মহেশখালী এসপিএম স্থাপনের ফলে বার্ষিক ৮শ’ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে

সুপ্রভাত ডেস্ক »

মহেশখালী দ্বীপে আমদানিকৃত জ্বালানি সরবরাহের জন্য ডবল পাইপলাইন সুবিধা সম্বলিত সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং (এসপিএম) স্থাপনের ফলে বছরে সরকারের কমপক্ষে ৮শ’ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী আজ বাসসকে বলেন, ‘বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন (বিপিসি) মাদার ভেসেল থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে জ্বালানি দ্রুত বহন করার জন্য এসপিএম প্রকল্প শুরু করেছে। এর ফলে বার্ষিক ৮শ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে।’

তিনি আশা প্রকাশ করেন যে এসপিএম নির্মাণকাজ আগামী বছর শেষ হবে। ‘প্রকল্পটি বাস্তবায়ন  হলে এটি তেল চুরি এবং সারা দেশে জ্বালানি তেল সরবরাহের সময় হ্রাস করবে।’
নসরুল হামিদ আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার গভীর সমুদ্র থেকে আমদানি করা অপরিশোধিত তেল আরো দক্ষ ও সময় সাশ্রয়ী উপায়ে আনলোড করার জন্য এসপিএম স্থাপনের নির্দেশ দেয়। এসপিএম দেশে জ্বালানি নিরাপত্তাও নিশ্চিত করবে।

প্রকল্পের বিবরণ অনুসারে, এসপিএম ইনস্টলেশনের সামগ্রিক অগ্রগতি ৬৩.১৩ শতাংশ এবং আর্থিক অগ্রগতি ৫৩.৫৪ শতাংশে পৌঁছেছে।

এসপিএম মহেশখালী দ্বীপের পশ্চিম পাশে অবস্থিত। এখানে ২৭ মিটার গভীরতা পাওয়া যায়, যা ১২০ হাজার ডিডব্লিউটি আকারের বড় ট্যাঙ্কার ডকিংয়ের জন্য যথেষ্ট।

জ্বালানি বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আনিসুর রহমান বলেন, লোড দুটি পৃথক (অফশোর ও অনশোর) ৩৬ ব্যাসের পাইপলাইনের মাধ্যমে করা হবে এসপিএম থেকে অপরিশোধিত তেল ও এইচএসডি আনলোড এবং মহেশখালীতে স্টোরেজ ট্যাঙ্কে সংরক্ষণ করা হবে।

তিনি বলেন, ‘এসপিএম-এর মাধ্যমে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সহজেই আমদানি করা অপরিশোধিত তেল ও ফিনিশড পণ্য আনলোড করা যাবে, যা এখন ১০ হাজার ডিডব্লিউটি (ডেডওয়েট) ট্যাঙ্কারগুলো আনলোড করতে ১১ দিন সময় নিচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘অপরিশোধিত তেল ও এইএসডির দুটি পৃথক লাইন উল্লেখযোগ্য হারে একক পাইপলাইনের মাধ্যমে পরিবহন করা হলে দূষণের কারণে যে পণ্য অপচয় হয় তা দূর করবে এবং সমগ্র পরিবহন শৃঙ্খলে প্রতিটি পণ্যের পরিকল্পিত পরিমাণের দক্ষ ও অব্যাহত পরিবহন নিশ্চিত হবে।’

আনিসুর রহমান বলেন, মহেশখালীতে স্টোরেজ ট্যাঙ্কে সংরক্ষিত অপরিশোধিত তেল ও এইচএসডি দুটি পৃথক (অফশো ও অনশোর) ১৮ ইঞ্চি ব্যাসের পাইপলাইনের মাধ্যমে ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেড (ইআরএল)-এ পাম্প করা হবে।

তিনি বলেন, ‘আমরা চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি সরবরাহে প্রকল্প গ্রহণের উদ্যোগ নিয়েছি, যা পরিবহন খরচ, চুরি ও অপচয় হ্রাস করবে।’

এসপিএম ডবল পাইপলাইনের প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী মো. শরীফ হাসনাত বলেন, চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানি চায়না পেট্রোয়াম পাইপলাইন ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেড( সিপিপিইসি) ইঞ্জিনিয়ারিং প্রকিউরমেন্ট অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন (ইপিসি) ঠিকাদার হিসেবে কাজ করছে। আর জার্মানি-ভিত্তিক আইএলএফ কনসাল্টিং ইঞ্জিনিয়ারস পরামর্শক হিসেবে নিযুক্ত রয়েছে।

তিনি বলেন, ‘এসপিএম প্রকল্পের আনুমানিক ব্যয় প্রায় ৬৫৬৮.২৭ কোটি টাকা, যা চীনা এক্সিম ব্যাংক অর্থায়ন করছে। এ প্রকল্পের অধীনে, মহেশখালীতে এসপিএম এবং ২২০ কিলোমিটার ডাবল পাইপলাইন, স্টোরেজ ট্যাঙ্ক ও পাম্প স্টেশন স্থাপন করা হবে। এছাড়া, একটি অগ্নিনির্বাপক স্টেশন সুপারভাইজরি কন্ট্রোল অ্যান্ড ডেটা অ্যাকুইজিশন (এসসিএডিএ) স্থাপন করা হবে এবং সংশ্লিষ্ট কাজ সম্পন্ন করা হবে।’

হাসনাত বলেন,  প্রকল্পের  প্রধান উদ্দেশ্য হলো মহেশখালীতে ছয়টি ডিজেল ও অপরিশোধিত সঞ্চয় ট্যাঙ্ক স্থাপন করে পেট্রোলিয়াম লাইটারেজ অপারেশনের মাধ্যমে স্বল্প খরচে এবং স্বল্প সময়ে আমদানি করা অপরিশোধিত তেল ও ফিনিশড পণ্য সহজে আনলোড নিশ্চিত, অপরিশোধিত ও ফিনিশড পণ্য আমদানিতে সিস্টেম লস হ্রাস, ক্রমবর্ধমান জ্বালানি চাহিদা ও যোগানের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা এবং লে ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি ও জ্বালানি সরবরাহের নিরাপত্তা বাড়ানো।

সূত্র : বাসস