বাঁশখালীতে নৌকার কাঁটা ৪ হেভিওয়েট প্রার্থী

নির্বাচনী উত্তাপে সরগরম এলাকা

উজ্জ্বল বিশ্বাস, বাঁশখালী প্রতিনিধি »

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-১৬ বাঁশখালী আসনে নৌকার বিপক্ষে মাঠে নির্বাচনী উত্তাপ ছড়াচ্ছে আরও ৪ হেভিওয়েট প্রার্থী। এছাড়াও মনোনয়ন ফরম কিনেছেন আরও ৩ জন প্রার্থী। দীর্ঘদিন ধরে বাঁশখালী আওয়ামী লীগে দলীয় কোন্দল ও ব্যক্তিগত দ্বন্ধে এমপি মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী গ্রুপ, সিআইপি মুজিবুর রহমান গ্রুপ ও আব্দুল্লাহ কবির লিটন গ্রুপ নামে ৩টি বলয়ে রাজনৈতিক কর্মকান্ড চলে আসছিল। মাঠে এই ৩ গ্রুপের আলাদা আলাদা শক্তি প্রদর্শন ছিল মানুষের মুখে মুখে।

আসন্ন নির্বাচনে নৌকার মনোনয়ন পেয়েছেন বাঁশখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বিগত দুইবারের এমপি মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী। দলীয় মনোনয়নে ব্যর্থ হয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন ফরম নিয়েছেন দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মুজিবুর রহমান সিআইপি এবং দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আব্দুল্লাহ কবির লিটন। নির্বাচনী মাঠে আছেন জোটবদ্ধ জাতীয় পার্টির নেতা সাবেক এমপি ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী এবং জাসদের চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি (স্টান্ডার্ড ব্যাংকের নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান) কামাল মোস্তফা চৌধুরী। এছাড়া নির্বাচন মনোনয়ন ফরম কিনেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে শিল্পপতি আজিজুর রহমান, দক্ষিণ জেলা আওয়ামীলীগের কোষাধ্যক্ষ ছৈয়দুল মোস্তাফা চৌধুরী রাজু এবং মো. খালেকুজ্জামান। এরই মধ্যে খালেকুজ্জামান মনোনয়ন ফরম জমাও দিয়ে দিয়েছেন।

বাঁশখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল গফুর বলেন, বাঁশখালীতে উন্নয়নের ধারাবাহিতায় নৌকা অবশ্যই জিতবে। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার অধিকার সবার আছে। এই প্রভাব নৌকাতে পড়বে না।

বর্তমান সংসদ সদস্য ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী এমপি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখা হাসিনা আমাকে আবারো নৌকা প্রতীক দিয়ে কৃতজ্ঞ করেছেন। বাঁশখালীতে বিগত ১০ বছরে আমি ব্যাপক উন্নয়ন করেছি। উন্নয়ন দেখে জনগণ ভোট দিয়ে আমাকে আবারো নির্বাচিত করবে। যাঁরা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন, প্রধানমন্ত্রীর সুনাম রক্ষার্থে নৌকার পক্ষে কাজ করার আহ্বান জানাচ্ছি।

দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শিল্পপতি মুজিবুর রহমান সিআইপি বলেন, বাঁশখালীতে নিজেদের উদ্যোগে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ, মাদরাসা ও স্কুল প্রতিষ্ঠা করেছি। আমাদের পরিবারের বিভিন্ন ধরণের ১৭টি শিল্প প্রতিষ্ঠান নিয়ে গঠিত স্মার্ট গ্রুপে কর্মরত ২৫ হাজার কর্মকর্তা-শ্রমিকের মধ্যে প্রায় ১৮ হাজারই বাঁশখালীর বাসিন্দা । আমরা ৭ ভাই বাঁশখালী জুড়ে বহুমুখী জনসেবার নিয়োজিত। আওয়ামী লীগ রাজনীতির জন্য আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে জড়িত। জনগণের দাবীর প্রেক্ষিতে এবং প্রধানমন্ত্রীর দিক নির্দেশনা অনুসারে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করছি।

দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আব্দুল্লাহ কবির লিটন বলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন ফরম নিয়েছি। দীর্ঘদিনের আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে আমার মাঠ পর্যায়ে অবদান আছে কিনা বাঁশখালীবাসী জানেন। নয়তো আমার নাম বাঁশখালীবাসীর মুখে মুখে হতো না।

জাতীয় পার্টির নেতা সাবেক এমপি ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, দলীয় মনোনয়ন ফরম কিনেছি। জাতীয় পার্টি নির্বাচন করলে আমিও বাঁশখালী আসনে নির্বাচন করবো। সেই রকম প্রস্তুতি নিয়েই মাঠে আছি। তবে এখনো নির্বাচন অফিস থেকে মনোনয়ন ফরম নিইনি।

জাসদের দক্ষিণ জেলার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি কামাল মোস্তফা চৌধুরী বলেন, দলীয় এবং নির্বাচনী মনোনয়ন ফরম দুইটিই নিয়েছি। নির্বাচন করার জন্য সকল প্রস্তুতি আছে। জোটবদ্ধ সিদ্ধান্ত নিয়ে দৌড়ঝাঁপে আছি।

বাঁশখালী উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. হারুন মোল্লা বলেন, বাঁশখালীতে নির্বাচনী মাঠে উত্তাপ থাকলেও আইন শৃংখলা শান্তিপূর্ণ রয়েছে। মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৭০ হাজার ৭৫৫ জন। এখন পর্যন্ত চট্টগ্রাম নির্বাচন অফিস ও বাঁশখালী অফিস মিলে মনোনয়ন ফরম ক্রয় করেছেন ৫জন। জমা দিয়েছেন মাত্র একজন।