বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানকে ইজারা দেয়া যাবে না

সংবাদ সম্মেলনে চট্টগ্রাম ফোরামের নেতৃবৃন্দ

নিজস্ব প্রতিবেদক »

পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে বাণিজ্যিক ইজারা বন্ধে এবার সোচ্চার হলো পরিকল্পিত চট্টগ্রাম ফোরাম। এর আগে পতেঙ্গা এলাকার জনগণ এবং স্থানীয় কিছু সংগঠন এর বিরোধিতা করলেও এবার চট্টগ্রামের পরিকল্পিত উন্নয়ন ও পরিবেশের জন্য কাজ করা পরিকল্পিত চট্টগ্রাম ফোরাম এ বিষয়ে তাদের অবস্থান উপস্থাপন করেছে।

সৈকতের একাংশ ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব ইজারার মাধ্যমে বেসরকারি অপারেটর দেওয়ার পরিকল্পনা থেকে সরে না এলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে পরিকল্পিত চট্টগ্রাম ফোরাম।

গতকাল শনিবার প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তাদের বক্তব্য উপস্থাপন করেন। সংগঠনটির নেতাকর্মীরা বলেন, চট্টগ্রাম নগরীতে যেটুকু উন্মুক্ত পরিসর ছিল, এভাবে সেগুলোতে জনসাধারণের প্রবেশাধিকার সীমিত বা বন্ধ করা হয়েছে। এখন উন্মুক্ত সমুদ্র সৈকতেও সীমিতকরণের প্রক্রিয়া চলছে।

লিখিত বক্তব্যে ফোরামের সহ-সভাপতি প্রকৌশলী সুভাষ বড়ুয়া বলেন, পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত এলাকার ৭ কিলোমিটার পরিসরের দেড় কিলোমিটার পরিসরকে পর্যটন জোন-১ এবং পর্যটন জোন-২ হিসেবে ভাগ করে টেন্ডারের মাধ্যমে ২৫ বছরের জন্য বাণিজ্যিকভাবে ইজারা দিতে চায় চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)। অথচ সিডিএ’র ড্যাপে পতেঙ্গা সৈকতকে পাবলিক ওপেন স্পেস হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। আর হাইকোর্টের রায় অনুযায়ী, সকল উন্মুক্ত জলাভূমি, সমুদ্র সৈকত, নদ-নদী, খাল-বিল, পাহাড়-পর্বত, নদীর পাড় প্রভৃতি কোনো ব্যক্তি বা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানকে ইজারা দেয়া যাবে না।

তিনি আরো বলেন, সৈকত এলাকা উন্মুক্ত রেখে পর্যটকদের জন্য ক্যাফে, জলযান, দোকান ও খেলার ব্যবস্থা ইত্যাদি নির্মাণ করে সিডিএ’র নিয়ন্ত্রণাধীন রেখে পরিচালনা সুযোগ ব্যক্তিগতখাতে ইজারা দেয়ার ব্যবস্থা করা যায়।

এক প্রশ্নের জবাবে প্রকৌশলী সুভাষ বড়–য়া বলেন, এ বিষয়ে আমরা সরাসরি সিডিএকে চিঠি দিয়েছি সপ্তাহখানেক আগে। মন্ত্রণালয়কেও জানিয়েছি। দেখি তারা কী করেন। এরপর আমরা পরবর্তী পদক্ষেপ নেব। প্রয়োজনে আদালতে যাবো।

পরিকল্পিত চট্টগ্রাম ফোরামের সভাপতি প্রফেসর সিকান্দর খান বলেন, হাওয়াই বিচসহ বিশ্বের কোনো সৈকতে চলাচলের কোনো রকম বিধিনিষেধ নেই। এখানে দেড় কিলোমিটার অংশে এটা হলে তা ঘিরে বিশেষ ব্যবস্থা থাকবে। সেখানে টিকেট কাটা ছাড়া সাধারণ মানুষ আর প্রবেশ করতে পারবে না। এতে অধিকার ক্ষুণœ হবে। আমাদের সার্কিট হাউসের সামনের মাঠ ও ফয়’স লেক চলে গেছে এভাবে। নিজেরা যদি সচেতন না হই তাহলে স্বার্থান্বেষী মহলের দোষ দিয়ে লাভ নেই।

সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পিত চট্টগ্রাম ফোরামের কো-চেয়ারম্যান এবিএম বাসেত, মো. নাজিম উদ্দিন, শাহরিয়ার খালেদসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত নিয়ে সিডিএ পর্যটন অঞ্চল গড়ে তোলার পরিকল্পনা নিয়েছে। আর তা করতে গিয়ে সৈকতের দুটি এলাকায় প্রবেশাধিকার সংরক্ষণ করতে যাচ্ছে। এই দুই এলাকায় প্রবেশ করতে ফি লাগবে। আর এতেই আপত্তি নগরবাসীর। উন্মুক্ত স্থানে প্রবেশ করতে ফি লাগবে কেন?