চট্টগ্রামে জিপিএ-৫ ও পাশের হারে রেকর্ড

২০০৯ সালে সর্বোচ্চ পাশের হার ছিল ৭৬ দশমিক ৩৯ শতাংশ

নিজস্ব প্রতিবেদক »

১৯৯৬ সালে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের অধীনে পাবলিক পরীক্ষা শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ পাশের হার ৭৬ দশমিক ৩৯ শতাংশ ছিল ২০০৯ সালে। এবছর তা অতিক্রম করে ৮৯ দশমিক ৩৯ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।

অপরদিকে জিপিএ-৫ প্রাপ্তির ইতিহাসে গত বছর অটোপাশের সময়ে সবচেয়ে বেশি ছিল ১২ হাজার ১৪৩ জন। এবার তাও পেছনে ফেলে ১৩ হাজার ৭২০ এ গিয়ে পৌঁছেছে। অর্থাৎ বোর্ডের ইতিহাসে রেকর্ড পাশ ও জিপিএ-৫ পেলো চট্টগ্রাম।

করোনার কারণে গত এপ্রিলের নির্দিষ্ট পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে ২ ডিসেম্বর থেকে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে। এই ফলাফল গতকাল প্রকাশিত হয়। বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের তিনটি বিষয়ের তিন নৈর্বাচনিক বিষয়ে ৫০ নম্বরের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

পরীক্ষার ফলাফলে দেখা যায়, ২৬৭ কলেজের বোর্ডের আওতাধীন ১ লাখ ১ হাজার ২৫১ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাশ করেছে ৮৯ হাজার ৬২ জন। এরমধ্যে বিজ্ঞানে পাশের হার ৯২ দশমিক ২০ শতাংশ, মানবিকে ৮৮ দশমিক ৭৬ শতাংশ এবং ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে ৮৮ দশমিক ৫৮ শতাংশ। ১৩ হাজার ৭২০ জিপিএ-৫ এর মধ্যে বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীরা পেয়েছে ৯ হাজার ৭০৭টি, মানবিকের শিক্ষার্থীরা ১ হাজার ৩৩৮টি এবং ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের শিক্ষার্থীরা ২ হাজার ৬৭৫টি।
জেলা ভিত্তিক ফলাফলে দেখা যায়, চট্টগ্রাম মহানগরে পাশের হার ৯৩ দশমিক ৬২ শতাংশ। মহানগর বাদে জেলায় পাশের হার ৮৮ দশমিক ২২ শতাংশ, মহানগরসহ জেলায় পাশের হার ৯০ দশমিক ৭২ শতাংশ, কক্সবাজারে পাশের হার ৮৬ দশমিক ৮৮ শতাংশ, রাঙামাটিতে পাশের হার ৮১ দশমিক ৬২ শতাংশ, খাগড়াছড়িতে পাশের হার ৮৩ দশমিক ২১ শতাংশ ও বান্দরবানে পাশের হার ৯১ দশমিক ৭৩ শতাংশ।
১৩ হাজার ৭২০টি জিপিএ-৫ এর মধ্যে ৯ হাজার ৭০৭ বিজ্ঞানের শিক্ষার্থী। ১ হাজার ৩৩৮ মানবিকের শিক্ষার্থীরা এবং ২ হাজার ৬৭৫ জন ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের শিক্ষার্থী। এরমধ্যে ৬ হাজার ৫০ জন পেয়েছে ছাত্ররা এবং ৭ হাজার ৬৭০ জিপিএ-৫ পেয়েছে ছাত্রীরা।

ফলাফল প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক নারায়ন চন্দ্র নাথ বলেন, করোনার কারণে এবার প্রতিটি গ্রুপে তিনটি নৈর্বাচনিক বিষয়ে পরীক্ষা হয়েছে। বিষয় কম হওয়ায় শিক্ষার্থীরা সঠিকভাবে পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে পেরেছে এবং ফলাফল ভালো হয়েছে।
১৬ কলেজে শতভাগ পাশ

এবার তিনটি বিষয়ে পরীক্ষা হলেও শতভাগ পাশ করেছে ১৬টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। কলেজগুলো হলো চট্টগ্রাম কলেজ (পরীক্ষার্থী ১০৪০ জন), ক্যামব্রিয়ান কলেজ (পরীক্ষার্থী ২৩৮ জন), হালিশহর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজ ( পরীক্ষার্থী ২২৫ জন), ক্যান্টনমেন্ট ইংলিশ স্কুল অ্যান্ড কলেজ (পরীক্ষার্থী ২১৫ জন), চিটাগং কলেজিয়েট স্কুল (পরীক্ষার্থী ১৬৯ জন), সেন্ট প্লাসিড স্কুল অ্যান্ড কলেজ ( পরীক্ষার্থী ১১০ জন), বাংলাদেশ নৌ বাহিনী স্কুল অ্যান্ড কলেজ কাপ্তাই (পরীক্ষার্থী ১০৮ জন), লামার কোয়ান্টাম কসমো কলেজ (পরীক্ষার্থী ৭৮ জন), ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজ (পরীক্ষার্থী ৫০ জন), সেন্ট স্কলাসটিকাস গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ (পরীক্ষার্থী ৪৩ জন), কাফকো স্কুল অ্যান্ড কলেজ (পরীক্ষার্থী ৩৪ জন), সাউথপয়েন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজ (পরীক্ষার্থী ১১ জন), বিয়াম ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজ কক্সবাজার (পরীক্ষার্থী ৭ জন), মেরন সান কলেজ (পরীক্ষার্থী ৬ জন), পশ্চিম কদুরখীল স্কুল অ্যান্ড কলেজ (পরীক্ষার্থী ২ জন), চিটাগং ল্যাবরেটরি কলেজ (পরীক্ষার্থী ১ জন)।
দুই কলেজে কেউ পাশ করেনি

চিটাগং আইডিয়াল স্কুল কলেজ থেকে একজন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়েছিল সে ফেল করেছে। এছাড়া মহালছড়ির বুদ্ধ শিশুঘর হাইস্কুল এন্ড কলেজ থেকে চারজন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়েছিল তারা সবাই ফেল করেছে।

পাশের হারে সবার শেষে চট্টগ্রাম

৮টি সাধারণ শিক্ষাবোর্ডে এইচএসসি পরীক্ষায় পাশের হারে সবার শেষে অবস্থান করছে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ড। এই বোর্ডের পাশের হার ৮৯ দশমিক ৩৯ শতাংশ। অপরদিকে সবার উপরে অবস্থান করছে যশোর শিক্ষাবোর্ড। যশোরে পাশের হার ৯৮ দশমিক ১১ শতাংশ। এছাড়া কুমিল্লায় ৯৭ দশমিক ৪৯ শতাংশ, রাজশাহীতে পাশের হার ৯৭ দশমিক ২৯ শতাংশ, ঢাকায় ৯৬ দশমিক ৫২ শতাংশ, বরিশালে ৯৫ দশমিক ৭৬ শতাংশ, ময়মনসিংহে ৯৫ দশমিক ৭১ শতাংশ, সিলেটে ৯৪ দশমিক ৮০ শতাংশ, দিনাজপুরে ৯২ দশমিক ৪৩ শতাংশ। এছাড়া মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ডে ৯৫ দশমিক ৪৯ শতাংশ এং কারিগরি শিক্ষাবোর্ডে ৯২ দশমিক ৮৫ শতাংশ পাশ করেছে।