ম্যাথিউসের সেঞ্চুরিতে চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম দিন শ্রীলংকার

লোকাল হিরো নাঈমের দুই উইকেট

এ জেড এম হায়দার »

লংকান দলে সবার সিনিয়র ক্রিকেটার অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস। টেস্টের পাশাপাশি ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টিতেও বেশ খ্যাতি রয়েছে এ অলরাউন্ডারের। এবারের আইপিএল না খেলা এ কৃর্তিমানের হার না মানা সেঞ্চুরির কল্যাণে চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম দিনটা নিজেদের করে নিয়েছে করুনারত্নের দল। জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম দিনে শেষে তারা ৪ উইকেটে ২৫৮ রান তুলে মজবুত ইনিংস গড়ার ইঙ্গিত দিয়েছে।
এর আগে টস জিতে শ্রীলংকান অধিনায়ক করুনারত্নে ওসাদা ফার্নান্দোকে নিয়ে ইনিংসের সূচনা করতে নামেন। স্বাগতিক দলের দুই পেসার শরিফুল ইসলাম ও খালেদ না পারলেও লংকান ইনিংসে প্রথম ব্রেক থ্রু এনে দেন চট্টগ্রামের ছেলে স্পিনার নাঈম হাসান। ইনজুরিতে থাকা মিরাজের স্থানে দলে জায়গা পাওয়া ইনিংসের ৮ম ওভারে দলনেতা মোমিনুল তার হাতে বল তুলে দেন।

দীর্ঘদিন বিরতির পর দলে ফিরে অধিনায়ক করুনারত্নেকে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলেন নাঈম। এ ওভারে দুই ব্যাটারই সর্তকতার সাথে খেলে আসছিলেন। ওভারে ৫ম বলেই বল প্যাডে আঘাত করলে যোক্তিকভাবে আউটের আবেদনে সাড়া দেন আম্পায়ার। রিভিউ আবেদন করেও করুনারত্নে ব্যর্থ হয়ে ৯ রান করে ফিরে যান। তখন দলীয় খাতায় রান ছিল ২৩। এরপর তাইজুলকে বোলিংয়ে এনেও সফলতা না পেয়ে আবারো নাঈমের কাঁদে দায়িত্ব তুলে দেন অধিনায়ক। ফার্নান্দো আর কুশল মেন্ডিসকে নিয়ে ইনিংসকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পথে আঘাত এনে অধিনায়কের সিদ্ধান্তের প্রতিদান দিতে সক্ষম হন নাঈম।

২২তম ওভারের দ্বিতীয় বল অফ স্টাম্পের বাইরের ডেলিভারি পা বাড়িয়ে মোকাবেলা করতে গিয়ে ব্যাটের কোনায় লেগে লিটনের হাতে জমা হলে ৩৬ রান করা ফার্নান্দো সাজঘরে ফিরে যান। এ সময় দলের রান ছিল ৬৬। পরবর্তীতে সাকিব ও তাইজুলরা রানকে নিয়ন্ত্রনে রাখতে সচেষ্ট হন। এবার বাঁ হাতি অপর স্পিনার তাইজুলের সফলতা আসে। উইকেটে সেট হওয়া হাফ সেঞ্চুরিয়ান কুশল মেন্ডিসকে (৫৪ রান) ফিরিতে তৃতীয় উইকেটের পতন করেন। তাইজুলের শর্ট বলকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে মিড উইকেটে লোকাল হিরো নাঈমের হাতে বন্দী হন মেন্ডিস। এ জুটি’র সংগ্রহ ছিল মূল্যবান ৯২ রান। আগের দিন শুধুমাত্র ব্যাটিং নিয়ে ব্যস্ত থাকা বোলিং অনুশীলন করা হয়নি সাকিবের। তাই ধারণা ছিল এ অভিজ্ঞ বোলারকে দিয়ে আক্রমণ করা হবে কিনা। কিন্তু চা-বিরতির পর অধিনায়ক তার হাতে বল তুলে দিলে হতাশ করেন নি। তার এক গুড লেন্থের বলে নির্ভরযোগ্য ব্যাটার ধনাঞ্জয়া ডি সিলভার (৬) ব্যাট থেকে স্লিপে ক্যাচ উঠলে শুয়ে বল তালুবন্দী করতে ভুল করেন নি মাহমুদুল হাসান জয়। আম্পায়ার না দিলেও রিভিউ নিয়ে এ আউটের সিদ্ধান্ত পাওয়া গেছে। তখন স্কোর বোর্ডে রান উঠে ৬৫.২ ওভারে ৪ উইকেটে ১৮৩। বাকি সময়টা চান্দিমালকে নিয়ে বেশ স্বাছন্দে কাটিয়ে নিজের ১২তম টেস্ট ও বাংলাদেশের বিরুদ্ধে প্রথম সেঞ্চুরি করার পাশাপাশি দলীয় স্কোরকে ভালো অবস্থানে নিয়ে অক্ষত থেকে ৭৫ রানের জুটি করে প্রথম দিন শেষ করেন ম্যাথিউস। তৃতীয় উইকেট জুটিতে মেন্ডিসকে নিয়ে ৯২ রানের পার্টনারশিপ করেন। ১১ বাউন্ডারি ও ১ ছক্কায় সাজানো ১১৪ রানের ইনিংস নিয়ে আজ দ্বিতীয় দিন শুরু করবেন ম্যাথিউস। ৩৪ রানে অপরাজিত আছেন তার সঙ্গী চান্দিমাল।
বাংলাদেশের নাঈম হাসান ৭১ রানে ২, সাকিব ২৭ ও ৭৩ রানে ১টি করে উইকেট শিকার করেন। আর শরিফুল ৩৮ ও খালেদ ৪৫ রান দিয়ে কোন উইকেটের দেখা পান নি। এর আগে সকালে অষ্টেলিয়ান ক্রিকেটার এন্ডু সাইমন্ডের মৃত্যুতে এক মিনিট নিরবতা পালনের পাশাপাশি কালোব্যাজ ধারণ করেন মোমিনুলরা।