খাতুনগঞ্জে মসলার বাজার চড়া

নিজস্ব প্রতিবেদক »

ভোগ্যপণ্যের বৃহত্তম বাজার চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে দাম বেড়েছে অধিকাংশ মসলার। গত ১৫ দিনের ব্যবধানে পাইকারিতে বিভিন্ন ধরনের মসলার দাম কেজিপ্রতি ৩০ থেকে ৫০ টাকা বেড়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে মসলা পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ার পেছনে আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যটির বুকিং দর, জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি, পরিবহন খরচ বৃদ্ধিকে দায়ী করছে আমদানিকারকরা।
তবে পাইকারী ব্যবসায়ীরা বলছেন বাড়তি বুকিং দর ও পরিবহন খরচ বৃদ্ধির কেনা মসলা এখনো দেশে পৌঁছায়নি। এর আগেই বাড়তি চাহিদার অজুহাত কাজে লাগিয়ে মসলার দাম বাড়ানো হয়েছে।
গতকাল সোমবার খাতুনগঞ্জ বাজারে মসলার আড়তগুলো ঘুরে দেখা যায় ভারত থেকে আমদানি করা প্রতি কেজি এলাচে ৮০০ টাকা বেড়ে ২ হাজার ৬শ, লবঙ্গে ১৪০ টাকা বেড়ে ১ হাজার ২০০, জিরায় ১২০ টাকা বেড়ে ৫০০, শুকনা মরিচ ৮০ টাকা বেড়ে ৩৮০, দারুচিনির কেজিতে ১২০ টাকা বেড়ে ৫০০, রসুন কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে ১২০ টাকা, তেজপাতা ২২০, গোলমরিচ ৮০০, আলু বোখরা ৪০০, জায়ফল ৫৮০, ও জয়তি ২ হাজার ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
জুলাই মাসে প্রতিকেজি এলাচ ১ হাজার ৮০০, দারুচিনি ৪০০, জিরা ৩৮০, লবঙ্গ ৯০০ ও শুকনা মরিচ ২৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল।
এদিকে চাল-চিনি-ডাল-আটার বাজারে এখনো স্বস্তি ফেরেনি। প্রতি কেজি মোটা চাল ৬০, মিনিকেট ৭৬ থেকে ৮০, নাজিরশাইল ৮০ থেকে ৯০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। প্রতিকেজি চিনি ৮৮, চিকন মসুর ডাল প্রতিকেজি ১২০ থেকে ১৪০ টাকা, মোটা মসুর ডাল ১০০ থেকে ১১০ টাকা, খোলা আটা ৫০ টাকা এবং প্যাকেট আটা ১১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
স্থানীয় পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানান, দেশজুড়ে সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠান বেড়ে যাওয়ায় মসলার চাহিদা বাড়ছে। এর সিংহভাগই পূরণ করা হয় আমদানির মাধ্যমে। ভারত থেকে বিভিন্ন স্থলবন্দর দিয়ে মসলাপণ্য আমদানি হয়। এছাড়া চীন, পাকিস্তান, সিরিয়া, আফগানিস্তান, কলম্বিয়া, ভিয়েতনাম, গুয়েতমালা, সিঙ্গাপুর, মাদাগাস্কার, ইন্দোনেশিয়া, মালেয়েশিয়া, শ্রীলংকা, আরব আমিরাতসহ ২৪টির বেশি দেশ থেকে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে ১২ রকমের মসলাপণ্য আমদানি করা হয়। এবারো এর ব্যতিক্রম হয়নি। একই সময় আন্তর্জাতিক বাজারে মসলাপণ্যের দাম, সকল প্রকার জ্বালানি তেল, পরিবহন খরচ ও বুকিং দর বেড়ে গেছে। এ কারণে বাড়তি দামে মসলা আমদানি করছেন আমদানিকারকরা। এর জের ধরে কিছুদিন ধরে পাইকারি পর্যায়ে মসলার দাম বাড়তি রয়েছে।
খাতুনগঞ্জের মেসার্স রহমান ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী মো. শাহ আলম বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে মসলাপণ্যের বুকিং দর, জ্বালানি খরচ ও পরিবহন খরচ বাড়লেও এ বাড়তি দরের আওতায় আমদানি করা মসলা এখনো দেশে পৌঁছায়নি। বড় আমদানিকারকরা আগেই কম দামে মসলাপণ্য আমদানি করে মজুদ করে রেখেছিলেন। এখন বাড়তি দামের সুযোগে তারা আগের আমদানি করা এসব মসলা বাজারে ছাড়ছেন। ফলে ক্রেতারা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও তাদের পকেটে বাড়তি লাভ ঢুকছে। কিছুদিনের মধ্যে বাড়তি বুকিং দরে আমদানি করা মসলা বাজারজাত শুরু হলে পণ্যগুলোর দাম আরো বাড়তে পারে বলে ধারণা করছেন তিনি।