বিজুর ফুল ভাসলো কাপ্তাই হ্রদের জলে

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাঙামাটি »

বর্ণিল আয়োজনে পাহাড়ে পালিত হয়েছে বৈসাবি উৎসবের প্রথম দিন ‘ফুলবিজু’। সকালে সূর্যোদয়ের পরপরই শহরের বিভিন্ন স্থানে নানান সংগঠনের আয়োজনে কাপ্তাই হ্রদের পানিতে ভাসানো হয় হরেক রকম ফুল। বৈসাবি তিনদিনব্যাপী আয়োজনের প্রথম দিনে ফুলবিজু, আজ মূল বিজু এবং কাল গোজ্যাপজ্যা দিন।
পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলায় এখন উৎসবের আমেজ। বর্ষবরণ ও বিদায়ের সামাজিক অনুষ্ঠান বৈসাবিকে ঘিরে মুখর পার্বত্য জনপদ।

গতকাল মঙ্গলবার সকালে রাঙামাটি শহরের বিভিন্ন স্থানে কাপ্তাই হ্রদের জলে নানান রঙের ফুল ভাসিয়ে উদযাপিত হয় ফুলবিজু। এসময় উচ্ছাস প্রকাশ করেন উপস্থিত তরুণ তরুণীরা। তবে করোনার দুই বছরের বিষাদ ও বেদনা ভুলে আবারো প্রিয় বৈসাবি উদযাপন করতে পেরে খুশি সকলেই। ফুলবিজুর নানান আয়োজনে উপস্থিত বিশিষ্টজনরাও জানালেন নিজেদের উচ্ছাস, প্রত্যাশা ও আকাক্সক্ষার কথা।

গতকাল ফুলবিজুর পর আজ মূল বিজুর দিন চলবে বাড়ি বাড়ি বেড়ানো আর নানান স্বাদের খাবার গ্রহণ। কাল ‘গজ্যাপজ্যা দিন’ বা বিশ্রামের দিন পালন করবে পাহাড়িরা। আগামী ১৬ এপ্রিল রাঙামাটির বেতবুনিয়ায় সাংগ্রাই জলোৎসবের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এবছরের বৈসাবি উৎসব।

সকালে শহরের রাজবাড়ি ঘাটে বিজু সাংগ্রাই বৈসুক, বিষু বিহু সাংক্রান্ত উদযাপন কমিটির উদ্যোগে ফুলভাসানো অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান। তিনি সবাইকে বৈসাবি ও বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে সাড়ম্ভরে উৎসব উদ্যাপনে সন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন- ‘বৈচিত্র্যের এই উৎসবে আমি বিমোহিত, এ উৎসব আমাদের এক করে দিয়েছে, এটাই বাংলার চিরায়ত রূপ। এভাবেই অনন্তকাল চলবে।’

বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের রাঙামাটি জেলা সভাপতি ইন্টুমনি চাকমা বলছেন- ‘আমরা সবাই সম্প্রীতির সাথে বসবাস করতে চাই, এটাই আজকের দিনে আমাদের প্রত্যাশা।’
হিলর প্রোডাকশন এর সভাপতি সুপ্রিয় চাকমা শুভ বলেন-‘ এটা খুবই আনন্দের যে, করোনাকে জয় করে আমরা আবার উৎসবে ফিরতে পেরেছি। এই উৎসব আমাদের প্রাণের উৎসব। পার্বত্য চট্টগ্রামের সংস্কৃতিকে সুরক্ষা ও পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নের মাধ্যমে পাহাড়ে শান্তির সুবাতাস বইবে এটাই আজকের দিনে আমাদের প্রত্যাশা। আমরা সারাদেশের মানুষকে বিজুর শুভেচ্ছা জানাই।’

শহরের পলওয়েল পার্ক এলাকায় হিলর প্রডাকশন নামের একটি সংগঠনের উদ্যোগে দুই শতাধিক তরুণ তরুণী অংশ নেয় পানিতে ফুল ভাসানোর আয়োজনে। এছাড়া গর্জনতলী, কেরানী পাহাড়সহ বিভিন্ন এলাকায় স্থানীয়দের উদ্যোগে পালিত হয় কর্মসূচি।