কলেজছাত্রের দেহাবশেষ উদ্ধার আসামি ছিনিয়ে হত্যা

অপহরণকারীরা পূর্বপরিচিত

নিজস্ব প্রতিনিধি, রাউজান »

রাউজানে অপহরণের ১৪ দিন পর কলেজছাত্রের খ-িত দেহাবশেষ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল ভোরে অপহরণকারী চক্রের মূলহোতা উমংচিং মারমাকে (২৬) পুলিশ গ্রেফতার করে। তার দেওয়া তথ্যমতে রাউজানের কদলপুর ইউনিয়নের আশরফ শাহ মাজার থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে রাঙামাটি জেলার কাউখালী উপজেলার গহিন অরণ্যে অপহৃত শিবলী সাদিক হৃদয়ের লাশের কঙ্কাল ও তার কাপড় উদ্ধার করে পুলিশ। ওই স্থানে তার দেহাংশ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ছিল। এ সময় পুলিশের সঙ্গে যাওয়া শিবলীর পরিবারের সদস্যরা দেহাবশেষ শনাক্ত করে।

এদিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ মরদেহ উদ্ধারের পর অভিযুক্ত উমংচিং মারমাকে নিয়ে ফেরার পথে উত্তেজিত জনতার রোষানলে পড়ে। তারা ওই যুবককে ছিনিয়ে নিয়ে গণপিটুনি দিলে ঘটনাস্থলে তার মৃত্যু হয়। এ সময় তিন পুলিশ সদস্যও আহত হন। ভাঙচুর করা হয় পুলিশের গাড়ি।

রাউজান থানার ওসি আবদুল্লাহ আল হারুন বলেন, শিবলী সাদিক হৃদয়ের অপহরণ ঘটনায় পুলিশ অভিযান চালিয়ে কাউখালী উপজেলার বেতবুনিয়া ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সাপমারা গ্রামের উহ্লাপ্রুমং মারমার পুত্র আছুমং মারমা (২৬) ও কাপ্তাই উপজেলার চিৎমরং ইউনিয়নের আমতলী পাড়া গ্রামের উষাচিং মারমার পুত্র উক্যথোয়াই মারমাকে (১৯) গ্রেফতার করে। এরপর দুই আসামির দেয়া তথ্যমতে ঘটনার মূলহোতা উমংচিং মারমাকে (২৬) গ্রেফতার করা হয়।

তার দেওয়া তথ্যমতে, রাউজানের কদলপুর পাহাড়ি এলাকা থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে কাউখালী উপজেলার গহিন অরণ্য থেকে শিবলী সাদিকের লাশের কঙ্কালের হাড়গোড় উদ্ধার করা হয়। পুলিশ ফিরে আসার পথে কদলপুর মোল্লাপাড়া এলাকায় আসলে উত্তেজিত জনতা পুলিশের গাড়ি আটক করে গাড়ি থেকে আসামিকে ছিনিয়ে নেয়। এ সময় কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হয়। পুলিশের গাড়ি থেকে আসামিকে নামিয়ে গণপিটুনি দেয়া হয়। এতে অপহরণ ঘটনার মূলহোতা উমংচিং মারমার মৃত্যু হয়।

গত ২৮ আগস্ট রাতে শিবলী সাদিক হৃদয়কে রাউজানের কদলপুর ইউনিয়নের পাহাড়ি এলাকার মুরগির খামার থেকে অপহরণ করে দুর্বৃত্তরা। অপহৃত কলেজ শিক্ষার্থী হৃদয় উপজেলার ৮ নম্বর কদলপুর ইউনিয়নের মো. শফিক ড্রাইভারের ছেলে। সে কদলপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী ছিল। পড়াশোনার পাশাপাশি স্থানীয় চেয়ারম্যান নেজাম উদ্দিন চৌধুরীসহ চারজনের মালিকানাধীন মুরগির খামারে ম্যানেজার হিসেবে চাকরি করত।

পরিবার সূত্রে জানা গেছে, শিবলী যে মুরগির খামারে চাকরি করতো সেখানে কয়েকজন চাকমা যুবক চাকরি করতো। এসব যুবকের দেখাশোনার দায়িত্বে ছিল শিবলী। সেখানে ২ মাস আগে সেই যুবকদের সঙ্গে তার বিবাদ হয়। পরে খামারের মালিকরা তাদের মিটমাট করে দেন। এরপর তারা বুঝতে পারেনি শিবলীর সঙ্গে কাজ করা যুবকরা অপহরণ করবে। অপহরণের কিছুদিন পর শিবলীর বাবা শফি বান্দরবান এলাকায় ডুলাপাড়া নামক স্থানে গিয়ে ২ জন লোকের হাতে দুই লাখ টাকা তুলে দেন। কিন্তু টাকা দেওয়ার পরও সন্তানকে তারা ফেরত দেয়নি। ১৪ দিন উদ্ধার হলো তার খণ্ডিত লাশ।