দোল উৎসবে রঙিন মুখ

রুমন ভট্টাচার্য <<
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব দোলপূর্ণিমা। এ উৎসব দোলযাত্রা ও হোলি উৎসব নামেও পরিচিত। হোলি মানেই রঙের খেলা। ছোট ও বড় সকলের কাছে এ উৎসব রঙিন ও আনন্দময়। এদিন হিংসা, বিদ্বেষ ও ভেদাভেদ ভুলে একে অপরকে রাঙিয়ে দেন আবিরের রঙে।
হোলি উৎসবকে ঘিরে গতকাল সকাল থেকেই নগরের বিভিন্ন স্থানে শিশু-কিশোর ও তরুণ-তরুণীসহ নানা বয়সী মানুষজন আবির হাতে একে অপরকে রাঙিয়ে দেন। পাশাপাশি বিভিন্ন রং নিয়েও মেতে উঠেন সকলে। এ থেকে বাদ যায়নি স্বজন ও প্রতিবেশীরাও। বাড়ি বাড়ি গিয়ে পাল্টাপাল্টি রঙের বিনিময় করেছেন। এছাড়া হোলি উৎসব স্মৃতির পাতায় ধরে রাখতে মোবাইল ক্যামেরায় ছবি ও সেলফিতে মেতে ওঠেন তরুণ-তরুণীরা।
নগরের চকবাজার, পশ্চিম বাকলিয়া, হাজারী লেইন, পাথরঘাটা, এনায়েত বাজার গোয়ালপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় দেখা যায় হোলি উৎসব। পাড়ার প্রায় সকলেই বাহারি রঙে রাঙিয়ে নিয়েছেন নিজেকে।
হাজারী লেইনের বাসিন্দা গৌতম সিংহ বলেন, ‘হোলি উৎসব মানেই আনন্দ। আজ হিংসা, বিদ্বেষ ও ভেদাভেদ ভুলে সবাই মিলেমিশে নিজেকে রঙিন করে তোলা।’
দোল উৎসব নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকও ছিল সরব। কেউ দিয়েছেন হোলির শুভেচ্ছাও আবার কেউ দিয়েছেন পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আবিরের রঙে রাঙানোর মুহূর্ত।
তবে আজ সোমবার আবারও রঙের খেলায় মাতবে সবাই। কারণ একদিন আবিরের রঙে ও পরের দিন নানা রঙে রাঙানো হয়।
এদিকে গতকাল নগরের বিভিন্ন স্থানে উদযাপিত হয় দোলপূর্ণিমা। বিভিন্ন মন্দিরে পূজা, যজ্ঞ, প্রসাদ বিতরণসহ বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
বৈশ্বিক মহামারি করোনা পরিস্থিতির কারণে এ বছর উৎসবটি শুধু পূজা, যজ্ঞ ও প্রসাদ বিতরণের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা হয়েছে।
শাস্ত্রমতে, ফাল্গুন মাসের পূর্ণিমা তিথিতে বৃন্দাবনে শ্রীকৃষ্ণ আবির নিয়ে রাধা ও তাঁর সখীদের সঙ্গে রং খেলায় মেতে উঠেছিলেন। এই আবির খেলার তিথিটিকে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা দোল বা হোলি উৎসব হিসেবে পালন করেন। দোলযাত্রার দিন রাধা-কৃষ্ণের বিগ্রহ আবিরে রাঙিয়ে দোলায় চড়িয়ে নগর কীর্তনে বের হন। এ সময় তারা রং খেলার আনন্দে মেতে ওঠেন। দোল উৎসবের অনুষঙ্গে ফাল্গুনী পূর্ণিমাকে দোলপূর্ণিমা বলা হয়। আবার এই পূর্ণিমা তিথিতেই চৈতন্য মহাপ্রভুর জন্ম বলে একে গৌরপূর্ণিমা নামেও অভিহিত করা হয়।
দোল পূর্ণিমা তিথির শুরু হয় গতকাল রোববার ৩টা বেজে ২৭ মিনিটে পূর্ণিমা উপবাস পালন। দোল পূর্ণিমা তিথি শেষ হবে আজ সোমবার রাত ১২ টা বেজে ১৮ মিনিটে।