পর্যটকের অপেক্ষায় বান্দরবান

৭০ শতাংশ হোটেল বুকিং

নিজস্ব প্রতিবেদক, বান্দরবান »

ঈদের টানা ছুটিতে প্রচুর পর্যটকের আগমন ঘটবে পাহাড় কন্যা বান্দরবানে। ইতোমধ্যে বুকিং হয়ে গেছে জেলার বেশির ভাগ হোটেল-মোটেল, রিসোর্ট. গেস্ট হাউসগুলো। পর্যটক বরণে প্রস্ততি নিচ্ছে এখন পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। গেল কয়েক বছর করোনার কারণে পর্যটকের আশানুরূপ আগমন ঘটেনি পার্বত্য জেলা বান্দরবানে। তবে এ বছর করোনার বিধি নিষেধ না থাকায় এবং ঈদে টানা ছুটি থাকায় প্রচুর পর্যটকের আগমন ঘটবে পর্যটননগরী বান্দরবানে।
প্রতি বছর ঈদের ছুটিতে পর্যটকের ঢল নামে পার্বত্য জেলা বান্দরবানে। কিন্তু গেল কয়েক বছর করোনার কারণে ভাটা পড়েছিল পর্যটন ব্যবসায়। তবে এ বছর করোনার বিধি নিষেধ না থাকায় এবং ঈদে টানা ছুটি থাকায় প্রচুর পর্যটকের আগমন ঘটবে বান্দরবানে। ইতোমধ্যে বুকিং হয়ে গেছে জেলার বেশির ভাগ হোটেল মোটেল, রিসোর্ট গেস্ট হাউস গুলো। শুধু হোটেল মোটেলগুলোই নয় জেলার পর্যটন কেন্দ্র গুলোও সাজানো হচ্ছে নতুনভাবে।
জেলা প্রশাসন পরিচালিত মেঘলা, নীলাচল, প্রান্তিক লেক নীল দিগন্তসহ সব পর্যটন কেন্দ্র বর্ণিল রঙে রাঙানো হয়েছে। এছাড়াও নীলগিরি, নাফাকুম দেবতাকুম বগালেকসহ সব পর্যটন কেন্দ্রে এখন চলছে পর্যটক বরণের প্রস্তুতি।
হোটেল নীলাদ্রির মালিক সুজন দাশ জানান আমাদের ৬০ শতাংশ রুম ইতোমধ্যে বুকিং হয়ে গেছে। আশা করি বাকি রুমগুলোও বুকিং হয়ে যাবে। এবারের ঈদে আশানুরূপ পর্যটক আসবে বলে মনে হচ্ছে। তাই এ বছর ব্যবসা ভাল হবে আশা করি। বিগত বছরের ক্ষতিগুলো কিছুটা হলেও পুষিয়ে নেয়া যাবে।
ফানুস রিসোর্টের পরিচালক ইমরান উদ্দীন বলেন গেল দুই বছর ঈদের ছুটিতে করোনার কারণে আমাদের ব্যবসার লোকসান গুনতে হয়েছে। এবছর আশা করি প্রচুর পর্যটক আসবে। ইতোমধ্যে আমাদের ৮০ শতাংশ রুম বুকিং হয়ে গেছে। বাকিগুলোও হয়ত বুকিং হয়ে যাবে। পর্যটক আসলে গত কয়েক বছরের ক্ষতি কিছুটা পুষিয়ে আসবে।
জেলায় পর্যটকদের ঘুরে বেড়ানোর জন্য রয়েছে প্রায় ৫ শতাধিক চাঁদের গাড়ি। ঈদের সময় পর্যটকদের পরিবহনে পরিবহন মালিকরাও প্রস্তুতি নিচ্ছেন। নিজেদের গাড়িগুলো সব ঠিকঠাক করে রেডি করে নিচ্ছে। পরিবহন শ্রমিক নেতা বাহাদুর জানান, এবারের ঈদে টানা ছুটি থাকায় প্রচুর পর্যটকের আগমন ঘটবে। তাই আমরা পর্যটকরা যাতে নিরাপদে আরামে ঘুরে বেড়াতে পারে সে লক্ষে গাড়িগুলো সব ঠিকঠাক করে রেডী করে নিচ্ছি।
পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসার সাথে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জেলার প্রায় ২০ হাজারেরও বেশি মানুষ জড়িত। করোনার কারণে গেল দুই বছর পর্যটক না আসায় লোকসান গুনতে হয়েছে পর্যটন সংশ্লিষ্ট মানুষদের। তবে এবছর আশানুরূপ পর্যটকের আগমন ঘটবে এবং ব্যবসায়ীরাও কিছুটা ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবেন বলে আশা ব্যবসায়ীদের।
বান্দরবান হোটেল মোটেল মালিক সমিতির সভাপতি অমল কান্তি দাশ জানান এবছর করোনার প্রকোপ নেই এবং ঈদে ছুটিও বেশি তাই পাহাড় দেখতে প্রচুর পর্যটকের আগমন ঘটবে। এখানকার অনেকেই পর্যটন ব্যবসার সাথে জড়িত। পর্যটক আসলে জেলায় দৈনিক ৫০ লক্ষ টাকার বেশি লেনদেন হয়। আশা করি এ বছর ঈদে পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা তাদের বিগত বছরের লোকসান কিছুটা হলেও পুষিয়ে নিতে পারবে। পর্যটকদের বরণে সব প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।
তবে টানা ছুটিতে বেড়াতে আসা পর্যটকরা যাতে নিরাপদে নির্বিঘ্নে পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে ঘুরে বেড়াতে পারে সেজন্য প্রশাসনেসর পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছে নানা পদক্ষেপ। বান্দরবান টুরিস্ট পুলিশ জোনের এসপি মোহাম্মদ আব্দুল হালিম, বলেন প্রতিটি পর্যটন স্পটে টুরিস্ট পুলিশের সদস্যরা মোতায়েন রয়েছে। এর পাশাপাশি প্রতিটি স্পটে সাদা পোশাকধারী পুলিশ সদস্যরা নিয়োজিত থাকবে। আমাদের নম্বরগুলো বিভিন্ন জায়গায় দেয়া আছে। কোন টুরিস্ট কোথাও হয়রানির শিকার হলে সাথে সাথে আমরা ব্যবস্থা নেব। আশা করি পর্যটকরা নিরাপদে বান্দরবানে বেড়াতে পারবেন।