চাপে পড়ে বীমার টাকা দেবেন না: প্রধানমন্ত্রী

সুপ্রভাত ডেস্ক »

কোনো দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের বীমার অর্থ ছাড়ের ক্ষেত্রে সঠিক তদন্ত করে ক্ষয়ক্ষতি যাচাই করতে বীমা কোম্পানিগুলোকে পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় বীমা দিবসের অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, বীমার অর্থ দাবির ক্ষেত্রে মিথ্যা তথ্য দেয় স্বার্থান্বেষী মহল। কতটুকু ক্ষতি হল তার যথাযথভাবে তদন্ত হওয়া দরকার। খবর বিডিনিউজ।

যথাযথভাবে তদন্ত ছাড়াও কারো চাপে পড়ে টাকা না দিতেও বীমা কোম্পানিগুলোকে সরকারপ্রধান সতর্ক করেন বলে বাসস জানিয়েছে।

একটা সময় তৈরি পোশাক কারখানায় ঘন ঘন অগ্নিকা- হত জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘ঘন ঘন একটা জায়গায় আগুন লাগবে কেন? ইন্সুরেন্সের দাবিদার হয়ে যায়, টাকা পায়। সেক্ষেত্রে আমার অনুরোধ থাকবে, বিভিন্ন ইন্সুরেন্স কোম্পানি এবং কর্তৃপক্ষ করে দিয়েছি, তাদের এ ব্যাপারে একটু সতর্ক থাকা দরকার। কতটুকু ক্ষতি হল তার যথাযথভাবে তদন্ত হওয়া দরকার।

‘ইচ্ছাকৃতভাবে’ অগ্নিকা- ঘটিয়ে বীমার মোটা অঙ্কের টাকা দাবির প্রমাণ পাওয়ার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, একটি কোম্পানির এক নারী কর্মীকে দিয়ে ২০ হাজার টাকার বিনিময়ে অগ্নিকা- ঘটায় বলেও তদন্তে বেরিয়েছে।

যথাযথ তদন্ত না করে বা প্রভাবশালীদের চাপের মুখে অগ্নিকা-ে কোনো সম্পত্তির ক্ষতির জন্য বীমার অর্থ ছাড় না করতে পরামর্শ দেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, কারো চাপের কাছে আপনারা মাথা নত করবেন না দয়া করে। আমিই বলেন বা আমাদের মন্ত্রিপরিষদের সদস্যদের কাছে নানা ধরনের লোক আসে, তদবিরও করতে পারে, সেক্ষেত্রেও আপনাদের দেখতে হবে প্রকৃত ক্ষতি কতটুকু। দাবিদার দাবি করবে বড় একটা, কিন্তু তার প্রকৃত ক্ষতি যাচাই-বাছাই করেই আপনারা অর্থ পরিশোধ করবেন।

প্রধানমন্ত্রী প্রশ্ন রাখেন, সেটা (সঠিক তদন্ত) কেন করা হয় না? তাহলে কি আমি মনে করব যারা তদন্ত করতে আসে তারাও এর ভাগিদার? তাদেরও কোনো হাত আছে কি-না সেটাও তো আমার সন্দেহ হচ্ছে। সেটা আপনাদের দেখতে হবে।’

উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ‘একটি ফ্ল্যাটে আগুন লাগার ক্ষেত্রে ৪০ কোটি টাকার বীমা দাবির তথ্য-প্রমাণ আমার কাছে আছে। একটি ফ্লাটে ৪০ কোটি টাকার কী সম্পদ থাকতে পারে। কত সম্পদ একটা ফ্ল্যাটের মালিকের কাছে আছে যে, তার ৪০ কোটি টাকার ক্ষতি হল, আর বীমা থেকে টাকা তুলে নিয়ে গেল।

‘অন্যদিকে যার ঘর সবচেয়ে বেশি পুড়ল তার বীমাও নাই, সে কিছুই পেল না। এসব বিষয়ে সকলকে একটু নজর দিতে হবে।’

১৯৬০ সালের ১ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তৎকালীন আলফা ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে কাজ শুরু করেন। তাই সরকার প্রতিবছর ১ মার্চকে জাতীয় বীমা দিবস হিসেবে পালন করে আসছে।

জীবন বীমা করপোরেশন এবং সাধারণ বীমা করপোরেশন নামে দুটি সরকারি বীমা প্রতিষ্ঠান রয়েছে দেশে। বাংলাদেশ সরকারের সরাসরি তত্ত্বাবধানে এই বীমা প্রতিষ্ঠান দুটি পরিচালিত হয়। সেইসঙ্গে দেশের বীমা খাতের নিয়ন্ত্রণ ও উন্নয়নে কাজ করে আসছে সরকারি নিয়ন্ত্রক সংস্থা ‘বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ’ বা আইডিআরএ।

অর্থমন্ত্রণালয় এবং আইডিআরএ যৌথভাবে জাতীয় বীমা দিবস-২০২৩ এর অনুষ্ঠান আয়োজন করে। মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব শেখ মোহাম্মদ সলীম উল্লাহ, আইডিআরএ এর চেয়ারম্যান জয়নুল বারী এবং বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিআইএ) সভাপতি শেখ কবির হোসেন অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।