জাতীয় ক্রিকেটদল ধারাবাহিক ব্যর্থতার শেষ কোথায়

নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে হার একটা অন্তঃসারশূন্য দলের ধারাবাহিক ব্যর্থতার করুণ চিত্র তুলে ধরেছে। ২৩০ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে ডাচদের বিপক্ষে ন্যূনতম প্রতিদ্বন্দ্বিতাও গড়তে পারেনি বাংলাদেশ। গ্লানিমাখা এ হারের পর বাংলাদেশের ক্রিকেটমোদীদের মনে চরম হতাশা দেখা দিয়েছে ভবিষ্যৎ নিয়ে।
বিশ্বকাপ শুরু হওয়ার অনেক আগে থেকেই বাংলাদেশের স্কোয়াড নির্বাচন, অধিনায়কত্ব, তামিম ইকবালের অবসর ও ফিরে আসা ইত্যাদি নানা ইস্যুতে বিতর্ক চলছিল। তাতে সার্বিকভাবে টুর্নামেন্টের জন্য দলের প্রস্তুতি কিছুটা হলেও ব্যাহত হয়েছে বলে মনে করেন অভিজ্ঞজনেরা।
কিন্তু শেষ পর্যন্ত যে পনেরো জনের স্কোয়াড বিশ্বকাপ খেলতে ভারতে যায় তাদের কাছ থেকে সামান্য হলেও প্রত্যাশা করেছিল দেশ। অতীতে বিশ্বকাপের মতো বড় আসরে বাংলাদেশ দু’তিনটে বড় দলকে হারিয়ে চমক দিলেও এবারে আফগানিস্তান ছাড়া আর কোনও ম্যাচেই তারা এখন পর্যন্ত জেতা তো দূরের কথা শক্ত প্রতিযোগিতাই গড়ে তুলতে পারেনি।
বাংলাদেশের টপ অর্ডার ও মিডল অর্ডারের ধারাবাহিক ব্যর্থতা যে বিশ্বকাপে বাংলাদেশকে সবচেয়ে বেশি ভোগাচ্ছে সে আর বলার অপেক্ষা রাখে না। ভারতের বিরুদ্ধে ম্যাচেই শুধুমাত্র বাংলাদেশের ওপেনিং জুটি ৯৩ রানের একটি পার্টনারশিপ খেলেছিল। এরপর চারটি ম্যাচেই দলের টপ অর্ডার বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে।
বাংলাদেশ নিয়ে আন্তর্জাতিক ভাষ্যকারেরাও মন্তব্য করতে ছাড়ছেন না। ভারতের হার্শা ভোগলে বলেছেন, ‘বাংলাদেশ কি এখনও বুঝতে পেরেছে তাদের সেরা ব্যাটিং অর্ডার কোনটা? না কি তারা এখনও পরীক্ষানিরীক্ষা চালিয়েই যাবে?
বাংলাদেশ টিম যে মাহমুদুল্লার মতো একজন ক্রিকেটারকে বিশ্বকাপে সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারেনি, সে বিষয়ে ভারতের ক্রিকেট বিশ্লেষক জয় ভট্টাচার্য ‘ক্রিকবাজ’ সাইটকে বলতে গিয়ে বলেছেন, ‘আপনি যদি মাহমুদুল্লাহকে স্কোয়াডে না রাখতেন, তাহলে অন্য কথা। কিন্তু তাকে দলে পিক করার পর যেভাবে কাজে লাগাচ্ছেন সেটার মধ্যে কোনও মাথামুণ্ডু নেই।’
ক্রিকেটকে বলা হয়ে থাকে অনিশ্চয়তার খেলা। আর বাংলাদেশের ব্যাপারে বলা হতো ‘আনপেডিকটেবল’। এখন কী বলতে হবে তা বলার আগে দুবার ভাবতে হবে। এখন শেষ পর্যন্ত কী দাঁড়াল? এত এত দেশি-বিদেশি কোচ, এত বোর্ড, এত নির্বাচক পুষে বাংলাদেশ কী অর্জন করল? বাংলাদেশের মানুষ ক্রিকেটকে, ক্রিকেটদলকে প্রাণ উজাড় করে ভালোবাসা দিয়েছে। দেশের প্রধানমন্ত্রী নিজে সবসময় জাতীয় দলের পক্ষে থেকেছেন। তাদের জন্য বহুকিছু করেছেন। এখন প্রশ্ন তোলা যায় তার বিনিময়ে পাওয়া কি যথার্থ? এই ধারাবাহিক পতনের তাহলে শেষ কোথায়?