মাতারবাড়ি বন্দর হলে পণ্যের দাম কমবে 

বাংলাদেশ শিপিং এজেস্টস অ্যাসোসিয়েশনের (বিএসএএ) সভাপতি সৈয়দ মোহাম্মদ আরিফ

সুপ্রভাত বাংলাদেশ : চChittট্টগ্রাম বন্দরের গতিশীলতা নিয়ে আপনার অভিমত কী?

সৈয়দ মোহাম্মদ আরিফ: বর্তমানে বন্দর এগিয়েছে, যা গত দশ বছরের সাথে তুলনা করলে স্পষ্ট হয়ে যাবে। আগে বন্দর কার্যক্রম পরিচালনায় অনেক সময় লাগতো। এখন আর এতো সময় লাগে না। এর অন্যতম কারণ হলো কনটেইনার হ্যান্ডেলিংয়ে বন্দর কর্তৃপক্ষ বেশ জোর দিয়েছে। তবে বন্দর নিয়ে আমাদের যে অভিযোগ তা বন্দর কর্তৃপক্ষকে নিয়ে নয়, অভিযোগ হলো কাস্টমসের বিরুদ্ধে।

সুপ্রভাত: কাস্টমসের বিরুদ্ধে অভিযোগ কী?

সৈয়দ মোহাম্মদ আরিফ: পৃথিবীর কোনো বন্দরে কনটেইনার খুলে পরীক্ষার সুযোগ নেই। কিন্তু আমাদের বন্দরে কাস্টমস এ সুযোগটি পায়। কাস্টমস এ পরীক্ষাটি যদি অফডকে করতো তাহলে বন্দর আরও গতিশীল হতো। এখানে বন্দরের গতিশীলতা বাড়াতে কাস্টমসের কাজের ধরনে পরিবর্তন আনা দরকার। এটি নিয়ে আমরা অনেকবার এনবিআরকে (জাতীয় রাজস্ব বোর্ড) বলেছি।

সুপ্রভাত: কিছু টার্মিনাল পরিচালনায় বিদেশি অপারেটর নিয়োগ করার কথা ভাবছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। বিষয়টি আপনি কীভাবে দেখছেন?

সৈয়দ মোহাম্মদ আরিফ: বন্দরকে আন্তর্জাতিক নিয়ম-নীতি অনুসরণ করতে হয়। এতে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ঠিক থাকে। এছাড়া এখানে কাজের গতিশীলতা আরও বাড়বে। কারণ ওরা এখানে ব্যবসা করতে আসবে। এক মুহূর্তও সময় নষ্ট করবে না। এতে আমদানিকারক ও রপ্তানিকারকরা দ্রুততার সঙ্গে কাজ শেষ করতে পারবে। তাদের ব্যয় কমবে। যার প্রভাব সাথে সাথে বাজারে পড়বে। এ কাজে সরকার ও চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের অবদান স্বীকার করতেই হবে। বর্তমানে যেভাবে কাজ হচ্ছে তাতে বলা যায়, একসময় চট্টগ্রাম বন্দর আন্তর্জাতিক হাবে পরিণত হবে। তখন আপনা-আপনি অনেক ডেভেলপমেন্ট হবে।

সুপ্রভাত: চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের উল্লেখযোগ্য একটি প্রকল্প মাতারবাড়ি গভীরসমুদ্র বন্দর নির্মাণ। এ প্রকল্প নিয়ে আপনার ভাবনা কী?

সৈয়দ মোহাম্মদ আরিফ: মাতারবাড়ি হবে গভীর সমুদ্রবন্দর। আমাদের এই অঞ্চলে গভীর সমুদ্রবন্দর আছে সিঙ্গাপুরে। যে কারণে মাদারভ্যাসেলগুলো ওখানেই ভিড়ে। ওখান থেকে ফিডার জাহাজে করে এখানে আনতে হয়। এতে অনেক খরচ হয়। এ খরচতো ইম্পোর্টাররা পকেট থেকে দিবে না। তাই চাপটা পড়ে ভোক্তাদের ওপর। মাতারবাড়ি বন্দর হলে ইর্ম্পোটারদের খরচ কমে যাবে, জিনিসপত্রের দামও কমে যাবে। মাতারবাড়ি হয়ে যাবে একটি আর্ন্তজাতিক হাব। তবে এটির রোড ট্রান্সপোটেশনে এখনও তেমন কোনো উল্লেখযোগ্য কাজ হয়নি। আশা করছি, মাতারবাড়ি প্রকল্পের কাজ শুরুর পরই রোড ডেভেলপমেন্টে কাজ করবে।

সুপ্রভাত: বে-টার্মিনাল প্রকল্পটি নিয়ে বেশ আলোচনা হলেও সেটি বাস্তবায়নে তেমন অগ্রগতি নেই। এ বিষয়ে আপনার মন্তব্য কী?

সৈয়দ মোহাম্মদ আরিফ: বে-টার্মিনাল প্রকল্পটি অনেক আগে হওয়ার কথা। একসময় ২০২৪ সালে প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথাও বলা হয়েছিলো। কিন্তু যেকোনো কারণে তা হয়নি। তবে এখন সরকার এ প্রকল্পটি নিয়ে বেশ তোড়জোড় করছে। আশা করছি, প্রকল্পটি খুব অল্প সময়ের মধ্যে শুরু হয়ে দ্রুত গতিতে শেষ হবে। এটি চালু হলে ১২ মিটার ড্রাফটের জাহাজ ওখানে ২৪ ঘণ্টা ভিড়তে পারবে। পাশাপাশি ওখানে রোড কানেক্টিভিটি থাকায় স্ট্রাকচারাল অনেক খরচও কমে যাবে।