টেকনাফে এবার স্কুলছাত্র অপহরণ

নিজস্ব প্রতিনিধি, টেকনাফ »

কক্সবাজার টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের লেদা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির এক স্কুলছাত্রকে অপহরণ করেছে দুর্বৃত্তরা। রোববার দুপুরে স্কুল ছুটির পর থেকে নিখোঁজ হয় এই শিশু। পরে মোবাইল ফোনে ৩০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবির পর জানা গেছে, এ শিশুকে স্কুল থেকে ফেরার সময় অপহরণ করা হয়।

অপহৃত মোহাম্মদ হোছাইন সূর্য টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের লেদা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র এবং ওই এলাকার সোলতান আহমেদের ছেলে।
গতকাল সোমবার রাত সাড়ে ৮ টায় পর্যন্তও স্কুল ছাত্রের খোঁজ পাওয়া যায়নি। রোববার দুপুরের দিকে স্কুলের সামনে থেকে শিশুটিকে অপহরণ করা হয়।

টেকনাফ হ্নীলা ইউনিয়নের লেদা ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য নুরুল হুদা বলেন, ‘৫ জুন রাতেও অপহৃত স্কুলছাত্রের খোঁজ পাওয়া যায়নি। অপহরণকারীরা মুক্তিপণের জন্য ৩০ লাখ টাকা দাবি করছে। এলাকাজুড়ে এখন অপহরণ আতঙ্ক মানুষের মাঝে। ফলে অনেকেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সন্তানদের পাঠাতে ভয় পাচ্ছে।’

এ ব্যাপারে টেকনাফ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল হালিম বলেন, ‘অভিযোগ পেয়ে আমরা অপহৃত শিশুকে উদ্ধারে অভিযান চালাচ্ছি। গত চার দিনে থানায় আটটি অপহরণের অভিযোগ পাওয়া গেছে।’

এদিকে, ২ জুন পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা হ্নীলা ইউনিয়নের আলীখালী থেকে পাঁচ রোহিঙ্গাকে অস্ত্রের মুখে অপহরণ করে নিয়ে যায়। এর মধ্যে একজনের কবজি কেটে অন্য অপহৃত একজনের পরিবারকে মুক্তিপণের বার্তা দেয় সন্ত্রাসীরা। তার আগে পাত্রী দেখতে আসা অপহৃত তিন বন্ধুর লাশ মিলেছিল পাহাড়ে। এ ছাড়া ৯ এপ্রিল অপহৃত টমটম চালক ওমর ফারুক (২০) ওরফে ফায়সালের পরিবার তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ দেওয়ার পরেও এখনও তার খোঁজ পাওয়া যায়নি।

গেল আট মাসে টেকনাফে ৭০ জনকে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। যেখানে ২৮ এপ্রিল পাত্রী দেখতে গিয়ে অপহরণের শিকার হন কক্সবাজার চৌফলদন্ডী উত্তরপাড়ার মোহাম্মদ আলমের ছেলে জমির হোসেন রুবেল, তার দুই বন্ধু ঈদগাঁও উপজেলার জালালাবাদ সওদাগর পাড়া এলাকার মোহাম্মদ ইউছুপ ও কক্সবাজার শহরের নুনিয়াছড়া এলাকার ইমরান। ২৪ মে টেকনাফ পাহাড়ি এলাকায় অভিযান চালিয়ে তিনটি গলিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা এখন পুলিশের রিমান্ডে রয়েছে। এর মধ্যে শুক্রবার লেদা রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে পাঁচ জনকে অপহরণ করা হয়। শনিবার রাতে এক যুবকের হাতের কব্জি কেটে বিচ্ছিন্ন করে ফেলে। পরে ওই হাতসহ তাকে ফেরত পাঠায়। অপর চার জনের কাছে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে আসছে অপহরণকারীরা।