ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে পাঠদান

মিরসরাইয়ে গোপীনাথপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়

রাজু কুমার দে, মিরসরাই »

চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার গোপীনাথপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে পাঠদান করানো হচ্ছে। এতে সব সময় আতংকে থাকে শিক্ষার্থীরা। এ বিষয়ে শঙ্কিত অভিভাবকসহ সচেতন মহল।

জানা গেছে, উপজেলার জেরারগঞ্জ ইউনিয়নের গোপীনাথপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী রয়েছে ১২০ জন। ১৯১৯ সাথে স্থাপিত হওয়া শতবর্ষী বিদ্যাপীঠটিতে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের শ্রেণিকক্ষে চলছে শিক্ষার্থীদের পাঠদান। সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার জোরারগঞ্জ ইউনিয়নের গোপীনাথপুর ওই বিদ্যালয়ের পুরাতন ভবনটি জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে। দেয়ালের রং উঠে গেছে, পিলার ও দেয়ালে ফাটল দেখা দিয়েছে। মেঝে ও ছাদের পলেস্তারা খসে পড়েছে। বৃষ্টি হলে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান ব্যাহত হয়। পাঠ চলাকালে ঝুঁকিতে থাকে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জীবন। স্থানীয়দের দাবি, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় বিদ্যালয় ভবনের এই বেহাল দশা।

বর্তমানে নতুন ভবনের তিনটি কক্ষের মধ্যে একটি কক্ষ শিক্ষকদের জন্য এবং অন্য দুটি কক্ষে প্রাক্ প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠদান কার্যক্রম চলে। ফলে শ্রেণিকক্ষ সংকটের কারণে বাধ্য হয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে নিজেদের ও শিক্ষার্থীদের জীবনের ঝুঁকি নিয়েই পাঠদান করাতে বাধ্য হচ্ছেন বলে দাবি করেন শিক্ষকরা।

বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী অর্ণব বলে, ‘আমাদের শ্রেণিকক্ষ খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। যেকোনো সময় ফ্যান ও পলেস্তারা খসে মাথায় পড়তে পারে। ক্লাস চলাকালে পুরোটা সময় আতঙ্কে থাকি আমরা।’

জোরারগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য কাশেদুল ইকবাল জানান, ‘বিদ্যালয় ভবনের যে অবস্থা যেকোনো মূহূর্তে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

গোপীনাথপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জিতেন্দ্র প্রসাদ বড়–য়া বলেন, ‘এই বিদ্যালয়ে প্রাক্ প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ১২০ জন শিক্ষার্থী আছে। শ্রেণিকক্ষের সংকট থাকায় বাধ্য হয়েই ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে প্রাক্ প্রাথমিক ও চতুর্থ শ্রেণির পাঠদান করাতে হচ্ছে। আমরা শীঘ্রই বিদ্যালয়ের নতুন ভবন ও ওয়াশ ব্লক স্থাপনের জন্য আবেদন করবো।’

এ ব্যাপারে মিরসরাই উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এ কে এম ফজলুল হক বলেন, ‘ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে পাঠদান বিষয়ে অবগত হয়েছি। উপজেলা প্রকৌশলীসহ আমি সরেজমিনে পরিদর্শন করে নতুন ভবনের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট চাহিদাপত্র পাঠানো হবে।’

এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহফুজা জেরিন বলেন, ‘শিশু শিক্ষার্থীদের ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে ক্লাস নিতে নিষেধ করা হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণের জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’