এটা কি সকলের অজান্তে ষড়যন্ত্রের প্রথম ধাপ উন্মোচন?

আবদুল মান্নান »
প্রধানমন্ত্রী বেশ কিছুদিন ধরে দেশে ছিলেন না। গত মাসের ৩০ তারিখ জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কিত একটি গুরুত্বপূর্ণ সম্মেলনে যোগ দিতে গিয়েছিলেন স্কটল্যান্ডের গ্লাসগো শহরে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই সম্মেলনে বিশ্ব উষ্ণায়নের কারণে যে আটচল্লিশটি দেশ মারাত্মক ঝুঁকিতে রয়েছে তাদের পক্ষে কথা বলেন। বিশ্বের যে সকল দেশ এই উষ্ণায়নের জন্য দায়ী সেই সকল দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানরাও এই সম্মেলনে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রেখেছেন।
এ ছাড়াও বক্তব্য রেখেছেন বিশ্বের অনেক গুরুত্বপূর্ণ নেতা। গ্লাসগোর পর শেখ হাসিনা লন্ডন ও প্যারিস সফর শেষে তিনি দেশে ফিরবেন সোমবার। প্রধানমন্ত্রীর অনুপস্থিতিতে দেশে ঘটে গেলো ডিজেলের আর কেরোসিনের দাম বৃদ্ধি নিয়ে কিছু অপ্রীতিকর ঘটনা। তবে কেরোসিনের মূল্য বৃদ্ধি নিয়ে তেমন কেউ কথা বলেনি কারণ কেরোসিন জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার হয় উড়োজাহাজে।
গত বৃহস্পতিবার রাতে পূর্ব কোন ঘোষণা ছাড়াই বিপিসি ডিজেল লিটার প্রতি পনের টাকা বৃদ্ধি করে। তেলের দাম প্রায় কোন দেশেই আগাম নোটিশ দিয়ে বৃদ্ধি করা হয় না কারণ তাতে পেট্রোল পাম্পসহ যাদের তেল ধারণের সক্ষমতা আছে তারা আগাম কয়েক লক্ষ লিটার তেল বা তরল জ্বালানি মজুদ করে ফাও মুনাফা করতে পারে যা গ্যাস বা বিদ্যুতের বেলায় সম্ভব নয়।
গ্যাস বা বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির আগে জনগণের সাথে আলোচনা করা হয় যাকে বলে পাবলিক হিয়ারিং।
ডিজেলের দাম বৃদ্ধির সাথে সাথে দেশে সকল ট্রাক ও বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সিএনজি চালিত ত্রিহুইলার ভাড়া বাড়িয়ে দেয় দুই থেকে তিন গুণ। মালিকদের কাছে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে তাদেও সোজাসাপ্টা উত্তর ‘আমরা কোন ধর্মঘট করিনি, বাস চালাচ্ছি না‘।
আইন অনুযায়ী ধর্মঘট করতে হলে কম পক্ষে পনের দিনের নোটিশ দিতে হয়। এটি অনুধাবন করতে হবে পরিবহণ সেক্টরটি একটি সেবামূলক সেক্টর যেমনটি চিকিৎসা সেক্টর। এটি কোন তৈরী পোশাকের কারখানা বা সেক্টর নয় যে চাইলেই বন্ধ করে দেয়া যাবে । সাধারণ মানুষের কাছে এই দু’টির মধ্যে তফাৎটা পরিষ্কার নয়। যেটা পরিষ্কার তা হচ্ছে তারা নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দামের সাথে সাথে পরিবহণ ভাড়া বৃদ্ধিতে তাদের দুর্ভোগ বেড়েছে। এটি বুঝতে হবে এই করোনা কালে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশের দারিদ্র্যের সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। লক্ষাধিক মানুষ কর্মহীন হয়েছে, তাদের আয় কমেছে।
বছর দুই আগে ব্যাংক আমানতের উপর দেয় সুদের হার কমিয়েছে। কারণে অকারণে তারা আবার মোটা হারে সার্ভিস চার্জ কেটে নেয় মাসে মাসে।
সঞ্চয়পত্র ক্রয়ের উপর নানা বিধি নিষেধ আরোপিত হয়েছে। অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও পরিবহন সেক্টর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পরিবহন সেক্টরের সেবা যদি বন্ধ হয়ে যায় তা হলে একটি দেশ অচল হয়ে পরে। সত্তরের দশকে চিলির ঘটনা নিশ্চয় অনেক পাঠকের মনে আছে।
সেই দেশে নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় এলো মার্কসবাদি প্রেসিডেন্ট সালভাদর আলেন্দে। যুক্তরাষ্ট্রের দৌড়গোড়ায় মার্কসবাদি বামপন্থী সরকার। তা মানবে কেন যুক্তরাষ্ট্র? পঞ্চাশের দশক হতে শুরু করে যুক্তরাষ্ট্রের একটি অঘোষিত অপকর্ম ছিল অন্য দেশের রাজনীতিতে অযাচিতভাবে হস্তক্ষেপ করা। কোন একটি দেশের সরকার তাদের পছন্দ না হলে যে কোন ভাবে তাকে উৎখাত করতে হবে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর তারা প্রথমে এই কাজটি সফলতার সাথে করেছে ইরানে। চেষ্টা করেছিল কিউবায়। সফল হয় নি। তারপর ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়া, হাইতি, সাইপ্রাসসহ আফ্রিকা ও ল্যাটিন আমেরিকার অনেক দেশে তারা এই অপকর্মটি নিয়মিত বিরতি দিয়ে করেছে। একটি জনগণের দ্বারা নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে তাদের একটি তাবেদার সরকার ক্ষমতায় অধিষ্টিত করা হয়ে উঠেছিল যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান কাজ। যাদের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ উদ্ধার হবে এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোর উপর তৎকালিন সোভিয়েত ইউনিয়নের ক্রমবর্ধমান প্রভাব বন্ধ করার জন্য সে সময় যুক্তরাষ্ট্র করেনি এমন কোন অপকর্ম নেই। সবচেয়ে জনবিরোধী যে কাজটি তারা করেছে তা হল দেশে দেশে স্বৈরশাসকদের পৃষ্ঠপোষকতা করা।
ইরানে রেজা শাহ পাহলেভি, পাকিস্তানে আইউব খান, ইন্দোনেশিয়াকে জেনারেল সুহার্তো, চিলিতে জেনারেল পিনোচেট এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য।
এর মধ্যে চিলির সালভাদোর আলেন্দের উৎখাতের ঘটনাটি ছিল অভিনব ও ন্যাক্কারজনক। যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ চিলির পরিবহন সেক্টরে ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সেক্টরের শ্রমিকদের পিছনে কয়েক লক্ষ ডলার ঘুষ হিসেবে খরচ করে।
নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রখ্যাত সাংবাদিক সেইমুর হার্স ১৯৭৪ সালের ২০ সেপ্টেম্বর তার পত্রিকায় এই তথ্য প্রকাশ করেন যে সিআইএ চিলির আড়াই লক্ষ পরিবহন শ্রমিক সহ অন্যান্য শ্রমিকদের ধর্মঘটে যাওয়ার জন্য আট মিলিয়ন ডলারের বেশী ঘুষ দেয় । ১৯৭২ ও ১৯৭৩ সাল পর্যন্ত চিলির পরিবহন ও অন্যান্য সেক্টরের শ্রমিকরা ধর্মঘট চালিয়ে দেশটাকে সম্পূর্ণ অচল করে দেয়। আলেন্দে দেশ চালাতে অক্ষম এই অজুহাতে চিলির সেনা বাহিনী জেনারেল পিনোচেটের নেতৃত্বে এক সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে আলেন্দেকে ক্ষমতাচ্যুত করে তাকে হত্যা করে।
এই সংবাদ জানতে পেরে বঙ্গবন্ধু মন্তব্য করেছিলেন ‘হতে পারে আমার অবস্থাও এমনটি হবে ’। ফিরে আসি বাংলাদেশের তেলের মূল্য বৃদ্ধি আর তাকে নিয়ে রাজনীতি। যখন গ্যাসের দাম বৃদ্ধি করা হয় পরিবহন মালিকরা বলেন দেশে ৮৫ শতাংশ গণপরিবহন গ্যাসে চালিত সুতরাং ভাড়া না বাড়ালে গণপরিবহন রাস্তায় নামানো সম্ভব নয়। ভাড়া বাড়ানো হলো। আবার যেই না তেলের দাম বাড়লো সঙ্গে সঙ্গে একই মালিকরা বলে উঠেন দেশে ৮৫ শতাংশ গণপরিবহন ডিজেলে চালিত। এবার আর একটি অদ্ভুত কারবার দেখা গেলো। দেশের একজন ডাকসাইটে পরিবহন নেতা যিনি আবার সংসদ সদস্যও বটে এ বলে জানিয়ে দিলেন তিনি এই গণপরিবহন বন্ধ বা ধর্মঘট ডাকা সম্পর্কে তিনি কিছুই জানেন না। তা হলে বুঝতে হবে কার আঙ্গুলের হেলনে কোন আগাম নোটিশ ছাড়া এই জনদুর্ভোগ সৃষ্টিকারি ধর্মঘট বা গণপরিবহন বন্ধ। এখন চিকিৎসক বা যারা চিকিৎসা সেবা দেন তারা যদি হঠাৎ করে দেশের হাসপাতাল গুলোতে ছুটি নিয়ে বা না নিয়ে এমন করে কাজ বন্ধ করে দেন তা হলে জনগণের কি অবস্থা হবে ? বা বিদ্যুত শ্রমিকরা ?
স্বাভাবিক নিয়মেই তেলের দাম বৃদ্ধি নিয়ে বিএনপি মাঠে নেমে পরলো কিছু মিথ্যার ঝাঁপি নিয়ে। দলের মহাসচিব এই প্রসঙ্গে সরকারের তুমুল সমালোচনা করলেন। এটি এখন তার পেশায় পরিণত হয়েছে। আর চিরাচরিত নিয়মে এই বিষয়ে তার বক্তৃতা শেষ করেন এই বলে যে এই সরকারকে বিদায় করলে সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
তিনি ভুলে গিয়েছেন যে তাদের ২০০১-২০০৬ মেয়াদকালে তেলের দাম আটবার বৃদ্ধি করা হয়েছিল। ২০০৯ সালে শেখ হাসিনা ক্ষমতা গ্রহণ করার পর তেলের দাম তিনবার কমানো হয়েছে। মির্জা ফখরুল আরো জানালেন ভারত যখন তেলের দাম কমালো তখন বাংলাদেশে তার মূল্য বৃদ্ধি কোন অবস্থাতেই মানা যায় না। তিনি যদি একটু খোঁজ খবর নিতেন তাহলে জানতে পারতেন ভারতে ডিজেলসহ অন্যান্য তেলের মূল্য উপমহাদেশের অন্যান্য দেশের তুলনায় এখনো সব চেয়ে বেশী। আর যে সকল রাজ্যে নির্বাচন বা উপনির্বাচন হচ্ছে শুধু সেই সব রাজ্যে তেলে লিটার প্রতি মূল্য পাঁচ দশ রূপি কমিয়েছে। পশ্চিম বঙ্গে ডিজেলের দাম প্রতি লিটার বাংলাদেশী টাকায় একশত কুড়ি টাকা। তারপরও সেখানে গণপরিবহন বন্ধ হয়নি ভাড়াও বাড়েনি। ভারতে গ্যাসে চালিত কোন পরিবহন নেই। মির্জা সাহেবের জানা উচিৎ ভারত নিজেরা তেল উৎপাদন করে আর বিদেশ হতে প্রয়োজনে ৮৩ শতাংশ তেল আমদানি করে। আর প্রাকৃতিক গ্যাস ও তরলায়িত গ্যাসের মাত্র ৪৫ শতাংশ আমদানি করে।
বাকিটা নিজেদের উৎস হতে ভারত আহরণ করে। তাদের ট্রেন চলে বিদ্যুতে। গণপরিবহন বাংলাদেশের চেয়ে অনেক উন্নত। পাকিস্তানও তাদের প্রয়োজনের নব্বই শতাংশের কিছু বেশী আমদানি করে। বাকি তেল তারা আহরণ করে বেলুচিস্তানের তেল ক্ষেত্রগুলো হতে।
বাংলাদেশে ডিজেলের দাম বৃদ্ধি কারণে যে পরিবহন মালিকরা বিনা নোটিশে তাদের গাড়ি বন্ধ করে দিল এটি সোজা কথায় একধরনের সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে মাস্তানি। এই মাস্তানি শুধু যে পরিবহন ক্ষেত্রে হচ্ছে তা নয়। করছে চালের মিল মালিকরা, স্থানীয় চাঁদাবাজরা, সরকারের কিছু অসাধু কর্মকতা সহ অনেকে। প্রশ্ন উঠলো দাম বাড়লো ডিজেলের তা হলে যে বাস ট্রাক গ্যাসে চলে তা কেন বন্ধ করা হলো ? গণপরিবহন বন্ধ হওয়ার দুদিন পর লঞ্চ মালিকরা বললো ‘আমরা কেন বসে থাকবো’ ? তারাও নেমে পরলো। বন্ধ হয়ে গেলো সব লঞ্চ। জিম্মি হয়ে গেলো দক্ষিণ বঙ্গে হাজার হাজার যাত্রী। কক্সবাজারে পরিবার নিয়ে বেড়াতে গিয়েছিলেন হাজার হাজার মানুষ। সেখান হতে নিজ গন্তব্যস্থানে ফেরা বন্ধ হয়ে গেল প্রায় পঞ্চাশ হাজার মানুষের। তবে এখানে পুলিশ বেড়াতে যাওয়া পর্যটকদের নিজস্ব পরিবহনে চট্টগ্রাম শহরে পৌঁছে দিয়ে একটি ভালো নজির সৃষ্টি করেছে।
তেল গ্যাস ডিজেল বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি করলে তবে তা হতে হবে যৌক্তিক কারণে ও যৌক্তিক উপায়ে। পশ্চিম বঙ্গে তেলের দাম বাড়লেও রাজ্য সরকার গণপবিহনের ব্যবহার্য জ্বালানিতে এখনো ভর্তুকি দিচ্ছে। সব দেশেই জনগণের জন্য অপরিহার্য পণ্যে সরকার ভর্তুকি দিয়ে থাকে। বিশ্বে কৃষিতে সব চেয়ে বেশী ভর্তুকি দেয় যুক্তরাষ্ট্র। এই যে ডিজেলের দাম বাড়লো বাংলাদেশের কৃষি যা একটি সাফল্যের গল্প তার কি হবে ? কৃষকদের তো যে কোন উপায়ে বাাঁচিয়ে রাখতে হবে। তারজন্য কৃষিতে ভর্তুকি বজায় রাখতে হবে। একজন কৃষক যাতে ডিজেল বা অন্যান্য খাতে ভর্তুকি সঠিকভাবে পায় তার জন্য কৃষকদের কার্ডের মাধ্যমে এই ভতুর্কি দেয়া যেতে পারে। দেশে গণপরিবহনে যে দুটি জ্বালানি ব্যবহার করা হয় তা হচ্ছে ডিজেল ও গ্যাস। বিআরটিএ এমন ব্যবস্থা করতে হবে যেনো সকল গণপরিবহনের গায়ে বড় বড় হরফে লেখা থাকে কোনটি গ্যাসে চালিত আর কোনটি ডিজেলে। এমন একটি সিদ্ধান্ত মালিক পক্ষ আর বিআরটিএ নিয়েছে। তার সফল বাস্তবায়ন করতে হলে প্রয়োজন সঠিক নজরদারি। আরো একটি বিষয় বিআরটিকেই নজর দিতে হবে যে অনেক ব্যক্তিগত গাড়ি বা ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে ব্যবহৃত গাড়ি মাইক্রোবাস, হাফ ট্রাকেও এই দুটি জ্বালানি ব্যবহৃত হয়।
এই সব গাড়ির সামনের কাঁচে এটি লেখা থাকা উচিৎ গাড়িতে কি জ্বালানি ব্যবহার হয়। গাড়ির যে সকল দলিল থাকে যেমন ফিটনেস সার্টিফিকেট তাতেও তা উল্লেখ থাকা উচিৎ। নদীমাতৃক বাংলাদেশে জলপথে যোগাযোগকে উৎসাহিত করা প্রয়োেজন । সে কারণে যে সকল যাত্রী বা পণ্যবাহী জলযান জলপথে চলাচল করে সেই সব জলযানের ব্যবহার্য জ্বালানিতে ভর্তুকি দেয়ার কথা চিন্তা করতে হবে।
এরই মধ্যে চৌদ্দ দলের নেতৃবৃন্দ, যেখানে আওয়ামী লীগও আছে তার সভা করে বলেছে এই মুহূর্তে ডিজেলের মূল্য বাড়ানো উচিৎ হয় নি, এটি একটি অমানবিক সিদ্ধান্ত।
বিশ্ববাজারে তেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে দেশে সব সময় তেলের দাম বাড়ে না। বাড়ার আর একটি বড় কারণ বিপিসি’র চরম অদক্ষতা। অতীতে এমন ঘটনাও ঘটেছে যে জাহাজ ভর্তি অপরিশোধিত তেল চট্টগ্রামে এসে খালাসের অপেক্ষায় দিনের পর দিন সমুদ্রে দাঁড়িয়েছিল যার ফলে প্রতিদিন হাজার হাজার ডলার বিপিসি ডেমারেজ দিয়েছে আর তা জনগণ হতে আদায় করা হয়েছে এবং হয়।
গণপরিহন ধর্মঘট বলি অথবা তা বন্ধ করার কথা বলি (যা এবার মালিক আর পরিবহন নেতারা বলেছেন) তখন আমাদের প্রজন্মের কাছে চিলির ঘটনার কথা মনে পরে। আর তা যখন ঘটে প্রধানমন্ত্রী যখন দেশে থাকেন না তখন তা অনেকটা শঙ্কার কারণ হতেই পারে।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের দুর্গোৎসবকে ঘিরে দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি নষ্ট করার চেষ্টা হয়েছে। এর সাথে বর্তমানে চলছে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মূল প্রার্থী আর বিদ্রোহী প্রার্থীদের মধ্যে প্রাণঘাতি হানাহানি। সব কিছু বিশ্লেষণ করলে মনে হতে পারে দেশের প্রশাসন এই মুহূর্তে বর্তমান সরকারকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করছেন না।
ভুল হলে ক্ষমাপ্রার্থী। দেশে এখন সরকারে বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ কিন্তু প্রশাসনে আছে খুবই শক্তিশালী আমলাতন্ত্র যাদের অনেকের ভূমিকা প্রশ্নাতিত নয়। তারাই এই মুহূর্তে সকল গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেন যার অনেক গুলোই সরকারকে বেকায়দায় ফেলে। এই পরিস্থিতি হতে উত্তোরণ ঘটাতে না পারলে সামনের সময় আরো নানা রকমের ষড়যন্ত্র মূলক অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে। সকলে এখন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দিকে তাকিয়ে আছে। তিনি কখন ফিরবেন আর কখন পুরো বিষয়টা নিয়ে বিচার বিশ্লেষণ করে একটি জনবান্ধব সিদ্ধান্ত দেবেন। সময় এসেছে পুরো প্রশাসনকে সম্পূর্ণভাবে ঢেলে সাজানো এবং যোগ্য মানুষকে যথা জায়গায় দায়িত্ব দেয়া। তা না হলে এমন অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতি নিয়মিত সৃষ্টি হতে পারে। সরকার পরতে পারে বেকায়দায়।

লেখক: বিশ্লেষক ও গবেষক।