ছেলেসহ বাবা-মাকে গলা কেটে হত্যা

নিজস্ব প্রতিনিধি, মিরসরাই »
মিরসরাইয়ে মা, বাবা ও ছেলেকে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। বুধবার দিবাগত রাতে উপজেলার জোরারগঞ্জ ইউনিয়নের মধ্যম সোনাপাহাড় গ্রামের নতুন পাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন মধ্যম সোনাপাহাড় গ্রামের মৃত জহির আহম্মদের পুত্র মো. মোস্তফা (৫৫), মোস্তফার স্ত্রী জোসনা আরা (৪৫) ও তার ছোট ছেলে আহম্মদ হোসেন (২৫)।
এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহত মোস্তফার বড় ছেলে ছাদেককে আটক করেছে জোরারগঞ্জ থানা পুলিশ।
ঘটনার পর খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান মিরসরাই সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার লাবীব আব্দুল্লাহ, পিবিআই এর চট্টগ্রাম জেলার পুলিশ পরিদর্শক মনির আহম্মদ, সিআইডির পরিদর্শক মিজান মোহাম্মদ ফেরদৌস, জোরারগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নূর হোসেন মামুন, তদন্ত কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিন ফারুকী।
লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
নিহত মোস্তফার মেঝ ছেলে আলতাফ হোসেন বলেন, বুধবার রাতে আমার বাবা, মা, ছোট ভাই, বড় ভাই, ভাবী ও ভাতিজা এক সাথে ঘুমিয়েছিল। বৃহস্পতিবার ভোরে আমার কাছে খবর আসে আমার বাবা, মা ও ছোট ভাই খুন হয়েছে। আমার ধারণা বড় ভাই ছাদেক ও ভাবী গুলনেহার ওদের খুন করেছে। আমার ভাতিজা পুলিশকে খুনের কথা বলেছেন।
স্থানীয়রা জানান, বৃহস্পতিবার ভোরে ঘরের ছাদের উপর উঠে মোস্তফার বড় ছেলে ঘরে ডাকাত ঢুকেছে বলে চিৎকার করতে থাকে। কিন্তু স্থানীয়রা অনেক কষ্টে বাড়ির গেইট খুলে ভেতরে ঢুকে কোন ডাকাত দেখতে পায়নি। পরে ঘরে প্রবেশ করে মোস্তফা, তার স্ত্রী ও ছোট ছেলের রক্তাক্ত লাশ মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখে। এছাড়া বড় ছেলে ছাদেকের গায়ে রক্ত লেগে ছিল। পরে পুলিশ ছাদেককে আটক করে নিয়ে যায়। শুক্রবার নিহত মোস্তফার ছোট ছেলে আহমদের বিয়ের ফর্দ হওয়ার কথা ছিল বলে জানান স্থানীয়রা।
আরো জানা গেছে, বৃহস্পতিবার ভোর ৫টায় ৯৯৯ থেকে ফোন পেয়ে সকালে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে জোরারগঞ্জ থানা পুলিশ। ঘটনাস্থলে এসে ঘরের মেঝে মোস্তফা, তার স্ত্রী ও ছোট ছেলের লাশ দেখতে পায়। পরে একে একে ঘটনাস্থলে আসে মিরসরাই সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার লাবীব আব্দুল্লাহ, পিবিআই চট্টগ্রাম জেলার পুলিশ পরিদর্শক মনির হোসেন, সিআইডির পরিদর্শক মিজান মোহাম্মদ ফেরদৌস।
সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, মোস্তফা সওদাগরের পাকা বাড়ির আশপাশে উৎসুক মানুষের ভিড়। নিহতের গলা কাটা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্রের কোপের দাগ রয়েছে। ঘরে কোন জিনিস খোয়া যায়নি।
জোরারগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মনির আহম্মদ ভাসানী জানান, স্থানীয়দের কাছে শুনে তিনি দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে যান। ধারণা করা হচ্ছে পারিবারিক বিরোধের জেরে এই হত্যাকা-ের ঘটনা ঘটতে পারে।
এ বিষয়ে পিবিআই চট্টগ্রাম জেলার পুলিশ পরিদর্শক মনির হোসেন জানান, মধ্যম সোনাপাহাড়ে থ্রিপল মার্ডারের ঘটনায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে আলামত। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
মিরসরাই সাকের্লের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার লাবীব আব্দুল্লাহ জানান, এটি কোন ডাকাতির ঘটনা নয়। এটি পরিকল্পিত খুন। ইতোমধ্যে ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে মোস্তফার বড় ছেলের ছাদেককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কিছুই বলা যাচ্ছে না।