, সে পরিমান আদৌ কমেনি। বরং পাইকারি এবং খুচরা পর্যায়ে ইয়াবা ব্যবসার বিস্তৃতি আরো বাড়ছে। এতে নতুন প্রজন্ম ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তিনি আগামী প্রজন্মের স্বার্থে সবাইকে মাদকের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ থেকে কাজ করার আহ্বান জানান।
আগামী ১৬ ডিসেম্বরের মধ্যে কক্সবাজার জেলায় মাদক ব্যবসাকে নিয়ন্ত্রণ আনার জেলা পুলিশের ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা সব সময় অপরাধ দমন ও মাদক নির্মূলে কাজ করছি, এজন্য আমরা সবার সাথে সহযোগিতা করে কাজ করতে চায়।
এ সময় সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে র‌্যাব কর্মকর্তাদের জানানো হয়, ইদানিং সীমান্ত দিয়ে মাদক পাচার কমে আসলেও নতুন আসা রোহিঙ্গাদের মায়ানমারের সমস্ত পথঘাট জানা থাকায় তারাই এখন বেশি মাদক পাচার করছে। গণমাধ্যমকর্মীরা রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে ফ্রি ওয়াইফাই ব্যবহার বন্ধ করা, মিয়ানমারের সিম ব্যবহার বন্ধ করা, মাদকের সাথে পৃষ্ঠপোষকতারী জনপ্রতিনিধি এবং রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের তালিকা প্রকাশসহ তাদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ দেন। গণমাধ্যম কর্মীরা মিয়ানমার সীমান্তে ইয়াবা কারখানাগুলো বন্ধে মিয়ানমারকে আন্তর্জাতিকভাবে চাপ দিতে কূটনৈতিক তৎপরতা চালানোর এবং তৃণমূল পর্যায়ে মাদকবিরোধী অভিযান আরো জোরদার করার দাবি জানান।
মতবিনিময় সভায় র‌্যাব-১৫’র মেজর মেহেদী হাসান, সহকারী পুলিশ সুপার বিধান চন্দ কর্মকারসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।