মিতু হত্যা মামলা : ভোলার গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি

নিজস্ব প্রতিবেদক »
সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলার আসামি এহতেশামুল হক ভোলার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।
গতকাল বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ শেখ আশফাকুর রহমানের আদালতে আসামি পক্ষ থেকে জামিন আবেদন করা হলে তা নামঞ্জুর করে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়।
এর তিনদিন আগে গত ১১ অক্টোবর উচ্চ আদালত থেকে চার সপ্তাহের আগাম জামিন শেষে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেছিলেন ভোলা। মূল নথি না থাকায় আদালত মামলার মূল নথি তলব করে গতকাল (বৃহস্পতিবার) জামিন শুনানির দিন ধার্য করেন। ওই আবেদনের শুনানি হয়েছে গতকাল। শুনানিতে ভোলা হাজির না থাকায় তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়।
মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট ফখরুদ্দিন চৌধুরী বলেন, এসপি বাবুল আক্তারের সহধর্মিণী মিতু হত্যা মামলার আসামি এহতেশামুল হক ভোলা হাইকোর্ট থেকে চার সপ্তাহ আগাম জামিন শেষে গত সোমবার আত্মসমর্পণ করেন। তবে মূল নথি না থাকায় আদালত বৃহস্পতিবার শুনানির দিন ধার্য করেন। ওইদিনই মূল নথি তলব করেছে আদালত। আজ (বৃহস্পতিবার) মূল নথি আসলেও শুনানিতে হাজির হননি ভোলা।
এদিকে আসামি অসুস্থতার গ্রাউন্ডে জামিনের মেয়াদ বৃদ্ধির আবেদন করলেও রাষ্ট্রপক্ষ তার বিরোধিতা করে। যার ফলে জামিন আবেদন খারিজ করে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়। তবে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই ইন্সপেক্টর সন্তোষ কুমার চাকমা উপস্থিত ছিলেন বলে জানান তিনি।’
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ৫ জুন ভোরে নগরীর পাঁচলাইশ থানাধীন ও আর নিজাম রোডে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে বাসার অদূরে গুলি ও ছুরিকাঘাতে খুন করা হয় সাবেক এসপি বাবুল আক্তারের সহধর্মিণী মাহমুদা খানম মিতুকে। স্ত্রী খুনের ঘটনায় স্বামী বাবুল পাঁচলাইশ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। গোয়েন্দা কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদসহ নানা নাটকীয়তার পর একই বছরে বাবুল আক্তারকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
মিতু হত্যাকা-ের পরের বছর অর্থাৎ ২০১৭ সালে খুনের ঘটনায় বাবুলের জড়িত থাকার সন্দেহ প্রকাশ করেন বাবা মোশাররফ হোসেন। প্রায় সাড়ে ৪ বছর পর ২০২০ সালের জানুয়ারিতে আদালতের নির্দেশে বাবুল আক্তারের দায়ের করা মামলার তদন্তভার পড়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) ওপর। তারপরেই খুলতে থাকে চাঞ্চল্যকর এই মামলার জট।
গত ১১ মে বাবুল আক্তারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য চট্টগ্রাম পিবিআই কার্যালয়ে ডেকে নেওয়া হয়। এর পরদিন ১২ মে ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদার বলেন, মিতু হত্যার সঙ্গে তার স্বামী বাবুল আক্তারের সম্পৃক্ততার প্রমাণ পেয়েছেন তারা। ঢাকায় ওই সংবাদ সম্মেলনের পরপরই চট্টগ্রামে বাবুলের করা মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয় পিবিআই। ৫৭৫ পৃষ্ঠার চূড়ান্ত প্রতিবেদন চট্টগ্রাম আদালতের প্রসিকিউশন শাখায় সেদিন জমা দিয়েছিলেন পিবিআইর পরিদর্শক মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) সন্তোষ কুমার চাকমা। এরপর ওইদিনই পাঁচলাইশ থানায় মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় বাবুলকে প্রধান আসামিসহ মোট নয়জনকে আসামি করা হয়। বাবুল সেই মামলায় বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন।