‘মেসি থাকতে চেয়েছিল, সে খুশি নয়’

সুপ্রভাত ক্রীড়া ডেস্ক »

এক বছর আগে নিজেই বলেছিলেন, চলে যাচ্ছি। কিন্তু পরিস্থিতির কারণে পারেননি। এর মধ্যে ক্লাবে আসে অনেক পরিবর্তন। ততদিনে মনও বদলায় লিওনেল মেসির। তাই নতুন ঠিকানা না খুঁজে বার্সেলোনাতেই থেকে যেতে চেয়েছিলেন ক্লাবটির ইতিহাসের সেরা খেলোয়াড়। শেষ পর্যন্ত সেটি না হওয়ায় ক্লাব প্রধান হুয়ান লাপোর্তা জানালেন, খুশি নন মেসি।
বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় রাত ৮টার কিছু আগে বার্সেলোনার ওয়েবসাইটে দেওয়া বিবৃতিতে জানানো হয়, বার্সেলোনায় থাকছেন না মেসি। পরদিন শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানান লাপোর্তা।
“লিও থাকতে চেয়েছিল এবং (তা সম্ভব না হওয়ায়) সে খুশি নয়। আমাদের সবার চাওয়া ছিল, সে থাকবে। কিন্তু এখন আমাদের মতো সেও বাস্তবতার সম্মুখীন। আমি তাকে ও তার পরিবারকে শুভকামনা জানাই। বার্সা তার বাড়ি।”
বার্সেলোনার হয়ে চারটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ও ১০টি লা লিগাসহ রেকর্ড ৩৫টি শিরোপা জয়ী মেসিকে আগামী মৌসুমে দেখা যাবে নতুন জার্সিতে, নতুন দলে। কোথায় যাবেন মেসি?
গণমাধ্যমে জোর গুঞ্জন, দলটি হতে পারে পিএসজি। এরই মধ্যে নাকি তারা সরাসরি মেসির সঙ্গে যোগোযোগও শুরু করেছে। এ বিষয়ে লাপোর্তা অবশ্য কিছু বলতে চাইলেন না। ঘুরে ফিরে তার কথায় শুধু হতাশায় ফুটে উঠল।
“আমি খুব করে চেয়েছিলাম, মেসি বার্সেলোনাতেই থাকবে। এখন কী হবে, সেটা আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ নয়। (তার প্রতি পিএসজির আগ্রহের) বিষয়ে আমি নিশ্চিত কিছু জানি না। তবে সবসময়ই তো বলা হচ্ছিল, অনেক দল তাকে পেতে চায়।”
বার্সেলোনায় আর্জেন্টাইন তারকার দীর্ঘ পথচলা শেষ হয়েছে। কঠিন সত্যটা উপলব্ধি করতে পারছেন লাপোর্তা। তার মতে, সময় হয়েছে ক্লাবের ইতিহাসের সেরা খেলোয়াড়কে শ্রদ্ধা জানানোর।
ক্লাবকে যিনি এত এত সাফল্য এনে দিয়েছেন, যে জার্সি পরে লিখেছেন কত না সাফল্যমোড়া গল্প, তাকে কীভাবে শ্রদ্ধা জানানো যায়? প্রশ্নটা যেন নিজেকেই করলেন লাপোর্তা। বললেন, সে যেভাবে চায়।
“লিও এখানে চমৎকার এক লেগ্যাসি রেখে গেল। ক্লাবের ইতিহাসে সে সবচেয়ে সফল খেলোয়াড়, ক্লাবের ইতিহাসে সে অসাধারণ একটি চিহ্ন রেখে গেল। এখন পর্যন্ত সেরা।”
“মেসি যেভাবে চায় সেভাবেই তাকে ট্রিবিউট দেওয়া হবে। তাকে আমরা প্রতিটা দিন শ্রদ্ধা জানাব, তার প্রতিটা কাজের জন্য। এখন যে অবস্থায় আছি, তা আমরা বুঝতে পারছি এবং সেটাই বিষয়টিকে আরও জটিল করে তুলেছে। বার্সায় মেসির যে সম্মান প্রাপ্য, তাই দেওয়া হবে বলে আশা করছি।”
মাত্র ১৩ বছর বয়সে বার্সেলোনায় পা রাখা মেসির ২০০৪ সালে মূল দলে অভিষেক হয়। এরপর থেকে ক্রমেই তিনি হয়ে ওঠেন দলের মধ্যমণি, সাফল্যের নায়ক। সময়ের পরিক্রমায় মেসি হয়ে উঠেছিলেন ক্লাবের সবচেয়ে বড় বিজ্ঞাপন। মেসিবিহীন বার্সেলোনাকে কল্পনাই করা যেত না।
উল্টো ভাবনার শুরু হয়েছিল গত বছর অগাস্টে। বলা যায়, একরকম অভিমান করেই চলে যেতে চেয়েছিলেন তিনি। পরবর্তীতে চুক্তির মারপ্যাচে পড়ে রয়ে যান ইচ্ছের বিরুদ্ধে। আর এবার ঠিক উল্টো অবস্থা, থাকতে চেয়েও পারলেন না।
চুক্তির মেয়াদ শেষে গত ১ জুলাই ফ্রি এজেন্ট হয়ে যান মেসি। তবে নতুন চুক্তিতে পুরনো ঠিকানায় ফিরতে রাজি ছিলেন রেকর্ড ছয়বারের বর্ষসেরা ফুটবলার। দুই পক্ষ সমঝোতায় পৌঁছানোয় চুক্তিপত্র লেখাও হয়ে গিয়েছিল, বাকি ছিল শুধু মেসির স্বাক্ষরের। কিন্তু লা লিগার ফিন্যান্সিয়াল ফেয়ার প্লের (এফএফপি) মারপ্যাচে তা আর সম্ভব হয়নি।