বাকলিয়ায় ভবনে বিস্ফোরণে দুই বোন অগ্নিদগ্ধ

রাহাত্তারপুল এলাকায় বিস্ফোরণের ঘটনায় অগ্নিদগ্ধরা চমেক হাসপাতালে বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন-সুপ্রভাত

নিজস্ব প্রতিবেদক »

ঘরের দরজা-জানালা উড়ে গেছে। বেশিরভাগ তৈজসপত্র পুড়ে অঙ্গার। সামনের দুটি ফ্ল্যাটেও নেই দরজা। বাসায় পরিবারের দুই সদস্য অগ্নিদগ্ধ। তারা চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে চিকিৎসাধীন।

গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে নগরের রাহাত্তারপুল এলাকায় বিসমিল্লাহ টাওয়ারের পঞ্চম তলার একটি ফ্ল্যাটে বিস্ফোরণের এ ঘটনা ঘটে। বাসায় গ্যাস জমে বিস্ফোরণ হয়েছে বলে ধারণা করছেন পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তারা। এতে ঘরে থাকা দুই বোন সাবরিনা খালেদ ও সামিয়া খালেদ অগ্নিদগ্ধ হয়। তাদের বাড়ি বাঁশখালী। সাবরিনা অনার্সের ও সামিয়া উচ্চমাধ্যমিক দ্বিতীয় বর্ষে সরকারি হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজের শিক্ষার্থী।

একই ফ্লোরের একজন বাসিন্দা বলেন, সকাল ১০টার দিকে বিকট শব্দে আঁতকে উঠি। বেডরুম থেকে বেরুতেই দেখি আমার ঘরের মূল দরজা নেই। সামনের ফ্যাটে আগুন। দ্রুত এলাকাবাসীর সহায়তায় আগুন নিভিয়ে দেখি সাবরিনা ও সামিয়ার গায়ে আগুন। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে তাদের দ্রুত চমেক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করি।

চমেক হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের প্রধান অধ্যাপক রফিক উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘তাদের শরীরের প্রায় ৫০ শতাংশ পুড়ে গেছে। শ্বাসনালীও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাদের অবস্থা আশঙ্কামুক্ত নয়।’

ভবনের বাসিন্দারা বলেন, তাদের বাসায় নানী, ভাই ও দুই  বোনসহ চারজন থাকতেন। পিতা প্রবাসে, মা বাড়িতে। মা মাঝে মাঝে আসেন কিছুদিন থেকেও যান। তাদের নানী ও ভাই ঘটনার আগের দিন বাড়িতে গিয়েছিলেন। ধারণা করা হচ্ছে, তারা দুই বোন হয়তো ভুলে গ্যাসের লাইন বন্ধ না করেই রাতে ঘুমিয়ে পড়ে। এতে ঘরে গ্যাস জমে যায়। সকালে ঘুম থেকে উঠে রান্না করতে গিয়ে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, পাঁচতলা ভবনটির দুইতলা পর্যন্ত একটি কিন্ডারগার্টেন স্কুল। পঞ্চম তলার তিনটি ফ্ল্যাটের মূল দরজা নেই। বিস্ফোরণের ঘটনায় ঘরটির দরজা জানালা সব ভেঙে গেছে। ঘরের সকল আসবাবপত্র পুড়ে গেছে। দেয়ালের রঙ ঝলসে কালো দাগ পড়ে গেছে। রান্না ঘরে চুলার উপর দুটি কড়াই। বাকি হাড়িপাতিল এলোমেলো হয়ে পড়ে আছে। ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশের কর্মকর্তারা ঘরে বিভিন্ন আলামত দেখছেন।

এ সময় চন্দনপুরা ফায়ার স্টেশনের সিনিয়র অফিসার শহিদুল ইসলাম সুপ্রভাতকে বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসার আগেই আশপাশের লোকজন আগুন নিভিয়ে ফেলেছে। বাসায় থাকা দুই সহোদরকে চমেক হাসপাতালে নিয়ে গেছে। এ বিস্ফোরণের কারণ তদন্ত সাপেক্ষে বলা যাবে। তবে প্রাথমিক তদন্ত ও প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্যমতে ধারণা করা হচ্ছে, রাতে দরজা জানালা বন্ধ থাকায় বাসায় গ্যাস জমে গেছে। এতে গ্যাস চেম্বারে পরিণত হয় বাসাটি। সকালে আগুন ধরাতে গিয়ে বিস্ফোরণ হয়েছে। এছাড়া অন্য কোনো ধরনের বিস্ফোরকের আলামত পাওয়া যায়নি।’