মানুষ বিএনপিকে কেন ভোট দেবে

প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্ন

সুপ্রভাত ডেস্ক »
জনগণ ভোট দিতে পারছে না বলে যারা অভিযোগ করছেন, তাদেরকে কে ভোট দেবে, সেই প্রশ্ন রেখেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
গতকাল সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছেন, বিএনপি জানে যে তাদের আর কোনো ‘সম্ভাবনা নেই’, সে কারণেই তারা নির্বাচনকে ‘বিতর্কিত করার চেষ্টা’ করছে।
“একটা দল কীভাবে জিতবে? তার নেতৃত্ব কোথায়? একজন এতিমের অর্থ আত্মসাৎ করে সাজাপ্রাপ্ত আসামি। আরেকজন একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা, দশ ট্রাক অস্ত্র মামলাসহ নানা ধরনের কর্মকাণ্ডের ফলে দেশান্তরি, সাজাপ্রাপ্ত আসামি। তাদেরকে নেতৃত্ব দিয়েছে।
“তাহলে জনগণ কোন ভরসায় ওই দলকে ভোট দেবে আমাকে সেটা বলেন।”
শেখ হাসিনা বলেন, “জনগণ কখন ভোট দেয়। তারা তো দেখে ক্ষমতায় যাবে কে। যদি এখন এটাই হয় যে একজন এতিমের অর্থ আত্মসাৎকারী, আরেকজন সাজাপ্রাপ্ত আসামি, তারা তো ইলেকশনও করতে পারবে না।”
জাতিসংঘ অধিবেশন উপলক্ষে যুক্তরাষ্ট্র সফরের অভিজ্ঞতা জানাতে গণভবন থেকে এই ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে হাজির হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার আগে তিনি যে দলীয় এক সভায় আওয়ামী লীগকে আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে বলেছিলেন, সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে একজন সাংবাদিক বলেন, দেশে এখন নির্বাচন নিয়ে নানা ধরনের আলোচনা হচ্ছে। এ বিষয়ে সরকারপ্রধানের ভাবনা কী। উত্তরে শেখ হাসিনা বলেন, গত কিছুদিনে যেসব নির্বাচন হয়েছে, সেখানে কোনো সমস্যা কোথাও হয়নি। আর মহামারীর মধ্যেও ভোটাররা ‘খুব স্বতস্ফূর্তভাবে’ অংশগ্রহণ করেছেন।
“তবে হ্যাঁ, বাংলাদেশে নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুলছে। আপনারা একটা বিষয় কি চিন্তা করে দেখেছেন? অনেক চেষ্টা হয়েছে নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে। শুধু তাই না, নির্বাচন যাতে ঠিকমত না হয়, বা মানুষ যাতে না যায়, অগ্নিসন্ত্রাস থেকে শুরু করে হেন কাজ নেই যে না করা হয়েছে।
“তারপরও ইলেকশন হয়েছে এবং ইলেকশন হওয়ার পর একটা স্থিতিশীল পরিবেশ ছিল বলে কিন্তু আজকে যত উন্নয়ন দেখাতে পাচ্ছেন বা যা করতে পারছি সেটা কিন্তু করা সম্ভব হয়েছে। এখন যেসব রাজনৈতিক দল, বিশেষ করে বিএনপিসহ যারা কথা বলে, আসলে তারা নির্বাচন নিয়ে যে প্রশ্ন তোলে, এই দলের জন্মটা কীভাবে।”
ভোটাধিকার নিয়ে যারা অভিযোগ করছেন, তাদেরকে মানুষ ভোট কেন দেবে- সেই প্রশ্ন সাংবাদিকদের করতে বলেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, “আপনার কে আছে এর বাইরে আর? কাকে দেবে? কার কাছ থেকে মানুষ এ পর্যন্ত কী পেয়েছে? পঁচাত্তর সালে জাতির পিতাকে হত্যা করা হয়েছে। ৭৫ থেকে ৯৬, আর ২০০১ থেকে ২০০৮ পর্যন্তই ধরেন। মানুষ কী পেয়েছে, সেই তুলনাটাই আপনারা করেন।”
আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর বিদ্যুৎ সুবিধা, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়া, মোবাইল সেবা, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার মত যেসব সাফল্য পেয়েছে, সেসব কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, “এত সুবিধা পেয়ে গালিটা আমার ওপর দিয়ে যাচ্ছে বা আওয়ামী লীগের ওপর দিয়ে যাচ্ছে -এই তো?… মানে আমরা পারলাম কেন, করলাম কেন এই তো?
“ওদেরকে ভোট দেবে কে, সেইটা আগে জিজ্ঞাসা করেন। আমি সব সাংবাদিকদের জিজ্ঞেস করি যে আপনারা নিজেদের কাছে, বিবেকের কাছে জিজ্ঞেস করেন। কারা, কেন, কী কারণে, কোন সুখের স্বপ্নে বা কোন আশার আলো দেখে বিএনপিকে বা অন্যদেরকে ভোট দেবে? সেটা আমাকে একটু বলেন। শুনি একটু, জেনে রাখি।”