পিএইচপি কুরআনের আলো প্রতিযোগিতায় সেরা হাফেজ মো. রাফসান মাহমুদ

সুপ্রভাত ডেস্ক »

সারা দেশের ২২ হাজার প্রতিযোগীদের পেছনে ফেলে পিএইচপি কুরআনের আলো-২০২৪ প্রতিযোগিতায় সেরা হয়েছেন কুমিল্লার প্রতিযোগী হাফেজ মো. রাফসান মাহমুদ জিসান।

গতকাল রোববার ইফতারের পূর্ব মুহূর্তে রাজধানীর একটি পাঁচতারকা হোটেলে ফাইনাল রাউন্ডে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। এই প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় হয়েছেন ময়মনসিংহ হাফেজ মো. দিদারুল ইসলাম, তৃতীয় গোপালগঞ্জের প্রতিযোগী হাফেজ মো. আনাস মাহফুজ এবং চতুর্থ কুমিল্লার প্রতিযোগী হাফেজ মো. আনাস প্রধান।

এবার ১৬ বছর পূর্ণ করলো অনন্য এই আয়োজনটি। সারা দেশ থেকে প্রতিযোগীদের বাছাই করে ৪ জনকে ফাইনাল রাউন্ডের জন্য চূড়ান্ত করা হয়। এবারের চূড়ান্ত বাছাই পূর্ব অনুষ্ঠিত হয়েছে দুবাইয়ে ব্যতিক্রমী আয়োজনের মাধ্যমে। অনুষ্ঠানে প্রথম প্রতিযোগীকে দেওয়া হয়েছে ৪ লাখ টাকা, দ্বিতীয় প্রতিযোগী পেয়েছেন ৩ লাখ টাকা, তৃতীয় প্রতিযোগী ২ লাখ টাকা ও সর্বশেষ চতুর্থ প্রতিযোগীকে সান্ত¡না পুরস্কার দেওয়া হয়েছে এক লাখ টাকা।

ফাইনাল রাউন্ডের এই অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন ধর্মমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান, পিএইচপি ফ্যামিলির চেয়ারম্যান আলহাজ সুফি মো. মিজানুর রহমান, এনটিভির পরিচালক আশফাক উদ্দিন আহমেদ, সেন্টার ফর যাকাত ম্যানেজমেন্টের চেয়ারম্যান নিয়াজ রহিম, ইনফিনিটি মেগামলের চেয়ারম্যান মো. জুনাইদ, সেভয় আইসক্রিম ফ্যাক্টরি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিয়াজ আহমেদ, কুরআনের আলো ফাউন্ডেশনের সেক্রেটারি মুফতি  মো. মহিউদ্দিন।

অনুষ্ঠানে ধর্মমন্ত্রী ফরিদুল হক খান বলেন, ‘পবিত্র কোরআন হচ্ছে মানুষের জন্য পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান। কোরআনের বিধানের আলোকে জীবন গঠন করলে আমাদের জীবনে সাফল্য আসবে। দেশের সর্বত্র কোরআনের আলো ছড়িয়ে দিলে সমাজে শান্তি, সুখ ও সমৃদ্ধি আসবে। দেশ থেকে অশান্তি দূর হবে।’ তিনি বলেন, ‘কোরআন মর্যাদার দিক থেকে শ্রেষ্ঠত্বের অধিকারী। হাফেজগণ এ কোরআনকে বুকে ধারণ করেন, যা একটি বিশেষ সম্মানের। কোরআনের শিক্ষার আলোকে জীবন গঠন করলে আমাদের সমাজ থেকে অপরাধ দূর হবে এবং শান্তি ও সমৃদ্ধি আসবে। তাই আমাদের সবাইকে কোরআনের আলোকে জীবন গঠনের সর্বাত্মক চেষ্টা করতে হবে। মাদরাসার শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি স্কুল, কলেজ ও বিশ্বিবদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্যও পবিত্র কোরআনের প্রতিযোগিতার আয়োজন করার জন্য আয়োজকদের প্রতি আহ্বান জানান ধর্মমন্ত্রী।’

পিএইচপি ফ্যামিলির চেয়ারম্যান আলহাজ সুফি মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘গত ১৬ বছর ধরে এই অনুষ্ঠান দেশে চলে আসছে। ইতোমধ্যেই এ অনুষ্ঠান দেশে জনপ্রিয়তা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। পবিত্র কোরআন মানব জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ ও পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান। এ কোরআন মানুষের জীবনকে আলোকিত করে যদি সত্যিকার অর্থে আমরা কোরআন নিজেদের বুকে ধারণ করতে পারি।’

কোরআনের আলো অনুষ্ঠানকে চলমান রাখার ঘোষণা দিয়ে মিজানুর রহমান বলেন, ‘যারা কুফুরি করে ও মানুষকে সত্যপথে আসতে বাধা দেয়, আল্লাহ তাদের ধ্বংস করে দেবেন। এটিই হচ্ছে মহান আল্লাহর ঘোষণা। প্রত্যেকের জীবনকে পবিত্র কুরআনের আলোকে জীবন গঠন করার আহ্বান জানান এবং এই অনুষ্ঠানে আগামীবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আসবেন বলে প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।’

অনুষ্ঠানটির পরিচালক সাইফুল্লাহ সাইফ বলেন, সারা দেশের ২২ হাজার প্রতিযোগীর মধ্য থেকে জেলা ও বিভাগীয় পর্যায় থেকে বাছাই করে আমরা টিভি অনুষ্ঠানের জন্য ৩৯ জনকে চূড়ান্ত করা হয়। সেখান থেকে মাত্র ৪ জনকে বাছাই করা ছিল অনেক কঠিন কাজ। আমাদের বিচারকেরা এবং এ অনুষ্ঠানের সঙ্গে সম্পৃক্ত সবার অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে ফাইনাল পর্যায়ে আসতে পেরেছি।

শাহ ইফতেখার তারিকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিচারক হিসেবে ছিলেন আন্তর্জাতিক হাফেজ ও ক্বারি সিলেকশন  বোর্ডের হাফেজ ক্বারি জহিরুল ইসলাম, হাফেজ ক্বারি শাইখ ক্বারি মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ, হিফজুল কুরআন ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সাবেক অডিটর শাখার হাফেজ ক্বারি মোহাম্মদ ফখরুল হুদা।