মিলছে না ফেরির ইজারাদার বিলম্বিত হচ্ছে সেতু সংস্কার

পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী ১ জুন থেকে শুরু করা যায়নি চট্টগ্রামের কালুরঘাট রেল কাম সড়ক সেতুর সংস্কার কাজ। অথচ পরিকল্পনায় আছে ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে পুরনো কালুরঘাট সেতু মেরামত কাজ শেষ করে কক্সবাজার রুটে ট্রেন চলাচল উদ্বোধনের। রেলপথ মন্ত্রণালয়ের পরিকল্পনা থাকলেও এখনো পর্যন্ত ফেরি সার্ভিস চালু করা যায়নি। কালুরঘাটে কর্ণফুলী নদীতে ফেরি চালু করা না গেলে বিদ্যমান কালুরঘাট সেতুর সংস্কার কাজ শুরু করা যাচ্ছে না। কারণ কালুরঘাট সেতু মেরামতের কাজ শুরু হলে সেতু দিয়ে সকল ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যাবে। তখন বেশির ভাগ গাড়ি নিচে ফেরি দিয়ে পারাপার হবে।
ফেরি থেকে টোল আদায়ের জন্য সড়ক ও জনপথ বিভাগ পরপর দুই দফা টেন্ডার আহ্বান করার পরও টেন্ডারে কেউ অংশ নেয়নি। এখন তৃতীয় দফা টেন্ডার আহ্বান করা হচ্ছে। জুনে কালুরঘাট সেতু দিয়ে বিদ্যমান রেললাইন মেরামতের কাজ শুরু হলে মেরামত করে কক্সবাজার রুটে ট্রেন চালাতে সময় লাগবে তিন মাস। ৬ থেকে ৭ মাসের জন্য ফেরির টোল আদায়ের টেন্ডারে কোনো প্রতিষ্ঠান আগ্রহ দেখাচ্ছে না।
জানা গেছে, এরপরও যদি কোন প্রতিষ্ঠান অংশ না নেয় তাহলে সড়ক ও জনপথ বিভাগ নিজস্ব উদ্যোগে টোল আদায় করবে।
১২ টন ওজন বহনে সক্ষম রেল সেতুটি ১৯৩১ সালে চালু করা হয়েছিল। ১৯৬২ সালে রেলের পাশাপাশি সড়কও চালু করা হয়। সড়ক চালুর পর থেকে একপাশ বন্ধ রেখে অন্যপাশের যানবাহন পারাপার করা হয়। ৯০ বছরের পুরনো সেতুটি বর্তমানে ১০ টন বহনে সক্ষম। ব্রিজের স্প্যানগুলো পুরাতন হয়ে গেছে। পরামর্শক সংস্থা বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) বিশেষজ্ঞ দল ব্রিজটির স্প্যান, পাটাতনসহ সব অংশের চিত্র তুলে ধরে সমীক্ষা প্রতিবেদন দিয়েছে।
এতে দেখা গেছে, ব্রিজটির মূল ১৯টি স্পেনের মধ্যে ৮টির অবস্থা খুবই খারাপ। এগুলো অনেকটা ক্ষয়ে গেছে। এমন পরিস্থিতিতে যানবাহন চলাচল অব্যাহত রাখতে সেতুটির দ্রুত সংস্কার প্রয়োজন।
চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার ৩ লক্ষাধিক মানুষের চট্টগ্রাম শহরে যাতায়াতের পথ এই কালুরঘাট সেতু। সেতু বন্ধ হলে চরম দুর্ভোগে পড়তে হবে উপজেলার মানুষকে। তাই সেতু সংস্কারের সময় বিকল্প হিসেবে কর্ণফুলী নদীতে দুটি ফেরি চালু করবে সড়ক ও জনপদ বিভাগ (সওজ)।
ফেরি চালুর উদ্যোগ নেয়া হলেও মিলছে না টোল আদায়ের ইজারাদার। তাতে সেতুর সংস্কার কাজ শুরু বিলম্বিত হচ্ছে। এর ফলে আগামী ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে কক্সবাজারমুখি রেল চলাচল শুরু নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। কারণ রেল লাইন নির্মাণ কাজ শেষ হলেও কালুরঘাট সেতুকে চলাচলের জন্য উপযুক্ত হিসাবে গড়ে না তুলতে পারলে বিলম্বিত হবে স্বপ্নের রেলযাত্রা।