দেশে দেশে নানা নামে গুপ্তচর

সুপ্রভাত ডেস্ক »

গুপ্তচরবৃত্তি, স্পাইয়িং বা এসপিওনাজ দুনিয়ার প্রাচীন পেশাগুলোর মধ্যে অন্যতম। গুপ্তচরবৃত্তিকে বলা হয়, ‘সেকেন্ড ওল্ডেস্ট প্রফেশন’। পেশা হিসেবে গুপ্তচরবৃত্তি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ কাজ এবং বিপজ্জনকও। একই সঙ্গে রোমাঞ্চকরও বটে।

নিরাপত্তা খাতে সবচেয়ে বেশি ব্যয় করে থাকে বেশির ভাগ দেশ। অতর্কিত হামলা এবং নাগরিকদের প্রাণহানি থেকে রক্ষা করতে প্রতিটি দেশেরই আলাদা গুপ্তচর সংস্থা রয়েছে।

বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা সে সমস্ত গুপ্তচর সংস্থা নিয়েই এই প্রতিবেদন।

সিআইএ (সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি)

আমেরিকার প্রথম সারির গোয়েন্দা সংস্থা। ১৯৪৭ সালে গড়ে উঠেছিল এই সংস্থা। এর সদর দফতর ভার্জিনিয়া। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে সিআইএ-র দক্ষ কর্মীরা ছড়িয়ে রয়েছেন। আমেরিকার প্রতিদ্বন্দ্বী দেশ তো বটেই, অন্যান্য দেশের উপরও সিআইএ শাণিত নজর রেখে চলেছে দিবারাত্র।

র (রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালিসিস উইং)

ভারতের এই প্রতিরক্ষা সংস্থার নাম সকলেই শুনেছেন। বলিউড থেকে টলিউড— বিভিন্ন ছবির দৌলতে সাধারণ মানুষের কাছেও এই সংস্থা যথেষ্ট পরিচিত। ১৯৬২-র ভারত-চিন যুদ্ধ এবং ১৯৬৮-র ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের পর ১৯৬৮ সালে গড়া হয়েছিল এই গুপ্তচর সংস্থা। এর সদর দফতর নয়াদিল্লি।

মোসাদ

ইজরায়েলি গুপ্তচর সংস্থা। বিশ্বের অন্যতম সেরা এই গোয়েন্দা সংস্থার গুপ্তচররা সারা বিশ্বে ছড়িয়ে রয়েছেন। ২০২০ সালে গোপন অভিযান চালিয়ে লাদেনের নিকটাত্মীয় আল কায়দার প্রথম সারির নেতা আবু মহম্মদ আল-মাসরি ওরফে আহমেদ আবদুল্লাকে হত্যা করেছিল এই গুপ্তচর সংস্থা।

আইএসআই (ইন্টার সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্স)

পাকিস্তানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ গুপ্তচর সংস্থা। পাকিস্তান সরকারকে ভিতর এবং বাইরের যাবতীয় তথ্য দিয়ে থাকে এই সংস্থা। একাধিক সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীর সঙ্গে হাত মিলিয়ে কাজ করার অভিযোগ রয়েছে এই সংস্থার বিরুদ্ধে। ১৯৪৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় আইএসআই। এর সদর দফতর ইসলামাবাদ।

এসআইএস (সিক্রেট ইন্টেলিজেন্স সার্ভিস)

ব্রিটেনের গুপ্তচর সংস্থা। সদর দফতর লন্ডন। প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ১৯০৯ সালে। অস্ট্রেলিয়ান সিক্রেট ইন্টেলিজেন্স সার্ভিসের সঙ্গে যাতে এর নাম গুলিয়ে না যায় তার জন্য এমআই ৬ নামেই বেশি পরিচিত এই গুপ্তচর সংস্থা।

জিআরইউ (জেনারেল স্টাফ অব দ্য আর্মড ফোর্সেস অব দ্য রাশিয়ান ফেডারেশন)

জিআরইউ এর সদর দফতর মস্কো। ১৯৯২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল রাশিয়ার এই গুপ্তচর সংস্থা। রাশিয়ার সবচেয়ে বড় গুপ্তচর সংস্থা এটি।

এমএসএস (মিনিস্ট্রি অব স্টেট সিকিউরিটি)

চীনের প্রথর সারির প্রতিরক্ষা সংস্থা। ১৯৮৩ সালে গড়ে ওঠা এই গুপ্তচর সংস্থার সদর দফতর বেজিং। ঘরে-বাইরে প্রায় সমস্ত বিষয়ই দেখাশোনা করে এই সংস্থা।

এনআইএ (ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি)

ভারতের আরও একটি গুপ্তচর সংস্থা। ২০০৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়া এই সংস্থার সদর দফতরও নয়াদিল্লি। দেশের ভিতরে যাবতীয় সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপের তদন্ত চালায় এনআইএ।

এনএসএ (ন্যাশনাল সিকিউরিটি এজেন্সি)

আমেরিকার আরও একটি গুপ্তচর সংস্থা। মেরিল্যান্ডে রয়েছে এর সদর দফতর। আমেরিকার বিভিন্ন তথ্য যাতে অন্য দেশের হাতে না পৌঁছয় তা দেখভাল করাই এই সংস্থার প্রধান কাজ।

এফএসএস (ফেডারেল সিকিউরিটি সার্ভিস)

রাশিয়ার গুপ্তচর সংস্থা। ১৯৯৫ সালে গঠিত হয়। সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের গুপ্তচর সংস্থা কেজিবি-র উত্তরসূরি এটি।

বিএনডি

১৯৫৬ সালে জার্মানির এই গুপ্তচর সংস্থা গড়ে ওঠে। মধ্য বার্লিনে এর সদর দফতর রয়েছে। বিশ্বের গোয়েন্দা সংস্থাগুলির মধ্যে সবচেয়ে বড় সদর দফতর এটিই।

আইবি (ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো)

নয়াদিল্লিতে ভারতের আরও একটি গুপ্তচর সংস্থার সদর দফতর রয়েছে। ১৮৮৭ সালে এটি গড়া হয়েছিল। ভিআইপি নিরাপত্তা, সীমান্তে প্রতিবেশী দেশগুলির কার্যকলাপ নজরে রাখা, সন্ত্রাসদমন-সহ একাধিক কাজ করে থাকে এটি।

এফবিআই (ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন)

সংবাদমাধ্যমের বদৌলতে বহুল পরিচিত একটি নাম। এটি আসলে আমেরিকার আরও একটি গুপ্তচর সংস্থা। ১৯০৮ সালে গড়ে ওঠা এই সংস্থার সদর দফতর ওয়াশিংটনে। সন্ত্রাসদমন থেকে দেশের অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন বিষয়ে প্রতিরক্ষার প্রশ্নে কাজ করে আমেরিকার এই গুপ্তচর সংস্থা।

একই ভাবে অস্ট্রেলিয়ার নিরাপত্তার দায়িত্ব রয়েছে অস্ট্রেলিয়ান সিক্রেট ইনটেলিজেন্স সার্ভিস-এর উপর। যেটি ১৯৫২ সালে গড়ে উঠেছিল। কানাডার নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে সে দেশের গুপ্তচর সংস্থা কানাডিয়ান সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স সার্ভিস। কানাডার এই গুপ্তচর সংস্থা ১৯৮৪ সালে গড়ে উঠেছিল।

বাংলাদেশেরও নিরাপত্তায় রয়েছে নানা সংস্থা। আছে সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা ডিজিএফআই, জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থা এনএসআই, পুলিশের সংস্থা সিআইডি।

সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা