নান্দনিক মাছের রঙে রঙিন জামালখান

হুমাইরা তাজরিন »

চট্টগ্রামের অন্যতম নান্দনিক এলাকা জামালখান। পুরো দিনের একেক সময় একেক রঙে রঙিন হয় এলাকাটি। দিনের আলো নিভে এলে জ্বলে আলোকিত অ্যাকুয়ারিয়াম। বিকেলে বেড়াতে এসে অ্যাকুয়ারিয়ামের মাছের সৌন্দর্য্যে বিমোহিত হন নগরবাসী।

গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে জামালখানে সন্তানদের নিয়ে সময় কাটাতে আসেন সাজিয়া আফরিন। তিনি বলেন,‘ নগরে ঘুরাঘুরির জন্য বেশি জায়গা নেই। তবুও জামালখানে বিকেলটা অন্তত একটু স্বস্তিতে কাটানো যায়। আমার বাচ্চারা অ্যাকুয়ারিয়ামের মাছগুলোর সাথে খেলতে পছন্দ করে। বাসায় এগুলো পালন করা সম্ভব না হলেও এখানে এসে এই সুন্দর রঙ-বেরঙের মাছগুলো দেখলে ওরা খুশি হয়ে যায়।’

অ্যাক্যুরিয়ামের মাছ বিক্রেতা বিকাশ মজুমদার বলেন,‘এখানে মাছগুলো দেখতে অনেকে আসে। দাঁড়িয়ে দেখে। রাত বাড়লে আলোকিত পানিতে মাছের নড়াচড়া দেখতে সুন্দর লাগে। এছাড়া অনেকে মাছ কিনে নিয়ে যায়। মাছের খাবারসহ পরির্চযার সরঞ্জাম আমরা সরবরাহ করি। মাছগুলোর একেকটার একেক দাম। ৫০ থেকে ১০ হাজার টাকার মাছও এখানে আছে।’

এক্যুরিয়ামে রয়েছে নানান ধরণের মাছ। যেমন-
ব্লাড রেড প্যারোট : কালো চোখের লাল রঙের মাছটি ভীষণ সুশ্রী। তাইওয়ানের এই মাছটি শোভা বাড়াচ্ছে জামালখানের অ্যাকুয়ারিয়ামের। জ্বলজ¦লে আলোতে টকটকে লাল রঙের মাছটির হলুদ এবং ধূসর রঙেরও হয়ে থাকে।

কার্পা কোই মার্কাডো : সাদা গায়ে কমলা বর্ণ ছিটিয়ে থাকায় উজ্বল বর্ণিল দেখায় মাছটি। পূর্ব এশিয়া, কম্বোডিয়া,লাউস, মায়ানমার, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড এবং ইন্দোনেশিয়ায় মাছটির দেখা মেলে। বিশেষত চায়নায় মেলে মাছটি। তবে মাছটির বিশেষত্ব হলো এটি ঠান্ডা পানির মাছ।

সিয়ামেস ফাইটিং ফিশ : অ্যাক্যুয়ারিয়ামের আলোতে গাঢ় নীল, লাল রঙের এই মাছগুলোর গাউনের মতো কারুকার্যশোভিত লেজের নড়াচড়া মোহিত করে যে কাউকেই। একবার তাকালে এই মাছের দিক থেকে চোখ ফেরানো দায়।

গ্লো-ফিশ : পরিষ্কার পানির এই মাছগুলো দেখতে অনেকটা দেশি পুঁটি মাছের মতো। তবে নামানুসারে এই মাছের গ্লো (উজ্জ্বল) হওয়ার কারণ পেটের মধ্যবর্তী স্থানে লম্বা উজ্জ্বল লাল বা কমলা রঙের দাগ টানা যা পানি ভর্তি আলোকিত অ্যাকুয়ারিয়ামে নৈসর্গিক দেখায়। দক্ষিণ আমেরিকা, গুয়ানা এইসব অঞ্চলে এই মাছটির দেখা মেলে।

জেব্রা ডানিয়োস ফিশ : জেব্রার মতো ডোরাকাটা সরু লম্বাটে এই মাছটি। মাছটি দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চল ,ভারত ও বাংলাদেশে পাওয়া যায়। ব্যক্তিগত পুকুরেও এই মাছের দেখা মেলে। জেব্রা দেশীয় প্রাণী না হলেও জেব্রার বর্ণের এই মাছটি আমাদেরই।

নিওন টেট্রা : সাদা, ফিরোজা এবং লাল এই রঙের ডোরা রয়েছে এই কালচে মাছটির। দক্ষিণ আমেরিকার দেশ যেমন ব্রাজিলে দেখা মেলে এটির। এছাড়া দক্ষিণ পূর্ব কলোম্বিয়া , পশ্চিম পেরুতেও নিওন টেট্রার দেখা মেলে।

গুপ্পি : এই মাছটিকে রংধনু মাছও বলা হয়। কেননা এই মাছটির লেজের দিকটাতে কয়েকটি রঙের সমাহার রয়েছে। কোনো কোনোটির লেজ আবার বাঘের গায়ের মতো ডোরাকাটা। দক্ষিণ আমেরিকার এই মাছটির গায়ের দিকটা অনেকটা দেশীয় মলা মাছের মতো। মিশ্র বর্ণ ছাড়াও মাছটি , কমলা , কালো লাল রঙের হয়ে থাকে। রাতের অন্ধকারে অ্যাকুয়ারিয়ামের আলোতে জ্বলজ্বল করতে থাকে এই মাছগুলো।

এঞ্জেল ফিশ : রূপচাঁদা মাছের মতো রং এর। তবে আড়াআড়ি ডোরাকাটা রয়েছে। পাখনাগুলো বেশ সূঁচালো। বিশেষত সাদা এবং কালো রঙের হয়ে থাকে এই মাছগুলো।