গোলাপ চাষ খুলে দিতে পারে নতুন দুয়ার

আজ বিশ্ব ভালোবাসা দিবস। আর ভালোবাসার প্রধান প্রতীক হলো ফুল। ফুল ভালোবাসে না এমন মানুষ বোধ হয় পৃথিবীতে পাওয়া যাবে না। অতীতকালে ফুল কেবল মানুষের মনের ক্ষুধা মেটালেও, আজকের দিনে বাণিজ্যের এই বিশ্বে ফুল থেকে উপার্জিত আয়ে অনেকেরই পেটের ক্ষুধা মিটছে। কৃষিপ্রধান দেশ হওয়ায় বাংলাদেশে ফুল চাষের সম্ভাবনা বিশাল এবং এই খাত থেকে বিরাট অঙ্কের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব।
গোলাপের সৌন্দর্যের ডালি নিয়ে বসেছে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার গোলাপপল্লী বরইতলী গ্রাম। এই গ্রামের অধিকাংশ মানুষের জীবিকার প্রধান উৎস গোলাপসহ নানা ফুলের চাষ। বিষয়টি নিয়ে গতকাল সুপ্রভাতে একটি প্রতিবেদন ছাপা হয়েছে। স্থানীয় কৃষি বিভাগ বলছে, বরইতলীর একশো একর বাগানের গোলাপ বিক্রি করে প্রতি বছর আয় হয় ৩ কোটি টাকারও বেশি।
অর্থনৈতিকভাবে গুরুত্ব বৃদ্ধির ফলে সরকারিভাবে ফুল চাষের ব্যাপারে কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হলেও তা খুবই অপর্যাপ্ত। খাতটির সম্ভাবনার তুলনায় তা একেবারেই নগণ্য। আধুনিক প্রযুক্তি, ফুলের জাত উন্নয়ন, সংরক্ষণের ব্যবস্থা, প্রক্রিয়াকরণ, পরিবহন ইত্যাদি বিষয়ের দিকে সরকারি আগ্রহ এবং নজরদারি না বাড়ালে আমাদের এই সম্ভাবনাময় খাতটি খুব বেশি দূর যেতে পারবে না।
মালয়েশিয়ার ফুলের বাণিজ্যিক খামারগুলো স্বয়ংসম্পূর্ণ। একেক উপত্যকায় চাষ হচ্ছে একেক ফুলের। চাষ থেকে শুরু করে প্যাকিং ও পরিবহন ব্যবস্থা রয়েছে নিজস্ব। চট্টগ্রামের পার্বত্য অঞ্চলে এমন অনেক অনাবাদি উপত্যকা আছে, যেগুলোতে মালয়েশিয়ার অনুরূপ খামার করা সম্ভব। প্রায় একই রকম জলবায়ু ও প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্যে মালয়েশিয়া-থাইল্যান্ড বছরে ১০-২০ মিলিয়ন ডলারের ফুল রপ্তানি করে। পর্যাপ্ত উদ্যোগ থাকলে রপ্তানিতে আমরা তাদের ছাড়িয়ে যেতে পারি।
বাংলাদেশ থেকে বিশ্ববাজারে রপ্তানি করা ফুলের মধ্যে বেশির ভাগই গোলাপ। অন্যান্য দেশের তুলনায় আমাদের গোলাপের মান ভালো হওয়ায় আন্তর্জাতিক বাজারে এর চাহিদাও বেশি। ফলে, গোলাপ চাষের ভালো সম্ভাবনা রয়েছে চট্টগ্রামসহ সারা বাংলাদেশে। শুধু চট্টগ্রাম ও ঢাকার বাজারে প্রতিদিন লাখ লাখ গোলাপ বেচাকেনা হয়। বেসরকারি উদ্যোগ ও সরকারের কার্যক্রমের সমন্বয়ে আমাদের এই খাত দ্রুত বৈদেশিক আয়ের আরেকটি দুয়ার খুলে দিতে পারে।