বিএনপি নেতা আমীর খসরুর বিচার শুরু

ফোনালাপ ফাঁস

নিজস্ব প্রতিবেদক »

পাঁচ বছর আগে নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সময় ছড়িয়ে পড়া ফোনালাপের ঘটনায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদসহ দুজনের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে করা মামলায় অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। সোমবার চট্টগ্রাম দ্বিতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আমীরুল ইসলামের আদালতে অভিযোগ গঠন করা হয়। মামলার অপর আসামি মিলহানুর রহমান নওমী।

নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলাকালে ‘রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অন্তর্ঘাতমূলক’ এবং ‘উসকানি’ প্রাসঙ্গিক একটি ফোনালাপের অডিও ক্লিপ ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও ব্যারিস্টার মিলহানুর রহমান নওমীর মধ্যে এ ফোনালাপটি হওয়ায় এ দুজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া দস্তগীর।

এর প্রায় পাঁচ বছর পর অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু করার আদেশ দেন চট্টগ্রাম দ্বিতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা বিচারক মো. আমীরুল ইসলামের আদালত।

গতকাল সোমবার আদালতের এ আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেন আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট নেজাম উদ্দীন। তিনি বলেন, ‘বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় আদালত আমীর খসরুসহ দুইজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছেন। আগামী ২০ সেপ্টেম্বর সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য দিন ধার্য করেছেন আদালত। তদন্ত সংস্থার পক্ষ থেকে তথ্যপ্রযুক্তি আইনের মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়ে বিশেষ ক্ষমতা আইনে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। ওই আইনে দুইজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে।

ফোনালাপের ঘটনা প্রমাণ না পাওয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ফোনালাপের ঘটনায় তথ্যপ্রযুক্তি আইনে কোনো প্রমাণ মেলেনি। তবে বিশেষ ক্ষমতা আইনে অভিযোগ গঠনের কোনো উপাদান নেই বলে মনে করি।’

প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের ২৯ জুলাই রাজধানী ঢাকার কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের কাছে বিমানবন্দর সড়কে বাসচাপায় শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজের দুই শিক্ষার্থী দিয়া খানম মিম ও আবদুল করিম রাজিব নিহত হয়। এরপর নিরাপদ সড়কের দাবিতে রাস্তায় নেমে আসে বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা। ওই সময় ব্যারিস্টার মিলহানুর রহমান নওমীর সঙ্গে আমীর খসরুর একটি ফোনালাপের অডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় ২০১৮ সালের ৪ অগাস্ট কোতোয়ালী থানায় একটি মামলা হয়। এই মামলায় ২০১৮ সালের ২১ অক্টোবর উচ্চ আদালতের অন্তবর্তীকালীন জামিনের মেয়াদ শেষে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করলে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। এছাড়া ব্যারিস্টার মিলহানুর রহমান নওমী ২০১৮ সালের ২৬ নভেম্বর চট্টগ্রামের একটি আদালতে আত্মসমর্পণ করলে তাকেও কারাগারে পাঠানো হয়। ২০২১ সালের ২৩ ডিসেম্বর সিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দেওয়া হয়। বিশেষ ক্ষমতা আইন ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ২০২২ সালের ১০ অক্টোবর চট্টগ্রাম সাইবার ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ গঠনের দিন আসামিদের খালাস দেওয়া হয়।