চিনিসহ সব ধরনের পণ্য মূল্য স্থিতিশীল রাখতে হবে

চলতি এপ্রিল মাসের ৬ তারিখ চিনির বাজার দর নির্ধারণ করে দেন সরকার। পরিশোধিত খোলা চিনির সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছিল কেজিতে ১০৪ টাকা। আর পরিশোধিত প্যাকেটজাত চিনির দাম নির্ধারণ করা হয়েছিল কেজিতে ১০৯ টাকা। যা চলতি মাসের ৮ তারিখ থেকে কার্যকর হওয়ার কথা থাকলেও বিশ দিন পার হলেও সেই দাম কার্যকর হয়নি। বরং দাম বেড়েছে দফায় দফায়। অস্থির চিনির বাজারে এক সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে কেজিপ্রতি ৫ থেকে ১০ টাকা। দিন দিন এ পণ্যের দাম কেন বাড়ছে জানেন না ব্যবসায়ীরা। ক্রেতারা দুষছেন বাজার তদারকি প্রতিষ্ঠানগুলোকে।
সুপ্রভাতের রিপোর্ট থেকে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার খাতুনগঞ্জ, রেয়াজউদ্দিন ও বকসির হাটের খুচরা বাজারে খোলা চিনি বিক্রি হয়েছে কেজিপ্রতি ১২৮ থেকে ১৩০ টাকা। যা গত সপ্তাহে ঈদকে কেন্দ্র করে খুচরা বাজারে বিক্রি হয়েছিল ১২০ থেকে ১২৫ টাকা।
বৃহস্পতিবার খাতুনগঞ্জ, রেয়াজউদ্দিন ও বকসির হাটের খুচরা বাজারে খোলা চিনি বিক্রি হয়েছে কেজিপ্রতি ১২৮ থেকে ১৩০ টাকা। যা গত সপ্তাহে ঈদকে কেন্দ্র করে খুচরা বাজারে বিক্রি হয়েছিল ১২০ থেকে ১২৫ টাকা।
বকসির হাটের একজন ব্যবসায়ী সুপ্রভাতকে বলেন, আমরা খাতুনগঞ্জ থেকে কিনেছি ১১৫ টাকার উপরে। যার ফলে খরচাদি হিসেব করে আমাদেরকে ১২৮ টাকার উপরে বিক্রি করতে হচ্ছে।
চাক্তাই এলাকায় খুচরা মুদির দোকানে চিনি কিনতে আসা এক ব্যক্তি বলেন, রমজানের শুরুতে নিত্যপণ্যের বাজারে বেশ কিছু অভিযান চললেও ২০ রোজার পর তেমন দেখিনি। প্রশাসনের অনুপস্থিতির সুযোগে ব্যবসায়ীরা নিত্যপণ্যের বাজারকে অস্থির করার চেষ্টা করছে। চিনি ১২০ থেকে ১২৫ টাকা বিক্রি হচ্ছে রমজানের মাঝামাঝি থেকে। কিন্তু বৃহস্পতিবার থেকে ব্যবসায়ীরা ১২৮ থেকে ১৩০ টাকার উপরে চিনি বিক্রি করছে।
চিনির বাজার তদারকির বিষয়ে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের একজন কর্মকর্তা জানান, সরকার চিনির বাজার দর নির্ধারণ করে দেওয়ার পর কয়েকটি অভিযান পরিচালনা করেছি। এরপর নির্দেশনার কারণে আমাদেরকে ঈদ মার্কেট তদারকি ব্যস্ত থাকতে হয়েছে। তবে ইতিমধ্যে চিনির বাজারের অস্থিরতা নিয়ে বেশকিছু অভিযোগ আমাদের হাতে এসেছে। আমরা শীঘ্রই অভিযান পরিচালনা করবো।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজার নিয়ন্ত্রণ করে উৎপাদনকারী ও পাইকাররা। তাদের থেকে যে দামে কেনা হয়, সেই অনুযায়ী সাধারণ ভোক্তা পর্যায়ে বিক্রি করা হয়। চিনির মূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে পাইকারি ব্যবসায়ী ও খুচরা ব্যবসায়ীরা পরস্পরের ওপর দোষারোপ করে থাকেন। এভাবে একপক্ষ অপরপক্ষকে দোষারোপ করলেও এটি যে মূলত ব্যবসায়ীদের একচেটিয়া বাজার নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা, এতে কোনো সন্দেহ নেই। অসাধু ব্যবসায়ীরা পকেট স্ফীত করার বাইরে অন্য কিছু ভাবেন না; জনস্বার্থকে মোটেই গুরুত্ব দেন না। এহেন আচরণ ও কর্মকা- অযৌক্তিক; অমানবিকও বটে।
লোকঠকানো মানসিকতা পরিহার করে চিনিসহ সব ধরনের পণ্য ও সেবার মূল্য স্থিতিশীল রাখতে ব্যবসায়ী সমাজ আন্তরিকতার পরিচয় দেবে, এটাই প্রত্যাশা।