রাস্তার পাশে শৌচকার্য

নান্দনিক জামালখান 

নিজস্ব প্রতিবেদক »

‘হেলদি ওয়ার্ড’ নামে অভিহিত জামালখান বর্তমানে চট্টগ্রাম শহরের সবচেয়ে নান্দনিক এলাকা। সকাল থেকে রাত অব্দি এখানে বহু মানুষ আসেন, বসেন, আড্ডা দেন। অথচ বেশ কিছু দিন ধরে সেই নান্দনিক জামালখান মোড়ের রাস্তার পাশে প্রতীকী পদ্মাসেতুর নিচে খোলা স্থানে চলছে শৌচকার্য। দীর্ঘদিন ধরে এ ধরনের কর্মকা- অব্যাহত থাকায় জামালখান মোড়ের উত্তর পাশে ছড়িয়ে পড়েছে তীব্র দুর্গন্ধ। ফলে নাজেহাল হচ্ছেন রাস্তা দিয়ে হাঁটা এবং যানবাহনের জন্য অপেক্ষারত সাধারণ মানুষ।

জামালখানের মতো বাংলাদেশের ইতিহাস-ঐতিহ্য সংশ্লিষ্ট নান্দনিক ম্যুরাল ও প্রতিকৃতি বাংলাদেশের খুব কম এলাকাতেই আছে। সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য এখানে স্থাপন করা হয়েছে পানির ফোয়ারা, মাছের অ্যাকুরিয়াম, আঁকা হয়েছে শিশুদের আকর্ষণ করা কার্টুন, রয়েছে বসে আড্ডা দেওয়ার জন্য বেশকিছু বেঞ্চি।

এছাড়া এখানে রয়েছে শেখ রাসেল স্মৃতি পাঠাগার, বাতিঘর লাইব্রেরি, ডা. খাস্তগীর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের মতো প্রতিষ্ঠান। পুরো এলাকাটিই রয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরার আওতাভুক্ত। দিনে ও রাতে প্রায় এখানে পুলিশি টহল লক্ষ করা যায়। শুধু তাই নয়, এখানে পথচারীদের জন্য শৌচাগারের ব্যবস্থাও রয়েছে। ৫ থেকে ১০টাকার বিনিময়ে এখানে শৌচাগারের সুবিধা গ্রহণ করা যায়। কিন্তু রাস্তা পার হওয়ার আলস্যে কিংবা টাকার বিনিময়ে শৌচাগারের সুবিধা গ্রহণে পথচারীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে অনীহা।

গতকাল বিকেল ৫টায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, জামালখান মোড়ের রাস্তার পাশে প্রতীকী পদ্মাসেতুর পাশে যানবাহনের জন্য অপেক্ষারত মানুষ নাকে হাত, কাপড় দিয়ে নিজেদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করছেন। দেখা যায়, প্রতীকী পদ্মাসেতুর আড়ালে শৌচকার্য সম্পন্ন করছেন এক ব্যক্তি। দীর্ঘদিন যাবত এমন ঘটনা চলমান থাকায় অনেকটা জায়গাজুড়ে মলমূত্র ছড়িয়ে পড়েছে।

চাকরির সুবাদে এই এলাকায় নিয়মিত যাতায়ত করেন সুরমা চাকমা। তিনি বলেন, ‘আগে এখানে এসব ছিলো না। আমি তিন বছর ধরে এদিকে যাতায়াত করছি। কিন্তু যখন থেকে এখানে প্রতীকী পদ্মা সেতু এবং গাছ লাগানো হয়েছে তখন থেকে এখানে একটি ফাঁকা জায়গার সৃষ্টি হয়েছে, ফলে নির্দ্বিধায় তারা এই শৌচকার্য সম্পন্ন করছেন। আগে আমগাছের ঐদিকে এসব চলতো। এখান থেকে চকবাজার, মুরাদপুর যাওয়ার বিভিন্ন গাড়ি ছেড়ে যায়। দুর্গন্ধে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করা দুঃসাধ্য হয়ে যায়। রোজ এখানে আসলে নাক চেপে শ্বাস আটকে থাকা লাগে।’

এ ব্যাপারে জামালখানের ওয়ার্ড কাউন্সিলর শৈবাল দাশ সুমন বলেন, ‘যদিও জায়গাটি চকবাজার ওয়ার্ডে পড়েছে। তারপরও পাশাপাশি হলে আমরা একে অন্যকে কাজের মাধ্যমে সহায়তা করি। এই জায়গাটিতে আগস্টের মধ্যে ফুটপাত করা হবে। পাশে ভরাট করে গাছ লাগানো হবে। আমি বর্তমানে দেশের বাইরে আছি, আগামী ১৬ জুলাই থেকে ২০ জুলাইয়ের মধ্যে জায়গাটা পরিষ্কার করা হবে। পরিষ্কার করে সেখানে ফুটপাত হলে এ ধরনের দৃশ্য আর চোখে পড়বে না।’