রোহিঙ্গারা পরিস্থিতি অশান্ত করে তুলছে

আবার খুনের ঘটনা ঘটেছে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে। গত সোমবার ভোরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সন্ত্রাসীদের গুলিতে উখিয়ার ২ ও ৭ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পৃথক ঘটনায় দুই রোহিঙ্গা নিহত হয়েছেন।
এর আগে ১৯ সেপ্টেম্বর বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে উখিয়ার ১৮ নম্বর রোহিঙ্গা শিবিরে মোহাম্মদ আইয়ুব (৩৫) নামে এক সাব মাঝিকে (কমিউনিটি নেতা) কুপিয়ে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। ১৫ সেপ্টেম্বর ভোরে উখিয়া উপজেলার পালংখালী ইউনিয়নের ৬ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ডি-২ ব্লকের ২ নম্বর পাহাড়ের সামনে খেলার মাঠে শিবিরে ‘আধিপত্য বিস্তারকে’ কেন্দ্র করে মিয়ানমারের সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) ও রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশন (আরএসও) মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় দুই আরসা সন্ত্রাসী নিহত হয়। ২ সেপ্টেম্বর বিকেলে উখিয়ার ১০ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পানি চলাচলের নালা থেকে এক রোহিঙ্গা যুবকের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
২০২২ সালের ১৪ নভেম্বর সীমান্তবর্তী বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু এলাকায় মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন আরসার সন্ত্রাসীদের ধরতে যৌথ অভিযানের সময় গোলাগুলিতে রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার স্কোয়াড্রন লিডার রিজওয়ান রুশদী নিহত হন।
এমন কোন দিন নেই শরণার্থী শিবিরে চুরি, ডাকাতি, অপহরণ, খুন, ধর্ষণ, মাদক পাচার, আধিপত্য বিস্তারসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকা– ঘটছে না। আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার কঠোর নজরদারি, অভিযান কোন কিছুই যেন তাদের দমাতে পারছে না। এখন রোহিঙ্গাদের অপরাধ প্রবণতা শুধু ক্যাম্পের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, তারা ক্যাম্পের বাইরেও নানা অপরাধ ঘটাচ্ছে।
মানবিকতা দেখাতে গিয়ে এক দীর্ঘমেয়াদী সমস্যায় নিপতিত হয়েছে বাংলাদেশ। রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক সমস্যা সৃষ্টির পাশাপাশি দেশের নিরাপত্তার জন্যও হুমকি হয়ে উঠেছে। প্রথম কয়েকবছর নানা দেশ রোহিঙ্গা ইস্যুতে কথা বললেও কভিড মহামারি এবং এরপর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বিশ্ব পরিস্থিতি পাল্টে দিয়েছে। যে কারণে রোহিঙ্গা সমস্যার ওপর মনোযোগও নেই বিশ্বনেতাদের। আর একেবারে সাম্প্রতিক হামাস-ইসরাইল যুদ্ধ কোথায় নিয়ে যাবে বিশ্বকে তা আগাম বলাও যাচ্ছে না।
তাছাড়া সামনে দেশের সাধারণ নির্বাচন। একে কেন্দ্র করে ক্যাম্পগুলো আরও অস্থির করে তোলা হতে পারে তাই এখন থেকে সাবধান না হলে আরও বড় বিপর্যয় হয়ত দেখতে হতে পারে।